Posts

Showing posts with the label প্রসঙ্গ ইতিহাস

ভারতীয় চিত্রকলায় মুঘল প্রভাব - শুভজিৎ দে

Image
আজ একটু অন্য রকম ভাবে ব্লগটা লেখা, না শুধু লেখা বললেই হবে না, অবশ্যই বলতে হবে দেখা, অর্থাৎ দেখতেও হবে, তাই আঠেরো শতকের  কিছু চিত্র দেখেনি, এমনই কিছু চিত্র পরবর্তীকালের ভারতীয় চিত্রশিল্পকে সমৃদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করেছিল। মুঘল সম্রাটদের সূক্ষ্ম রুচি ও শিল্পবোধের নিদর্শন কেবলমাত্র স্থাপত্যশিল্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তাঁরা চিত্রকলার ও অনুরাগী ছিলেন, এবং তার পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। বিখ্যাত চিত্র সমালোচক ড. অশোক কুমার দাস মন্তব্য করেছেন - " The Mughal school of painting represents one of the most significant phases of Indian art. " মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের দীর্ঘকাল পরেও এর প্রভাব উত্তর ভারত, দাক্ষিণাত্য, রাজস্থান ও পঞ্জাবের পার্বত্য অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী একটা ছাপ রেখেছিল। প্রায় প্রত্যেক মুঘুল সম্রাটই চিত্রশিল্পে আগ্রহী ছিলেন এবং তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল উদার ও ধর্মনিরপক্ষ। এর ফলে ভারতীয় চিত্রকলায় একটি নতুন রূপ পরিগ্রহন করেছিল। রাজপ্রাসাদই ছিল শিল্পচর্চার মূল কেন্দ্র। মুঘল সম্রাটরা যদি চিত্রাঙ্কনে উৎসাহ না দিতেন, তাহলে ভারতীয় চিত্রকলা অবশ্যই অনেকটা দরিদ্র থেকে যেত। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, সম

মৃত্যু কে জয় করে ফিরে আসার আখ্যান : ফিনিক্স পাখি - শুভজিৎ দে

Image
অজানা কে জানার, অচেনা কে চেনার সুপ্ত বাসনা আমাদের সকলেরই আছে, আর এখানেই অনেকের প্রশ্ন যদি মৃত্যুর পর কি হয় দেখা যেত! না এমন কোনো উপায় এখনও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আবিষ্কার করতে পারেনি। তবে কথায় আছে না বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, আর তর্কে বহুদূর। ঠিক তেমনই, বিজ্ঞান এমন কোনো উপায় বাতলাতে না পাড়লেও, পুরণ তা পেরেছে। শুধু এ দেশে নয়, পৃথিবীর বহু দেশে বহু সভ্যতায় এর বর্ণনা আছে নানা ভাবে, যে মৃত্যু কে জয় করে আবার ফিরে আসে, আর মৃত্যুকে জয় করে ফিরে আসা প্রাণীটি হচ্ছে ফিনিক্স পাখি। অনেকেই ফিনিক্স পাখির নাম পর্যন্ত শোনেননি বা ফিনিক্স পাখির সম্পর্কে জানেন না। তাদের জন্য ছোট করে ফিনিক্স পাখির ধারণা দিতে চাই। আমরা পৌরাণিক কাহিনী থেকে ফিনিক্স পাখি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবো। ফিনিক্স পাখি সম্পর্কে বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনীতে, বিভিন্ন জনশ্রুতির কথা বলা হয়েছে। বর্তমান প্রজন্ম হয়তো ফিনিক্স পাখিকে বুঝবে না, তবে এই প্রজন্মের প্রেমের সম্পর্কের সাথে এই পাখির দারুণ মিল, সেই মিল বোঝাতে কবিতার দুটি লাইন উদাহরণ স্বরূপ বলাই যায় - " প্রেম যে ফিনিক্স পাখি,  আগুন নিয়ে বেড়ায় বুকে, জমরাজ আসার আগেই, আগুন জ

মুকুটটা তো পড়েই আছে রাজাই শুধু নেই - শুভজিৎ দে

Image
" স্বপ্নের মতো ছিল দিনগুলো কফি হাউজের, আজ আর নেই, জীবনে চলার পথে হারিয়ে গিয়েছে অনেকেই, আজ আর নেই, " তবে তার সুরের জাদুতে মেতে ছিল আট থেকে আশি সকলে, যার গান আজও এই প্রজন্মকে ভাবায়, হাসায় আবার কখনও কখনও কাঁদায়ও। হিন্দি, বাংলা, মারাঠি, গুজরাটি সহ অজস্র ভাষায় তিনি ছ'দশক ধরে গান গেয়েছেন। ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গীত জগৎ-এ অন্যতম একজন শিল্পী, আজ থেকে 101 বছর আগে আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক শ্রী প্রবোধচন্দ্র দে। হ্যাঁ, এই নামটির সাথে অনেকেই আমরা পরিচিত নই, তিনি আমাদের কাছে চিরপরিচিত মান্না দে নামে। আজ মে দিবসের পাশাপাশি মান্না দে'র 101তম জন্মবার্ষিকী। প্রবোধচন্দ্র দে চিত্রঋণ - Wikipedia (কাকা) কৃষ্ণচন্দ্র দে'র অনুপ্রেরণায় প্রবোধচন্দ্রের সঙ্গীত জগৎ এ প্রবেশ ঘটে, 1942 সালে তিনি বর্তমান মুম্বাই এ যান। সেখানে প্রথমে কাকা (কৃষ্ণচন্দ্র দে) ও পরে শচীনদেব বর্মনের সহকারী হিসাবে কাজ করেন, এই একই সময় তিনি শিক্ষাগুরু হিসেবে সান্নিধ্য পান ওস্তাদ আমান আলী খান ও ওস্তাদ আব্দুল রহমান খানের, যাঁদের থেকে তিনি হিন্দুস্ত

এঁদোগলির গার্সটিন বিল্ডিং থেকে আজকের আকাশবাণী - শুভজিৎ দে

Image
Major General John Garstin (1756–1820) Bengal Engineers চিত্রঋণ - British Library. আগে বাড়িটির নাম ছিল গার্সটিন বিল্ডিংস। হেয়ার স্ট্রিটের কাছে এক এঁদোগলির মধ্যে অবস্থিত। কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটে সেন্ট জনস চার্চের অপরদিকে অবস্থিত বাড়িগুলোর যে নাম, এর নাম ও তাই। পুরনো নথিপত্র থেকে জানা যায় যে, এখানে 1700 থেকে 1763 সাল পর্যন্ত কোম্পানির একটি হাসপাতাল ছিল। সেটাই ওদের প্রথম হাসপাতাল, আলেকজান্ডার হ্যামিলটন বলেছিলেন, " এই হাসপাতালে অনেক রোগী চিকিৎসার ঠেলা সামলাতে যেত, কিন্তু সেটা কীরকম  সে অভিজ্ঞতা বলার মতো লোকজন প্রায় দেখাই যেত না।" তখন ঐ এঁদো গলিটা দিয়ে স্থানীয় মানুষজন চলা ফেরা করত, এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় তাকে আর এঁদো গলি বলা চলে না। সেই সময় ঐ অঞ্চলের সব বাড়িকেই বলা হত গার্সটিন বিল্ডিংস। অল ইন্ডিয়া রেডিওর পুরনো অফিস ওয়ারেন হেস্টিংসের খুব কাছের বন্ধু ছিলেন মেজর জেনারেল গার্সটিন, তিনি এক সময় বাংলার সার্ভেয়ার জেনারেল পদে উন্নীত হয়েছিলেন, তিনি ছিলেন বাংলার ষষ্ঠ সার্ভেয়ার জেনারেল (1808-1813) কলকাতার টাউন হল আর পাটনার বাঁকপুরের গোলার নকশা তাঁর করা, 1792 সালে ওল্ড কোর্ট

রমাবাঈ থেকে পণ্ডিতা রমাবাঈ সরস্বতী হয়ে ওঠার কাহিনি : 162 তম জন্মবার্ষিকীতে রমাবাঈ - শুভজিৎ দে

Image
নারী শিক্ষা, নারী মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়নের বিরুদ্ধেও তাঁর প্রতিবাদী কণ্ঠ ছিল সব সময় সোচ্চার। পুরুষতান্ত্রিক ও কুসংকারাচ্ছন্ন এই সমাজ মেধা, মনন, পরিশ্রম ও সাহসিকতা দিয়ে যুগে যুগে যেসব নারীরা আজকের সামাজিক অবস্থান তৈরি করেছেন, নারীর তথা সমাজের যাত্রা করেছিলেন গতিশীল, পন্ডিতা রমাবাঈ তাদের মধ্যে একজন। আজ তাঁর 162 তম জন্মবার্ষিকী। চিত্রঋণ - Wikipedia ভারতের মহারাষ্ট্র নামক রাজ্যের গুণমলের অরণ্যে পন্ডিতা রমাবাঈ জন্মগ্রহণ করেন। রামাবাঈয়ের পিতা অতন্ত শাস্ত্রী একজন শিক্ষিত ব্রাহ্মণ ছিলেন। তিনি ছিলেন মুক্ত বুদ্ধির একজন সমাজ সংস্কারক। তখন নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ ছিল রমাবাঈ-এর পিতা অনন্ত শাস্ত্রী তার বালিকা বধূকে শিক্ষা দানের উদ্যোগ নেয়ার তৎকালীন ব্রাহ্মণ সমাজের রোষানলে নিপতিত হন। এই সময় অনন্ত শাস্ত্রী গ্রাম ছেড়ে বনাঞ্চলে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এই নির্বাসিত জীবনে গুণমলের অরণ্যে জন্মগ্রহণ করেন পন্ডিতা রমাবাঈ, 23শে এপ্রিল, 1858  সালে জন্মগ্রহণ করেন। 1877 সালের দুর্ভিক্ষে রামাবাঈয়ের পিতা ও মাতা অনন্ত শাস্ত্রী ও লক্ষী বাঈ উভয়েই মারা যান। পিতা-মাতার মৃত্যুর পর রামাবাঈ ও তার ভাইকে নিয়ে পিতার পথ ধ

জহিরউদ্দিন বাবর ও প্রথম পানিপথের যুদ্ধের 494 বছর - শুভজিৎ দে

Image
" ও এক দুর্ভাগ্যবান, যে পেয়েও থাকতে চায়নি এ দেশের মাটিতে সমাধিস্ত, আর আমি এক দুর্ভাগ্যবান, যে চেয়েও পাচ্ছি না দু'গজ জমি থাকার মত " শুরু করলাম এক দুর্ভাগ্যবানের একটি কথা দিয়ে, এ কথা তিনি জীবনের শেষ সময়, নির্বাসনে থাকাকালীন জেলের দেওয়ালে লিখে গেছেন, তিনি আর কেউ নন, আজ থেকে বহু বছর আগে ভারত ইতিহাসে যিনি নতুন যুগের সূচনা করেন, সেই মির্জা জহিরউদ্দিন মহম্মদ বাবর এর উত্তর পুরুষ, শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর, যার শাসন শেষ হবার মাধ্যমে 331 বছরের ঐতিহ্য অস্তমিত হয়। হটাৎ কেন আজ মুঘল দের কথা বলছি, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, আদতে আজ থেকে 494 বছর আগে এই ভারতের মাটিতে মুঘল সাম্রাজ্যের ইমারত নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল পানিপথের প্রথম যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে, আজ ফিরে দেখা সেই যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস। চিত্রঋণ - Wikipedia ঐতিহাসিক এই পানিপথে তিনবার যুদ্ধ হয়। প্রথম যুদ্ধ হয়েছিল 1526 সালে, দ্বিতীয়টি 1556 ও তৃতীয়টি 1761 সালে। পানিপথের প্রথম যুদ্ধে  জাহিরউদ্দিন বাবর দিল্লির আফগান সুলতান ইব্রাহিম লোদীকে পরাস্ত করে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। অবসান ঘটান ভারতে লোদী বংশের শাসনকালের, দিনটি

মহাশূন্যে প্রথম পা রাখার 45 বছর - শুভজিৎ দে

Image
বিজ্ঞানের প্রধান স্তম্ভ যে দুটি তা হচ্ছে দশমিক ও শূন্য। আর তার আবিষ্কর্তা হচ্ছেন এক ভারতীয় বিজ্ঞানী নাম তার আর্যভট্ট। যদিও তার এই আবিষ্কার নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, তা নিয়ে মতের ভিন্নতা থাকলেও আমরা আর্যভট্টকেই তার আবিষ্কর্তা মনে করে থাকি। E= mc2 বা নিউটনের যে সূত্রে বিজ্ঞান আজ আবর্তিত হয়ে চলেছে তা অনেকটাই অধরা থেকে যেত যদি শূন্য ও দশমিক আবিষ্কার না হত। সেই আর্যভট্টের নামেই তাই ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ নামাঙ্কিত হয় তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ।  চিত্রঋণ - Wikipedia ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত ‘নাইকে-অ্যাপাচে’ নামে দ্বিস্তরীয় এক রকেট (প্রথম রকেট) কেরলের ছোট্ট জেলেদের গ্রাম থুম্বা থেকে সাফল্যের সঙ্গে উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশে প্রথম স্বাক্ষর রেখেছিল।তিরুবনন্তপুরমের প্রান্তসীমায় অবস্থিত থুম্বা অক্ষীয় রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে সেই সময় কোন বাড়ি ছিল না। সেখানকার বিশপের বাড়ি থেকে অধিকর্তার অফিস হিসেবে কাজ চালানো হত। প্রাচীন সেন্ট মেরি ম্যাকডালিন গির্জা ভবনটিকে কন্ট্রোল রুম হিসেবে ব্যবহার করা হত এবং 1963-র 21 নভেম্বর খালি চোখে রকেটের ধোঁয়ার লাইনে নজর রাখা হয়েছিল। গরুর গাড়ি এবং

211 তম জন্মবার্ষিকীতে ডিরোজিও, তবু আজও সে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের আদর্শ - শুভজিৎ দে

Image
হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও আজ থেকে 211 বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন 18ই এপ্রিল, 1809 সালে। তাঁর অল্পবিস্তারিত এ জীবনে তিনি যা করেছিলেন তা আজও আদর্শ হয়ে আছে। পঞ্চদশ শতকের দিকে শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান ও দর্শনের মৌলিক কিছু বিষয় নিয়ে পাশ্চাত্যে নবজাগরণের সৃষ্টি হয়। পাশ্চাত্যের নবজাগরণের ডাক এসেছিল ইতালিতে। এরই ফলশ্রুতি মানুষ সন্ধান করতে চেয়েছিল নতুন জীবনের, উন্মোচিত করতে চেয়েছিল অন্ধকার দূরীকরণের আলোক দ্যুতি। আর এই উন্মেচিত আলোক দ্যুতিই ইউরোপে জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নবজাগরণের সৃষ্টি করে। চিত্রঋণ - Wikipedia ইউরোপে সৃষ্ট নবজাগরণ বাংলায় আসে এক ইউরোপিয়ানেরই হাত ধরে। তার রক্তে ইউরোপ থাকলেও তিনি নিজেকে দাবি করতেন একজন খাঁটি বাঙালি হিসেবে। বাঙলার জন্য অবাধ-নিরপেক্ষ আমরণ সংগ্রাম তিনি চালিয়েছেন। তিনি আর কেউ নন বাংলার নবজাগরনের পুরোধা পুরুষ, ইয়ংবেঙ্গলের প্রাণপুরুষ হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও। বিদেশি শাসকদের শোষণে-নিপীড়িত বাঙালির চিন্তা-চেতনা না পেরেছে স্বাধীনতা অর্জন করতে, না পেরেছে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করতে। আর এই সব সংকট কালীন মুহূর্ত থেকে বাঁচাবার মতো মহান সাধক বাঙালির ভাগ্য

সরস্বতী রাজমণি থেকে স্পাই মণি হয়ে ওঠা - শুভজিৎ দে

Image
স্বাধীনতা আজ দেখতে দেখতে সিনিয়ার সিটিজেন হতে চলল। দেশবাসীর মন থেকে হয়তো মুছে গেছে তার স্মৃতি।  হয়ত অনেকেই নাম শোনেননি, কিন্তু নেতাজি ঘনিষ্ঠ এই ‘স্পাই’ ছিলেন এক কন্যে,  এককথায় ব্রিটিশদের আতঙ্ক ছিলেন তিনি। ভিয়েতনামে এক বিপ্লবী পরিবারের ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ সরস্বতী রাজামনি, ভিয়েতনাম মুক্তি যুদ্ধের একটি শ্লোগান, তোমার নাম আমার নাম, ভিয়েতনাম ভিয়েতনাম। তার কিছুটা রেশ এই মেয়ের মধ্যে পড়েছিল, মাত্র ১০ বছরের এই মেয়ের হাতে বন্দুক দেখে চমকে গিয়েছিলেন স্বয়ং মহাত্মা গাঁধী। জানতে চেয়েছিলেন, কী হবে বন্দুক দিয়ে? উত্তরে ছিল আরও চমকপ্রদ, যা সুচারুভাবে স্থির করেছিল এই মেয়ের ভবিতব্য, সেই খুদে মেয়ে উত্তর দিয়েছিল, সে বড় হয়ে বন্দুক দিয়ে ব্রিটিশদের মারবে! তাঁকে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। মাত্র ষোলো বছর বয়সেই কিশোরী দেশসেবায় উৎসর্গ করেছিলেন নিজেকে। তাঁর হাতে ব্রিটিশ সাহেবের প্রাণ যায়নি ঠিকই। কিন্তু দেশকে স্বাধীন করার পিছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল কিশোরী গুপ্তচর সরস্বতী রাজামণির। সরস্বতী রাজমণি চিত্রঋণ -Wikipedia সে কালের বর্মা, আজকের মায়ানমারে তাঁর জন্ম ১৯২৭ সালে। জন্মগত নাম ছিল রাজামণি।

আজকের দিনেই 108 বছর আগে এক সমুদ্রদানবের সলিলসমাধির আখ্যান - শুভজিৎ দে

Image
" Every night in my dreams, I see you, I feel you ..." এই গানটি শোনেন নি, বা মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও সেই বেহালা বাদকদের কার্যে অবিচল থাকার দৃশ্য মনে পড়ে না এমন মানুষ নেই। ইংরেজি(হলিউড) সিনেমা দেখতে শুরু করেছেন, আর টাইটেনিক দেখেন নি এমন মানুষ বোধহয় খুবই কম, অনেকই হলিউডের সাথে পরিচিত হন এই সিনেমা দিয়ে। তবে এটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত একটি সিনেমা। আজ থেকে ঠিক 108 বছর আগে অর্থাৎ 14ই এপ্রিল রাত 11টা বেজে 40মিনিটে (23 : 40 p.m)  এই সমুদ্রদানব হিমশৈলের সাথে ধাক্কা খেয়ে চিরতরে হারিয়ে যায়। সম্পূর্ণ জাহাজটি ডুবে যায় পরের দিন অর্থাৎ 15ই এপ্রিল রাত 02টো বেজে 20 মিনিটে (02 : 20 a.m.) আজ জেনে নেওয়া যাক সেই সমুদ্রদানবের কিছু কথা। চিত্রঋণ - Wikipedia আরএমএস টাইটানিক একটি ব্রিটিশ যাত্রীবাহী বৃহদাকার সামুদ্রিক জাহাজ ছিল যা 15 এপ্রিল, 1912 সালে জাহাজটির প্রথম সমুদ্রযাত্রায় সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্ক সিটি যাওয়ার পথে হিমশৈলের (আইসবার্গের) সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তর অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যায়। এটি ঐ সময়ের সবচেয়ে বৃহৎ আধুনিক ও বিলাসবহুল যাত্রীবাহী জাহাজ ছিল।  গ্রিক পুরানের শক্

সংবিধানের স্থপতি ড. আম্বেদকার - শুভজিৎ দে

Image
ভীমরাও রামজি আম্বেদকার ছিলেন একজন ভারতীয় আইনবীদ, রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছাড়াও তাঁর আরও অনেক পরিচয় আছে। তিনি বাবাসাহেব নামেও পরিচিত ছিলেন সকলের কাছে। ভারতের সংবিধানের খসড়া কার্যনির্বাহক সমিতির সভাপতিত্ব করেছিলেন, এছড়াও তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদী এবং ভারতের দলিত আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। বাবাসাহেব আম্বেদকার ভারতের সংবিধানের মুখ্য স্থাপক ছিলেন, তিনি জন্মগ্রহণ করেন 14ই এপ্রিল 1891 সালে, আজ তার 129 তম জন্মবার্ষিকী। 1947 সালের 15 জুলাই বৃটিশ পার্লামেন্ট কর্তৃক ‘স্বাধীন ভারত’ হিসেবে আইন পাশ করা হলে গণপরিষদ সার্বভৌম ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। দেশ বিভাজনের ফলে গণপরিষদও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। ড. আম্বেদকর পূর্ব পাকিস্তানের ভোটার কর্তৃক জয়লাভ করে গণ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বলে দেশ বিভাজনের ফলে তার সদস্যপদও খারিজ হয়ে যায়। এ সময় ড. এম.আর জয়াকর গণপরিষদ থেকে পদত্যাগ করায় ড. আম্বেদকার কংগ্রেসের সমর্থনে পুনরায় মহারাষ্ট্র থেকে গণ পরিষদে সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকারের আইন মন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত করা হয়। এদিকে ভারতের জাতীয় পতাকা তৈরির দায়িত্ব ড. আম্বেদকরের উপর ন্যস্ত

ইতিহাস ফিরিয়ে নিয়ে যায় আবার একশো এক বছর আগে - শুভজিৎ দে

Image
পয়েলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ, বাঙালির নববর্ষ। তাই বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম সর্বজনীন উৎসব হল পয়েলা বৈশাখে 'বাংলা নববর্ষ বরণ উৎসব। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ বেদনার হিসাব চুকিয়ে নতুন বছরের নতুন স্বপ্ন আর সম্ভাবনার মঙ্গল কামনায় এক চিরায়ত উৎসবই বলা যেতে পারে, বাংলা নববর্ষকে তথা পয়েলা বৈশাখের উৎসব আয়োজনকে। তবে বাংলা নববর্ষ বিষয়ে আমি কিছু ইতিহাস ঐতিহ্যের ও বিষাদের দিকটি তুলে ধরার চেষ্টা করবো। চিত্রঋণ গল্প কুটির 1919 সালের সেই মর্মান্তিক ঘটনা, শুধু বাঙালিকে নয়, বরং সারা ভারত জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। সেবার ও নববর্ষকে অতীতের সব বেদনা ভুলে আনন্দে গ্রহণ করতে পারেনি কেউ, বর্তমান পরিস্থিতিও একই রকম, শোকে মুহ্যমান সকলে। কি হয়েছিল একশো বছর আগে 13ই এপ্রিল, যার জন্য সে বছর নববর্ষ উদযাপন ম্লান হয়ে গিয়েছিল, জেনে নেওয়া যাক তবে সেই ঘটনা । গতকাল (13ই এপ্রিল) শতবর্ষ অতিক্রম করেছে জালিয়ান ওয়ালাবাগের নিষ্ঠুরতা। যে-কোনো সামাজিক বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড যদি সুখস্মৃতি বয়ে আনে, তবে তা মধুর হয় স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু তা যদি না হয়ে সেই স্মৃতি হয় বীভৎসতা, নৃশংসতার বার্তাবহ? তবে তা

জন্মদিনে বর্ণপরিচয় 165 বছর বয়েসেও সে আজও শিশুশিক্ষার দিশা - শুভজিৎ দে

Image
আজ থেকে 165 বছর আগে আজকের দিনে পন্ডিত শ্রী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রণীত বর্ণপরিচয় প্রথম ভাগ প্রকাশিত হয়। যা আজ ও আগামী নব প্রজন্মকেও বর্ণের পরিচয় দিয়ে যাবে । বর্ণপরিচয় প্রথম ভাগ বর্ণপরিচয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত একটি বাংলা বর্ণশিক্ষার প্রাইমারি বা প্রাথমিক পুস্তিকা। দুই ভাগে প্রকাশিত এই পুস্তিকাটির দুটি ভাগই প্রকাশিত হয়েছিল 1855 সালে। দুই পয়সা মূল্যের এই ক্ষীণকায় পুস্তিকার প্রকাশ বাংলার শিক্ষাজগতে ছিল এক যুগান্তকারী ঘটনা। এই পুস্তিকায় বিদ্যাসাগর মহাশয় বাংলা বর্ণমালাকে সংস্কৃত ভাষার অযৌক্তিক শাসনজাল থেকে মুক্ত করেন এবং যুক্তি ও বাস্তবতাবোধের প্রয়োগে এই বর্ণমালার সংস্কার-সাধনে প্রবৃত্ত হন। গ্রন্থটি যে শুধু বিদ্যাসাগরের জীবৎকালেই সমাদৃত হয়েছিল তাই নয়, আজ গ্রন্থপ্রকাশের 165 বছর পরেও এর জনপ্রিয়তা বিন্দুমাত্র হ্রাস পায়নি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই গ্রন্থটিকে একটি প্রধান প্রথমিক গ্রন্থ হিসাবে অনুমোদন করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কলকাতা পৌরসংস্থার যৌথ প্রয়াসে কলকাতার কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ায় ভারতে বৃহত্তম যে বইবাসরটি (বই বিক্রয়ের শপিং মল) নির্মিত হচ্ছে, তার নামও এই গ্রন্থটি