সহজ পাঠ ও রবীন্দ্রনাথের অবনির্মান - শুভজিৎ দে
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
চিত্রঋণ - Wikipedia
চিত্রঋণ - সৌম্যজিৎ দে
সঠিক শিশু শিক্ষাই শিশুর ভবিষ্যতের শিক্ষা ক্ষেত্রের পরিধি নির্মাণ করে। সুতরাং শিশু পাঠদানের পর্ব পৃথিবীর সব শিক্ষিত সমাজে একটি অপরিহার্য কর্ম বলে গণ্য হয়। এই বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়, তবে বলে রাখা উচিত অভিভাবকগণ যতটা না শিশুর ভবিষ্যতের কথা ভাবে বা তার ভিত তৈরি করার কথা ভাবে তার চেয়ে বেশী ভাবে একটি নির্দিষ্ট সময় শিশুকে দূরে রেখে নিজেদের প্রয়োজনীয় কাজ করার কথা। বর্তমান দিনে পরিবার ছোটো হতে হতে বাবা-মা ও সন্তানে এসে ঠেকেছে। ফলে আগেকার দিনে বাড়ির শিশু শিক্ষার পরিবেশ বর্তমান ফ্ল্যাট সংস্কৃতিতে অধরা। আর সময়ের সাথে সাথে যুক্ত হয়েছে শিশু শিক্ষাপাঠের অবনির্মান, যা পুরানো ঐতিহ্য কে ভেঙে টুকরো টুকরো করে চলেছে।
শিশু শিক্ষার সর্ব প্রথম প্রথমিক গ্রন্থ এ দেশে কি ভাবে রচিত ও প্রকাশিত হল তার ধারাবাহিক বিবরণ দেওয়া সহজ কাজ নয়, জেমস লং প্রণীত A Descriptive catalogue of Bengali Books and Pamphlets (1855) বইতে 1816 থেকে 1847 সাল পর্যন্ত বিভিন্ন লেখকের ও বই এর নাম, পৃষ্ঠা সংখ্যা উল্লেখ থাকলেও শিশু শিক্ষার প্রথমিক গ্রন্থের নাম পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক কাজী সফিউর রহমান তাঁর বিদ্যাসাগর থেকে বেগম রোকেয়া শিশু শিক্ষার সারথি নামক গ্রন্থে। সেখানে তিনি আরও বলেছেন শিশুপাঠ্য পুস্তক প্রণেতা হিসেবে মদনমোহন তর্কালঙ্কার হলেন বাংলার প্রথম অগ্রগন্য পুরুষ।
মদনমোহন তর্কালঙ্কার শিশুশিক্ষা (প্রথম ভাগ) সর্ব প্রথম 1849 সালে প্রথমিক শিশু পাঠ্য পুস্তক হিসেবে প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগ রচনা ও প্রকাশ করেন। এর পর 1855 সালে বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় (প্রথম ভাগ) প্রকাশিত হয়, 1877 সালে বর্ণমালা এবং ক্ষেত্রমোহন গুপ্তের শিশু সেবধি প্রকাশিত হওয়ার কথা জানা যায়। বিংশ শতাব্দীতে আরও কয়েকটি প্রাক প্রথমিক বই প্রকাশিত হয় এবং এর মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ সংযোজন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজ পাঠ (প্রথম ভাগ)।
এত কিছু থাকা স্বত্বেও আজও সহজ পাঠ প্রাসঙ্গিক, এখানে শিশুদের খাবার, প্রকৃতি, গ্রাম বাংলার মাঝে নিয়ে যাওয়ার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সহজ পাঠ। যখন আমরা সহজ পাঠ পড়ি তখন এটি আমাদের কাছে খুবই সাধারণ, কিন্তু তার গভীরে প্রবেশ করলে মনে হবে এটি কোনো উপন্যাসের থেকে কম নয়। বিদ্যাসাগর মহাশয় আমাদেরকে বর্ণের পরিচয় দিলেও, পরবর্তী কালে রবি ঠাকুর সেই বর্ণগুলিকে দিয়েছেন সুরের ছন্দ, দিয়েছেন শব্দের জাদু। সহজ পাঠ প্রথম প্রকাশিত হয় 1337 বঙ্গাব্দের (1931) বৈশাখ মাসে, মৃত্যুর ঠিক দশ (10) বছর আগে। দেখতে দেখতে সহজ পাঠ 89 -এ পা দিয়েছে, প্রথমিক ভাবে জানা যায় সহজ পাঠের দুইটি ভাগের কথা (প্রথম ও দ্বিতীয়), কিন্তু এই লক ডাউনে এই ব্লগ টি লেখার জন্য বাইরে যাওয়ার উপায় না থাকায় কয়েকজনের সাথে ফোনে কথা বলে জানি সহজ পাঠের চারটি ভাগের কথা (প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ), গুগল এ বিষয়ে তথ্য দেয় কেবল চারটি ভাগের ছবি দিয়ে, যেহেতু আমি হাতে চারটি ভাগ পাই নি, তাই দুইটি ভাগ নিয়ে আলোচনা করছি। যদিও অনেকে বলেছেন তার নিজ হাতে চারটি ভাগ দেখেছেন, তবে সকলেই প্রায় নিশ্চিত ভাবে তা বলতে পারছিলেন না, অনেকেই বলেন প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগ রবীন্দ্রনাথ লিখলেও চতুর্থটি তিনি লেখেননি, লিখেছেন কোনো এক শিক্ষক। তবে এই বক্তব্য এই মুহুত্বে অনুমেয়। সঠিক তথ্য পেলে তা বাস্তবিক অর্থে বলা যাবে।
সহজ পাঠ প্রথম ভাগ 53 পাতার। প্রথম দিকে সব পাতায় ছবি, নন্দলাল বসুর আঁকা কালো কালি দিয়ে। চিত্রশিল্পের দিক থেকে এই সব চিত্রের অনেক গুণ আছে। তবে সাধারণ মানুষের চোখে তা খুবই সাধারণ। তবে বলে রাখা দরকার সহজ পাঠের কথা অনুযায়ী যে সেই সব ছবি আঁকা হয়েছিল তা কিন্তু নয়। বর্তমান প্রযুক্তির কাছে গ্রাফিক্সে আঁকা ছবির কাছে সহজ পাঠের ছবি গুলি ম্লান হয়ে গেলেও, বর্তমান প্রযুক্তি আর একটি এমন ছবি আঁকতে পারেনি। দ্বিতীয় ভাগ 60 পাতার বই, প্রথম ভাগের মতো এতেও অনেক ছবি আছে, তবে এসব ছবির ধরন একটু ভিন্ন, ভালো ভাবে দেখলেই বোঝা যায়, প্রথম ভাগে যেখানে ছবিগুলি কালো রঙে আঁকা, সেখানে দ্বিতীয় ভাগে রেখায় আঁকা ছবি। ছবিতে এমন পরিবর্তন কেন ? তা নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। রবি ঠাকুর বলেছিলেন শিশু, বই পড়ার সাথে সাথে আঁকা গুলো রাঙিয়ে নিতে পারে, অর্থাৎ তিনি শিশু দের রঙের সাথেও পরিচয় করাতে চেয়েছিলেন।
অতি সাধারণ কথা যা বুঝতে অসুবিধা নেই, ছোটো ছোটো শিশুরা নিজেরাই বানান করে সহজ পাঠ পড়ে, অন্যদের পড়া শোনে, খাতায় লেখে, সেখানে তাদের বাক্যগঠন, যুক্তাক্ষরের সাথে পরিচয় হয়। আর তার সাথে সাথে শিশু মনে চিরকালীন ছাপ রেখে যায় সহজ পাঠের সেই ছবি গুলি, যেমন হামাগুড়ি দেওয়া সেই বাচ্ছা শিশুটির কথাই ধরা যাক। শিশু মনে সহজ পাঠ এ সব ছাড়াও জন্মদেয়, কাজের আয়জন, কাজের পরিকল্পনা ও কাজের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রথমিক ধারণাটুকু। অনেকে মনে করেন। এমনকি মনবিজ্ঞানীরাও বলে থাকেন, শৈশবের সঠিক শিক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মানবিকতার শিক্ষা যদি শৈশবে না শেখানো যায়, তবে ভবিষ্যত জীবনে তা শেখানো খুবই কষ্টকর বিষয়, পরে যে তা শিখবে তা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় থেকে যায়। রবীন্দ্রনাথ খুব সচেতন ভাবে মানবিকতার প্রথমিক পাঠ গল্পের মাধ্যমে সহজ পাঠের মধ্যে দিয়ে শিশু মনে প্রবেশ করাবার চেষ্টা করেছেন।
সহজ পাঠের পাতায় পাতায় ধরা পড়ে পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা, পশুপাখি ভালোবাসতে শেখা মানবিকতার একটি অবশ্যিক অঙ্গ। যারা পশুপাখির কষ্ট বোঝেনা, তাদের বিনা কারনে কষ্ট দেয়, তারা মানুষকে অন্তর থেকে ভালোবাসবে, এমন হতে পারে না। সহজ পাঠ এর প্রথম ও দ্বিতীয় পাঠে এই মানবিক শিক্ষার প্রসঙ্গ বারবার এসেছে, যেমন বলা যায় প্রথম ভাগের চতুর্থ পাঠে একটি কথা যেখানে বলা হয়েছে, " পাখি কি ওড়ে ? না, পাখি ওড়ে না, ওর পায়ে বেড়ি। ও আগে ছিল বনে, বনে নদী ছিল, ও নিজে গিয়ে জল খেত, দীনু এই পাখি পোষে। " রবীন্দ্রনাথ এ প্রসঙ্গে আর কিছু বলেননি, তবে তিনি শিশু মনে যে চিত্র স্থাপন করলেন তাতে এ কথা বলাই যায় যে শিশুটি সারাজীবন কখনও পাখি দের কষ্ট দেবে না।
অন্যদিকে সহজ পাঠের দ্বিতীয় ভাগের একাদশ, দ্বাদশ এবং ত্রয়োদশ পাঠে তিনটি গল্প আছে, যেখানে আছে পারস্পরিক সাহায্যের শিক্ষার কথা। বিদ্যার্জন আর শিক্ষা লাভের মধ্যে পার্থক্য আছে। বিদ্যার্জন মানে যদি হয় ভাষা, গণিত, বিজ্ঞান ইত্যাদির তথ্য ও প্রয়োগ শিখে নেওয়া, তাহলে শিক্ষা লাভ হল জীবনে চলার পথে কি ভাবে চলতে হবে তা আয়ত্ত করা। এ প্রসঙ্গে আইনস্টাইনের একটি কথা উল্লেখ করা যেতে পারে, তিনি এক জায়গায় বলেছিলেন, " ইস্কুল-কলেজে শেখা অঙ্ক, ইতিহাস, ভূগোল ইত্যাদি সমস্ত ভুলে যাওয়ার পর, যা বাকি থাকে তা হলো শিক্ষা। " আর এখানেই সহজ পাঠ কৃতিত্ব রাখে। ছেলে বেলায় পড়া সব কিছু ভুলে গেলেও, সহজ পাঠের সেই শিক্ষা ভোলা যায় না।
শিশু শিক্ষার সর্ব প্রথম প্রথমিক গ্রন্থ এ দেশে কি ভাবে রচিত ও প্রকাশিত হল তার ধারাবাহিক বিবরণ দেওয়া সহজ কাজ নয়, জেমস লং প্রণীত A Descriptive catalogue of Bengali Books and Pamphlets (1855) বইতে 1816 থেকে 1847 সাল পর্যন্ত বিভিন্ন লেখকের ও বই এর নাম, পৃষ্ঠা সংখ্যা উল্লেখ থাকলেও শিশু শিক্ষার প্রথমিক গ্রন্থের নাম পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক কাজী সফিউর রহমান তাঁর বিদ্যাসাগর থেকে বেগম রোকেয়া শিশু শিক্ষার সারথি নামক গ্রন্থে। সেখানে তিনি আরও বলেছেন শিশুপাঠ্য পুস্তক প্রণেতা হিসেবে মদনমোহন তর্কালঙ্কার হলেন বাংলার প্রথম অগ্রগন্য পুরুষ।
সহজ পাঠ প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগের প্রচ্ছদ
চিত্রঋণ - সৌম্যজিৎ দে
মদনমোহন তর্কালঙ্কার শিশুশিক্ষা (প্রথম ভাগ) সর্ব প্রথম 1849 সালে প্রথমিক শিশু পাঠ্য পুস্তক হিসেবে প্রকাশিত হয়। এর পর তিনি যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগ রচনা ও প্রকাশ করেন। এর পর 1855 সালে বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় (প্রথম ভাগ) প্রকাশিত হয়, 1877 সালে বর্ণমালা এবং ক্ষেত্রমোহন গুপ্তের শিশু সেবধি প্রকাশিত হওয়ার কথা জানা যায়। বিংশ শতাব্দীতে আরও কয়েকটি প্রাক প্রথমিক বই প্রকাশিত হয় এবং এর মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ সংযোজন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজ পাঠ (প্রথম ভাগ)।
এত কিছু থাকা স্বত্বেও আজও সহজ পাঠ প্রাসঙ্গিক, এখানে শিশুদের খাবার, প্রকৃতি, গ্রাম বাংলার মাঝে নিয়ে যাওয়ার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সহজ পাঠ। যখন আমরা সহজ পাঠ পড়ি তখন এটি আমাদের কাছে খুবই সাধারণ, কিন্তু তার গভীরে প্রবেশ করলে মনে হবে এটি কোনো উপন্যাসের থেকে কম নয়। বিদ্যাসাগর মহাশয় আমাদেরকে বর্ণের পরিচয় দিলেও, পরবর্তী কালে রবি ঠাকুর সেই বর্ণগুলিকে দিয়েছেন সুরের ছন্দ, দিয়েছেন শব্দের জাদু। সহজ পাঠ প্রথম প্রকাশিত হয় 1337 বঙ্গাব্দের (1931) বৈশাখ মাসে, মৃত্যুর ঠিক দশ (10) বছর আগে। দেখতে দেখতে সহজ পাঠ 89 -এ পা দিয়েছে, প্রথমিক ভাবে জানা যায় সহজ পাঠের দুইটি ভাগের কথা (প্রথম ও দ্বিতীয়), কিন্তু এই লক ডাউনে এই ব্লগ টি লেখার জন্য বাইরে যাওয়ার উপায় না থাকায় কয়েকজনের সাথে ফোনে কথা বলে জানি সহজ পাঠের চারটি ভাগের কথা (প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ), গুগল এ বিষয়ে তথ্য দেয় কেবল চারটি ভাগের ছবি দিয়ে, যেহেতু আমি হাতে চারটি ভাগ পাই নি, তাই দুইটি ভাগ নিয়ে আলোচনা করছি। যদিও অনেকে বলেছেন তার নিজ হাতে চারটি ভাগ দেখেছেন, তবে সকলেই প্রায় নিশ্চিত ভাবে তা বলতে পারছিলেন না, অনেকেই বলেন প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগ রবীন্দ্রনাথ লিখলেও চতুর্থটি তিনি লেখেননি, লিখেছেন কোনো এক শিক্ষক। তবে এই বক্তব্য এই মুহুত্বে অনুমেয়। সঠিক তথ্য পেলে তা বাস্তবিক অর্থে বলা যাবে।
সহজ পাঠ প্রথম ভাগ 53 পাতার। প্রথম দিকে সব পাতায় ছবি, নন্দলাল বসুর আঁকা কালো কালি দিয়ে। চিত্রশিল্পের দিক থেকে এই সব চিত্রের অনেক গুণ আছে। তবে সাধারণ মানুষের চোখে তা খুবই সাধারণ। তবে বলে রাখা দরকার সহজ পাঠের কথা অনুযায়ী যে সেই সব ছবি আঁকা হয়েছিল তা কিন্তু নয়। বর্তমান প্রযুক্তির কাছে গ্রাফিক্সে আঁকা ছবির কাছে সহজ পাঠের ছবি গুলি ম্লান হয়ে গেলেও, বর্তমান প্রযুক্তি আর একটি এমন ছবি আঁকতে পারেনি। দ্বিতীয় ভাগ 60 পাতার বই, প্রথম ভাগের মতো এতেও অনেক ছবি আছে, তবে এসব ছবির ধরন একটু ভিন্ন, ভালো ভাবে দেখলেই বোঝা যায়, প্রথম ভাগে যেখানে ছবিগুলি কালো রঙে আঁকা, সেখানে দ্বিতীয় ভাগে রেখায় আঁকা ছবি। ছবিতে এমন পরিবর্তন কেন ? তা নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। রবি ঠাকুর বলেছিলেন শিশু, বই পড়ার সাথে সাথে আঁকা গুলো রাঙিয়ে নিতে পারে, অর্থাৎ তিনি শিশু দের রঙের সাথেও পরিচয় করাতে চেয়েছিলেন।
কালো রং -এ আঁকা ছবি
শিশুরা যাতে নিজেরা রং করে তাই দ্বিতীয় ভাগের রং ছাড়া ছবি
অতি সাধারণ কথা যা বুঝতে অসুবিধা নেই, ছোটো ছোটো শিশুরা নিজেরাই বানান করে সহজ পাঠ পড়ে, অন্যদের পড়া শোনে, খাতায় লেখে, সেখানে তাদের বাক্যগঠন, যুক্তাক্ষরের সাথে পরিচয় হয়। আর তার সাথে সাথে শিশু মনে চিরকালীন ছাপ রেখে যায় সহজ পাঠের সেই ছবি গুলি, যেমন হামাগুড়ি দেওয়া সেই বাচ্ছা শিশুটির কথাই ধরা যাক। শিশু মনে সহজ পাঠ এ সব ছাড়াও জন্মদেয়, কাজের আয়জন, কাজের পরিকল্পনা ও কাজের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রথমিক ধারণাটুকু। অনেকে মনে করেন। এমনকি মনবিজ্ঞানীরাও বলে থাকেন, শৈশবের সঠিক শিক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মানবিকতার শিক্ষা যদি শৈশবে না শেখানো যায়, তবে ভবিষ্যত জীবনে তা শেখানো খুবই কষ্টকর বিষয়, পরে যে তা শিখবে তা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় থেকে যায়। রবীন্দ্রনাথ খুব সচেতন ভাবে মানবিকতার প্রথমিক পাঠ গল্পের মাধ্যমে সহজ পাঠের মধ্যে দিয়ে শিশু মনে প্রবেশ করাবার চেষ্টা করেছেন।
সহজ পাঠের পাতায় পাতায় ধরা পড়ে পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা, পশুপাখি ভালোবাসতে শেখা মানবিকতার একটি অবশ্যিক অঙ্গ। যারা পশুপাখির কষ্ট বোঝেনা, তাদের বিনা কারনে কষ্ট দেয়, তারা মানুষকে অন্তর থেকে ভালোবাসবে, এমন হতে পারে না। সহজ পাঠ এর প্রথম ও দ্বিতীয় পাঠে এই মানবিক শিক্ষার প্রসঙ্গ বারবার এসেছে, যেমন বলা যায় প্রথম ভাগের চতুর্থ পাঠে একটি কথা যেখানে বলা হয়েছে, " পাখি কি ওড়ে ? না, পাখি ওড়ে না, ওর পায়ে বেড়ি। ও আগে ছিল বনে, বনে নদী ছিল, ও নিজে গিয়ে জল খেত, দীনু এই পাখি পোষে। " রবীন্দ্রনাথ এ প্রসঙ্গে আর কিছু বলেননি, তবে তিনি শিশু মনে যে চিত্র স্থাপন করলেন তাতে এ কথা বলাই যায় যে শিশুটি সারাজীবন কখনও পাখি দের কষ্ট দেবে না।
অন্যদিকে সহজ পাঠের দ্বিতীয় ভাগের একাদশ, দ্বাদশ এবং ত্রয়োদশ পাঠে তিনটি গল্প আছে, যেখানে আছে পারস্পরিক সাহায্যের শিক্ষার কথা। বিদ্যার্জন আর শিক্ষা লাভের মধ্যে পার্থক্য আছে। বিদ্যার্জন মানে যদি হয় ভাষা, গণিত, বিজ্ঞান ইত্যাদির তথ্য ও প্রয়োগ শিখে নেওয়া, তাহলে শিক্ষা লাভ হল জীবনে চলার পথে কি ভাবে চলতে হবে তা আয়ত্ত করা। এ প্রসঙ্গে আইনস্টাইনের একটি কথা উল্লেখ করা যেতে পারে, তিনি এক জায়গায় বলেছিলেন, " ইস্কুল-কলেজে শেখা অঙ্ক, ইতিহাস, ভূগোল ইত্যাদি সমস্ত ভুলে যাওয়ার পর, যা বাকি থাকে তা হলো শিক্ষা। " আর এখানেই সহজ পাঠ কৃতিত্ব রাখে। ছেলে বেলায় পড়া সব কিছু ভুলে গেলেও, সহজ পাঠের সেই শিক্ষা ভোলা যায় না।
সহজ পাঠ প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগের প্রচ্ছদ
প্রথম ভাগের তিপান্ন ও দ্বিতীয় ভাগে ষাট, সর্বমোট একশো তেরো পাতা। তার মধ্যে অনেক পাতায় অর্ধেক অংশ জুড়ে ছবি আঁকা। বড় বড় অক্ষর, ছাড়া ছাড়া লাইন কতটাই বা আর লেখা তবু যত বার পাতা ওল্টানো যায় ততবারই নতুন কিছু চোখে পড়ে, নতুন কিছু শিক্ষা মনে ধরে। বয়েস হওয়ার সাথে সাথে অনেক নতুন বই হয়তো মনে রেখা কেটে গেছে, বই এর তাকে সহজ পাঠকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে এসেছে অনেক নতুন বই। আর সহজ পাঠ, সহজ থেকেই আমাদের শিশু মনকে শিক্ষা দিয়ে গেছে। যা বর্তমান জটিল পরিস্থিতিতে সকলের মধ্যে বাড়তে থাকা অমানবিকতাকে সহজ পাঠ সহজ করে বলে এ শিক্ষা আমি দিই নি। তার শিক্ষা কিরূপ ছিলো এবং তাতে পরিবেশ ও প্রকৃতি কি ভাবে বর্ণিত হয়েছে তা একটু তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।
সহজ পাঠের চারটি ভাগ
(প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ দুইটি রবি ঠাকুরের লেখা,
তৃতীয় ও চতুর্থ ভাগ সম্পাদিত)
প্রথম ভাগ
প্রথম পাঠে আছে- "পাতু পাল আনে চাল", "খুদিরাম পাড়ে জাম", "দীননাথ রাঁধে ভাত"।
দ্বিতীয় পাঠে আছে- থালা ভরা কৈ মাছ, বাটা মাছ। সরা ভরা চিনি ছানা। গাড়ি গাড়ি আসে শাক লাউ আলু কলা। ভারী আনে ঘড়া ঘড়া জল। মুটে আনে সরা খুরি কলাপাতা। রাতে হবে আলো। লাল বাতি। নীল বাতি। কত লোক খাবে।
তৃতীয় পাঠে আছে- মামা আনে চাল ডাল। আর কেনে শাক। আর কেনে আটা। দাদা কেনে পাকা আতা, সাত আনা দিয়ে। আর, আখ আর জাম চার আনা। বাবা খাবে। কাকা খাবে। আর খাবে মামা। তার পরে কাজ আছে। বাবা কাজে যাবে। দাদা হাটে যায় টাকা হাতে। চার টাকা। মা বলে, খাজা চাই, গজা চাই, আর ছানা চাই। আশাদাদা খাবে।
চতুর্থ পাঠে আছে- পাখির খাবারের কথা। অসুস্থ রাণীদিদি তাকে খাওয়ায়, এ যে টিয়ে পাখী। ও পাখী কি কিছু কথা বলে? কী কথা বলে? ও বলে রাম রাম হরি হরি। ও কী খায়? ও খায় দানা। রানীদিদি ওর বাটি ভ’রে আনে দানা। রয়েছে- পাড়ার কথা।
ছায়ার ঘোমটা মুখে টানি
আছে আমাদের পাড়াখানি।
দিঘি তার মাঝখানটিতে,
তালবন তারি চারি ভিতে।
বাঁকা এক সরু গলি বেয়ে
জল নিতে আসে যত মেয়ে।
বাঁশগাছ ঝুঁকে ঝুঁকে পড়ে,
ঝুরু ঝুরু পাতাগুলি নড়ে।
পথের ধারেতে একখানে,
হরি মুদি বসেছে দোকানে।
চাল ডাল বেচে তেল নুন,
খয়ের সুপারি বেচে চুন,
ঢেঁ কি পেতে ধান ভানে বুড়ি,
খোলা পেতে ভাজে খই মুড়ি।
বিধু গয়লানী মায়ে পোয়
সকালবেলায় গোরু দোয়।
আঙিনায় কানাই বলাই
রাশি করে সরিষা কলাই।
বড়োবউ মেজোবউ মিলে
ঘুঁটে দেয় ঘরের পাঁচিলে।
পঞ্চম পাঠে আছে- আজ বুধবার, ছুটি। নুটু তাই খুব খুসি। সেও যাবে কুলবনে। কিছু মুড়ি নেব আর নুন। চড়ি-ভাতি হবে। ঝুড়ি নিতে হবে। তাতে কুল ভ’রে নিয়ে বাড়ি যাব।
তার ঠিক পরের কবিতাতেই যত্ন করে বর্ণনা দেওয়া রয়েছে- নদীর কথা, গ্রামের কথা।
আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে।
পার হয়ে যায় গোরু, পার হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।
চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা,
একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা।
কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক,
রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক।
আর-পারে আমবন তালবন চলে,
গাঁয়ের বামুন পাড়া তারি ছায়াতলে।
তীরে তীরে ছেলে মেয়ে নাইবার কালে
গামছায় জল ভরি গায়ে তারা ঢালে।
সকালে বিকালে কভু নাওয়া হলে পরে
আঁচল ছাঁকিয়া তারা ছোটো মাছ ধরে।
বালি দিয়ে মাজে থালা, ঘটিগুলি মাজে,
বধূরা কাপড় কেচে যায় গৃহকাজে।
আষাঢ়ে বাদল নামে, নদী ভর- ভর-
মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর।
মহাবেগে কলকল কোলাহল ওঠে,
ঘোলা জলে পাকগুলি ঘুরে ঘুরে ছোটে।
দুই কূলে বনে বনে প'ড়ে যায় সাড়া,
বরষার উৎসবে জেগে ওঠে পাড়া।
ষষ্ঠ পাঠে আছে- খেলার কথা, গ্রাম বাংলার ছেলেদের কথা। যেখানে বলা হয়েছে একা খেলা যায় না, আরও যদি কয়েকজন ছেলে এলে বেশ হয়। এখানে শচী সেন, মণি সেন, বশী সেন, মধু শেঠ, খেতু শেঠের কথা উল্লেখ আছে, যারা ফুটবল খেলবে। তবে ফুটবল নেই । উপায় হিসেবে তারা গাছ থেকে বেল পেড়ে তা দিয়ে ফুটবল খেলে, তেলিপাড়া মাঠে, তবে তারা খুবই বাধ্য ছেলে, অল্প খেলা করে, বাড়ি গিয়ে খেয়ে পড়তে বসবে, কারণ তাদের লেখা বাকি আছে।
সপ্তম পাঠে দেখা যায়- শৈলর পৈতের আয়োজন। খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও চলছে - "ওরে কৈলাস দৈ চাই। ভালো ভৈষা দৈ আর কৈ মাছ। শৈল আজ খৈ দিয়ে দৈ মেখে খাবে।" নবম পাঠে আছে আবার মুখশুদ্ধির কথা- "গৌর, হাতে ঐ কৌটো কেন? ঐ কৌটো ভ’রে মৌরি রাখি। মৌরি খেলে ভালো থাকি। " শেষ হয়েছে আবার খাওয়া দিয়েই- "চলো, এবার খেতে চলো। সৌরিদিদি ভাত নিয়ে ব’সে আছে।"
চিত্রঋণ সৌম্যজিৎ দে
দ্বিতীয় ভাগ
যেন পড়তে পড়তে খাওয়া। প্রথম ভাগকে উপাদেয় খাদ্যের বিবরণ দেওয়ার দিক দিয়ে যেন একদম হারিয়ে দিয়েছে সহজ পাঠের দ্বিতীয় ভাগ। একেবারে রাজকীয় খাওয়া থেকে মাটির দাওয়ায় খাওয়া- সব আছে চমৎকারভাবে!
ইতিহাস হয়ে যাওয়া কুমোরপাড়ার গরুর গাড়ি কবিতা
কুমোর-পাড়ার গোরুর গাড়ি
বোঝাই-করা কল্সি হাঁড়ি।
গাড়ি চালায় বংশীবদন,
সঙ্গে-যে যায় ভাগ্নে মদন।
হাট বসেচে শুক্রবারে
বক্সীগঞ্জে পদ্মাপারে।
জিনিষপত্র জুটিয়ে এনে
গ্রামের মানুষ বেচে কেনে।
উচ্ছে বেগুন পটল মূলো,
বেতের বোনা ধামা কুলো,
সর্ষে ছোলা ময়দা আটা,
শীতের র্যাপার নক্শাকাটা।
ঝাঁঝ্রি কড়া বেড়ি হাতা,
শহর থেকে সস্তা ছাতা।
কল্সি-ভরা এখো গুড়ে
মাছি যত বেড়ায় উড়ে।
খড়ের আঁটি নৌকো বেয়ে
আনল ঘাটে চাষীর মেয়ে।
অন্ধ কানাই পথের ‘ পরে
গান শুনিয়ে ভিক্ষে করে।
পাড়ার ছেলে স্নানের ঘাটে
জল ছিটিয়ে সাঁতার কাটে।
তৃতীয় পাঠ আছে - পঙ্গপালগুলো বেদম ছোঁচা- কপির পাতা খেয়ে একদম সাফ করে দিয়েছে! ঐখানে মা পুকুরপাড়ে কবিতায় দেখি খই খাওয়ার বেলা হরিণ আর ধান খাওয়ার বেলায় কাঠবিড়ালির একেবারেই অরুচি নেই, আবার ঐ কবিতার এও বলা হয়েছে-
আঁচলেতে খই নিয়ে তুই
যেই দাঁড়াবি দ্বারে
অমনি যত বনের হরিণ
আসবে সারে সারে।
ষষ্ঠ পাঠে আছে- পথে যদি জল নামে মিশ্রদের বাড়ি আশ্রয় নেব। সঙ্গে খাবার আছে তো? সন্দেশ আছে, পান্তোয়া আছে, বোঁদে আছে। আমাদের কান্ত চাকর শীঘ্র কিছু খেয়ে নিক্। তার খাবার আগ্রহ দেখি নে। সে ভোরের বেলায় পান্তা ভাত খেয়ে বেরিয়েছে। তার বোন ক্ষান্তমণি তাকে খাইয়ে দিলে।
সপ্তম পাঠে আছে- দেখি বেশ আহ্লাদ করে রাঁধার তোড়জোড়, শ্রীশকে বোলো, তার শরীর যদি সুস্থ থাকে সে যেন বসন্তর দোকানে যায়। সেখান থেকে খাস্তা কচুরি আনা চাই। আর কিছু পেস্তা বাদাম কিনে আনতে হবে। দোকানের রাস্তা সে জানে তো? বাজারে একটা আস্ত কাতলা মাছ যদি পায়, নিয়ে আসে যেন। আর বস্তা থেকে গুন্তি ক’রে ত্রিশটা আলু আনা চাই। এবার আলু খুব সস্তা। একান্ত যদি না পাওয়া যায়, কিছু ওল অনিয়ে নিয়ো। রাস্তায় রেঁধে খেতে হবে, তার ব্যবস্থা করা দরকার। মনে রেখো— কড়া চাই, খুন্তি চাই জলের পাত্র একটা নিয়ো।
নবম পাঠে আছে- চির পরিচিত বাচ্চাভোলানো কৌশল আছে- "সঞ্জীবকে ব’লে দেব, তোমার জন্যে মিষ্টি লজঞ্চুস এনে দেবে।"
দশম পাঠ-এর মতো বাঙালিয়ানা খুব কম জায়গায় আছে - "বাঞ্ছাকে ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে দাও। বাঞ্ছা শীঘ্র আমার জন্যে চা আনুক আর কিঞ্চিৎ বিস্কুট।"
কিন্তু আমরা কি রবীন্দ্রনাথের সেই সহজ পাঠের শিক্ষার মান রেখেছি ! এখানেই মনে পড়ে অপূর্ব দত্তের লেখা একটি কবিতার কথা। বাংলা টাংলা কবিতার একটি লাইন যেখানে কবি শিশুর মায়ের মুখে কথা বসিয়েছেন তাও ছোট্ট শিশুর সামনেই সেই মা, শিশুটির বাংলা বিষয়ের প্রতি অনীহা কে তুলে শিশুটির বাবাকে বলছে " ... চুপ করো তো, ওর ফল্টটা কিসে, স্কুলে কেন বেংগলিটা পড়ায়না ইংলিশে ? " আর এই ইংলিশে "বেংগলি সহজ পাঠ" পড়াবার চক্কোরে আমরা করছি না তো রবীন্দ্রনাথের অবনির্মান ? এই উদ্বেগের কারণ বিগত কয়েক বছর বই মেলা বা কলেজ স্ট্রিটে খুঁজলেই পাওয়া যাবে সহজ পাঠের বেংলিশ সংস্করণ। বাংলা উচ্চারণ ইংরেজী শব্দে (Bengali Phonetic Language) যেমনটা আমি আপনি ফোনে SMS এ কথাবার্তা বলার জন্য ব্যবহার করে থাকি। আর এখানেই প্রশ্ন, সেই শিশু কি প্রকৃত সহজ পাঠ শিখছে ? পরিচিত হচ্ছে গ্রাম বাংলার প্রকৃত রসের সাথে ? সেটা আপনিই বিচার করুন।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
চিত্রঋণ - Wikipedia
কিন্তু আমরা কি রবীন্দ্রনাথের সেই সহজ পাঠের শিক্ষার মান রেখেছি ! এখানেই মনে পড়ে অপূর্ব দত্তের লেখা একটি কবিতার কথা। বাংলা টাংলা কবিতার একটি লাইন যেখানে কবি শিশুর মায়ের মুখে কথা বসিয়েছেন তাও ছোট্ট শিশুর সামনেই সেই মা, শিশুটির বাংলা বিষয়ের প্রতি অনীহা কে তুলে শিশুটির বাবাকে বলছে " ... চুপ করো তো, ওর ফল্টটা কিসে, স্কুলে কেন বেংগলিটা পড়ায়না ইংলিশে ? " আর এই ইংলিশে "বেংগলি সহজ পাঠ" পড়াবার চক্কোরে আমরা করছি না তো রবীন্দ্রনাথের অবনির্মান ? এই উদ্বেগের কারণ বিগত কয়েক বছর বই মেলা বা কলেজ স্ট্রিটে খুঁজলেই পাওয়া যাবে সহজ পাঠের বেংলিশ সংস্করণ। বাংলা উচ্চারণ ইংরেজী শব্দে (Bengali Phonetic Language) যেমনটা আমি আপনি ফোনে SMS এ কথাবার্তা বলার জন্য ব্যবহার করে থাকি। আর এখানেই প্রশ্ন, সেই শিশু কি প্রকৃত সহজ পাঠ শিখছে ? পরিচিত হচ্ছে গ্রাম বাংলার প্রকৃত রসের সাথে ? সেটা আপনিই বিচার করুন।
সহজ পাঠের ইংরেজী সংস্করণ
তথ্যসূত্র
সহজ পাঠ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বিদ্যাসাগর থেকে বেগম রোকেয়া শিশু শিক্ষার সারথি - কাজী সুফিউর রহমান
সহজ পাঠ - অচিন্ত্য দাস
Wikipedia
খুব সুন্দর হয়েছে। আরো বড়ো বিষয় হল না জানা কিছু তথ্য এটা পড়ে সবাই জানতে পারবে।
ReplyDeleteধন্যবাদ। সময় নিয়ে পড়ার জন্য।
Deleteসত্যি খুব সুন্দর একটি বিষয় জানতে পারলাম।।।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ReplyDeleteধন্যবাদ। সময় নিয়ে পড়ার জন্য। লক ডাউনের জন্য অনেক কিছু লেখার ইচ্ছে থাকলেও লেখা হয়ে ওঠে নি।
Deleteখুব সুন্দর হয়েছে লেখাটা 👏
ReplyDeleteধন্যবাদ সময় নিয়ে লেখাটি পড়ার জন্য। অন্য লেখাগুলিও পড়ে জানাবেন।
DeleteNice
ReplyDeleteধন্যবাদ আপনাকে
Deleteধন্যবাদ আপনাকে
ReplyDeleteঅসাধারণ একটি লেখা। আপনার জন্য নতুন অনেক কিছু শিখলাম আজকে ।
ReplyDeleteধন্যবাদ আপনাকে
ধন্যবাদ সময় নিয়ে ব্লগটি পড়ার জন্য, অন্যান্য লেখা গুলিও দেখবেন।
Delete😍
ReplyDeleteভালো লিখেছিস ভাই... এগিয়ে যা শুভেচ্ছা রইল অনেক
ReplyDeleteThanks a lot
ReplyDeleteঅনেক দরকারি একটি লেখা। অনেক উপকৃত হলাম। ধন্যবাদ।
ReplyDeleteধন্যবাদ আপনাকে
DeleteDada.. এটা কি আমি “সহজ পাঠ গ্রন্থের সাহিত্য মূল্য”হিসাবে ও লিখতে পারি.....???
ReplyDeleteনা, ঠিক সাহিত্যগত মূল্য বলতে যে লেখা বোঝায় তা এখানে বোঝাতে চাইনি। স্মৃতিকে ধরে রাখার বদলে তাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছি তার প্রতিফলন এটি।
Deleteপ্রকৃতির চিত্র কি এর থেকে লিখতে পারব দাদা??
ReplyDeleteআমি যেভাবে দেখিয়েছি, তা যদি আপনার পর্যাপ্ত মনে হয় তবে অবশ্যই লিখতে পারেন, ধন্যবাদ
Deleteখুবই সুন্দর বিষয়নিষ্ঠ উপস্থাপনা। আরো লিখুন, শুভকামনা রইলো।
ReplyDeleteলক ডাউনের সময় আপনার চিন্তাভাবনায় যে কোন লকডাউন ছিল না তার প্রমান পেলাম। খুব ভাল লাগলো। আপনার সৃষ্টিশীলতাকে সম্মান করি। শারদ শুভেচ্ছা
ReplyDelete