Posts

Showing posts with the label অজানা তিলোত্তমার খোঁজে

এই পথ যদি না শেষ হয় : শহরের বুকে রাস্তা জন্মানোর ইতিহাস - শুভজিৎ দে

Image
যখন কলকাতা জন্মায় তখন কি আজকের মতো এত গাড়িঘোড়া ছিল ! এ প্রশ্ন সকল কলকাতা প্রেমির। কিন্তু কথা হচ্ছে রাস্তাই যদি না থাকে তবে যানবাহন আসবে কোথা দিয়ে ? রাধারমন মিত্র তাঁর কলকাতা দর্পণ বইতে বলেছেন " 1706 সালে, তখনকার কলকাতা মানে সুতানুটি, কলকাতা গোবিন্দপুর এই তিন গ্রামের জমি-বাড়ি-রাস্তা প্রথম জরিপ হয়। " যাতে সুতানুটি ও গোবিন্দপুর গ্রামের মোট জমির বেশিরভাগ ছিল জঙ্গল। আর কলকাতাকে দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়, 1. বাজার কলকাতা, 2. ডিহি কলকাতা। সেই জরিপ তথ্য থেকে জানা যায় সেই সময় মাত্র দুটি স্ট্রিট ও দুটি লেন ছিল, রোড বা বাই লেনের কোনো উল্লেখ নেই সেই জরিপে। পরবর্তী বছর গুলির জরিপের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা দরকার 1756 সালের জরিপে স্ট্রিট সংখ্যা দাঁড়ায় 27, লেন সংখ্যা 52 এবং বাই লেনের সংখ্যা 74 -এ। ইংরেজি পরিভাষায় যাকে আমরা হাইরোড বলে থাকি তা কলকাতা সে সময় পর্যন্ত কিছুই জানত না। তাই বোঝাই যাচ্ছে তখন সবই হচ্ছে কাঁচা রাস্তা। পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হত 1. পদব্রজে (পায়ে হেঁটে) 2. গরুর গাড়ি (বিশেষ অর্থবান লোকেদের ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ি ছিল তবে তা

খিদিরপুরে সৈয়দ বাবার দরগা ও তাকে ঘিরে জনশ্রুতি - শুভজিৎ দে

Image
কলকাতায় যারা থাকি তারা কোনো না কোনো সময় এর পাশ থেকে গেছেন অবশ্যই। খিদিরপুর থেকে কিছুটা এগালেই পড়বে হেস্টিংস চারমাথার মোর, যার বাম দিকের রাস্তাটি চলেগেছে বাবুঘাট, স্ট্যান্ড রোড, ফুল বাজারের পাশ দিয়ে সোজা হাওড়া। আর ডান দিকের রাস্তাটি চলে গেছে পিজি হাসপাতাল ও রবীন্দ্র সদনের দিকে এবং সামনের রাস্তাটি এগিয়ে চলেছে রেস গ্রাউন্ড, মেয়ো রোড হয়ে ধর্মতলার দিকে। আর এই রাস্তাটা ধরে একটু এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে সৈয়দ বাবার দরগা বামদিকে। চলন্ত গাড়ি থেকে আপনি যদি লক্ষ্য করতে পারেন দেখবেন সৈয়দ বাবার দরগাকে মাঝে রেখে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর একটি শাখা উঠেছে। আপনি সেই শাখা বা  RAMP ব্যবহার করে দ্বিতীয় হুগলি সেতু অথবা রবীন্দ্র সদনের দিকে যেতে পারেন, যেকোনো একদিকে যেতে গেলে চোখে পড়বে সাদা-সবুজ রঙের সেই দরগা ও তার গম্বুজ। যার উঠানে সব সময় চলে পায়রাদের আসর। আর এখান দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর পথে প্রায় সকলেই মনে মনে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। এই দরগাকে কেন্দ্র করে রয়েছে বহু জনশ্রুতি, অনেকেই তা বিশ্বাস করেন, আবার অনেকে করেন না। চিত্রঋণ - Wikipedia কে এই সৈয়দ বাবা ? এ প্রশ্ন হতেই পারে, এই সৈয়দ বাবার পুরোনাম সৈয়দ আলী শাহ, য

এঁদোগলির গার্সটিন বিল্ডিং থেকে আজকের আকাশবাণী - শুভজিৎ দে

Image
Major General John Garstin (1756–1820) Bengal Engineers চিত্রঋণ - British Library. আগে বাড়িটির নাম ছিল গার্সটিন বিল্ডিংস। হেয়ার স্ট্রিটের কাছে এক এঁদোগলির মধ্যে অবস্থিত। কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটে সেন্ট জনস চার্চের অপরদিকে অবস্থিত বাড়িগুলোর যে নাম, এর নাম ও তাই। পুরনো নথিপত্র থেকে জানা যায় যে, এখানে 1700 থেকে 1763 সাল পর্যন্ত কোম্পানির একটি হাসপাতাল ছিল। সেটাই ওদের প্রথম হাসপাতাল, আলেকজান্ডার হ্যামিলটন বলেছিলেন, " এই হাসপাতালে অনেক রোগী চিকিৎসার ঠেলা সামলাতে যেত, কিন্তু সেটা কীরকম  সে অভিজ্ঞতা বলার মতো লোকজন প্রায় দেখাই যেত না।" তখন ঐ এঁদো গলিটা দিয়ে স্থানীয় মানুষজন চলা ফেরা করত, এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় তাকে আর এঁদো গলি বলা চলে না। সেই সময় ঐ অঞ্চলের সব বাড়িকেই বলা হত গার্সটিন বিল্ডিংস। অল ইন্ডিয়া রেডিওর পুরনো অফিস ওয়ারেন হেস্টিংসের খুব কাছের বন্ধু ছিলেন মেজর জেনারেল গার্সটিন, তিনি এক সময় বাংলার সার্ভেয়ার জেনারেল পদে উন্নীত হয়েছিলেন, তিনি ছিলেন বাংলার ষষ্ঠ সার্ভেয়ার জেনারেল (1808-1813) কলকাতার টাউন হল আর পাটনার বাঁকপুরের গোলার নকশা তাঁর করা, 1792 সালে ওল্ড কোর্ট

211 তম জন্মবার্ষিকীতে ডিরোজিও, তবু আজও সে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের আদর্শ - শুভজিৎ দে

Image
হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও আজ থেকে 211 বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন 18ই এপ্রিল, 1809 সালে। তাঁর অল্পবিস্তারিত এ জীবনে তিনি যা করেছিলেন তা আজও আদর্শ হয়ে আছে। পঞ্চদশ শতকের দিকে শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান ও দর্শনের মৌলিক কিছু বিষয় নিয়ে পাশ্চাত্যে নবজাগরণের সৃষ্টি হয়। পাশ্চাত্যের নবজাগরণের ডাক এসেছিল ইতালিতে। এরই ফলশ্রুতি মানুষ সন্ধান করতে চেয়েছিল নতুন জীবনের, উন্মোচিত করতে চেয়েছিল অন্ধকার দূরীকরণের আলোক দ্যুতি। আর এই উন্মেচিত আলোক দ্যুতিই ইউরোপে জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নবজাগরণের সৃষ্টি করে। চিত্রঋণ - Wikipedia ইউরোপে সৃষ্ট নবজাগরণ বাংলায় আসে এক ইউরোপিয়ানেরই হাত ধরে। তার রক্তে ইউরোপ থাকলেও তিনি নিজেকে দাবি করতেন একজন খাঁটি বাঙালি হিসেবে। বাঙলার জন্য অবাধ-নিরপেক্ষ আমরণ সংগ্রাম তিনি চালিয়েছেন। তিনি আর কেউ নন বাংলার নবজাগরনের পুরোধা পুরুষ, ইয়ংবেঙ্গলের প্রাণপুরুষ হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও। বিদেশি শাসকদের শোষণে-নিপীড়িত বাঙালির চিন্তা-চেতনা না পেরেছে স্বাধীনতা অর্জন করতে, না পেরেছে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করতে। আর এই সব সংকট কালীন মুহূর্ত থেকে বাঁচাবার মতো মহান সাধক বাঙালির ভাগ্য

আদি থেকে অন্ত জুয়া করেছে সর্বস্বান্ত : সাট্টা - শুভজিৎ দে

Image
'জুআচোর' শব্দটি ধ্বনি সংক্ষেপের ফলে হয়েছে জোচ্চোর। তাতে অবশ্য কোনো রকমের অর্থপরিবর্তন হয়নি, আর বলা বাহুল্য শব্দটির উৎস রয়েছে সেই বেদের আমল থেকে চলে আসা জুয়াখেলা থেকে। এ ছাড়া দুয়ের মধ্যে পার্থক্য বলতে 'জুআচোর' সাধারণত ব্যবহৃত হয় বাক্যে আর জোচ্চোর সংলাপে। জুয়া শব্দটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে একদল বিষণ্ণ, নিস্তেজ মুখ, আর অন্যদিকে কিছু মানুষের চোখে মুখে খুশির ছাপ, মুখে একগাল হাসি। ছোটোবেলা থেকেই আমরা জুয়া খেলার সাথে পরিচিত, আর সেই পরিচয় করিয়ে দিয়েছে "মহাভারত", 18 দিনের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ, লক্ষ লক্ষ মৃত্যু, আত্মীয়র হাতে আত্মীয়র হত্যা সবকিছুর পিছনে ছিল এই জুয়া। পুরা কাল থেকে আধুনিক কাল জুয়া নিজের অবয়ব পরিবর্তন করে দিব্য টিকে আছে, মানুষ যতদিন ভাগ্যে বিশ্বাস করবে, পৃথিবীতে জুয়াও ততদিন টিকে থাকবে। আধুনিক কালের জুয়া খেলার দৃশ্য একে অন্যকে ঠকানোর নতুন নতুন তরিকা, শকুনির পাশার ঘুঁটিতে গুবরে পোকা ভরা ছিল তাই শকুনি যে দান বলতেন পাশার ঘুঁটিতে সেই দানই উঠত। সেই লোক ঠকানোর ট্র্যাডিশন আজও অব্যাহত। উনবিংশ শতাব্দীর এক সময় এই তিলোত্তমাও জুয়া খেলার লাসভেগাস হয়ে ওঠে,

আন্দুল রাজার বাড়ির গল্প - শুভজিৎ দে

Image
আমি যদিও সাইকেল নিয়েই গিয়েছিলাম, তাও কলকাতা থেকে গাড়ি করে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাগে যেতে। আন্দুল রোড ধরে আন্দুল পৌঁছে যাকেই জিজ্ঞেস করা যায়, রাজবাড়ির কথা সে-ই বলে দেবে। ট্রেনে করে গেলে, হাওড়া থেকে লোকাল ট্রেনে আন্দুল নেমে রিক্সা বা টোটো করে আন্দুল রাজবাড়ি। (আন্দুল রাজবাড়ি ও বিশাল মাঠ)  আসলে আমার বাবার মামারবাড়ি হাওড়ার মানিকপুর অঞ্চলে, আমার ঠাকুমা মানিকপুর জমিদার বাড়ির মেয়ে, আমার ঠাকুমার ঠাকুরদা রামলোচন কর ছিলেন আন্দুল রাজবাড়ির এক নায়েব । সেই সূত্রে এবং যেহেতু হাওড়া জেলার আগামী দিনের বাসিন্দা তাই নিজের চারিপাশের ইতিহাস তুলে ধরা কর্তব্য। সেই কর্তব্যবোধ থেকে আজকের লেখা আন্দুল রাজবাড়ি । (আন্দুল রাজবাড়ির সাথে নিজ্স্বী) ১৮৩০ সালে রাজা রামনারায়ণ রায় বাড়িটি তৈরির কাজ শুরু করেন। কাজ চলে ১৮৩৪ পর্যন্ত। পেল্লাই এই প্রাসাদের সর্বাঙ্গে এখন জীর্ণতার ছাপ। বাড়ির সামনে কেবল মাঝের অংশে গোটা ১২ স্তম্ভ, একেকটি প্রায় ৬০ ফুট উঁচু। এটি এক সময়ের নাচঘর। এই অংশে, ভিতরে এককালে ছিল ২০টি বাহারি স্তম্ভ। উপর থেকে ঝুলত ঝাড়বাতি। নামী বাঈজি, নর্তকীদের মজলিস লেগেই থাকত। এই ভবনের দু’পাশে তিন তলা দুটি ভবনের

অফিস পাড়ার গল্প : ডালহৌসী স্কোয়ার - শুভজিৎ দে

Image
ইংরেজ গভর্নর লর্ড ডালহৌসীর স্মৃতি বহনকারী সুবিখ্যাত পার্ক। ভেতরে মস্তবড় দীঘি, নাম লাল দীঘি। সামনেই উত্তর দিকে প্রকান্ড লাল বাড়ি - রাইটার্স বিল্ডিং। বাংলা তথা ভারতের ইংরেজ শাসনের পাকাপোক্ত দপ্তরখানা। পার্কের উত্তর-পশ্চিম কোনে দাঁড়িয়ে আছে হলওয়েল মনুমেন্ট। যা মনে করিয়ে দেয় অন্ধকূপ হত্যার কথা। ঠিক যেন ঐতিহাসিক মিথ্যাচারের অনৈতিহাসিক নিদর্শনের মত। উত্তর-পূর্ব কোণে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেখা যায় সেন্ট জনস চার্চ। চার্চের পূর্ব দিকে ওল্ড কোর্ট হাউস কর্ণার। ছোটো একটি সরু রাস্তার নাম ওটা। ঐ রাস্তা এসে মিসেছে লালবাজার ষ্ট্রীটের সঙ্গে। এই লালবাজার ষ্ট্রীটের ওপর অবস্থিত লালবাজার পুলিশ হেড কোয়ার্টার। লাল দীঘি, লালবাড়ি, লালবাজার অর্থাৎ সবই লালে লাল। মহারাজ রণজিৎ সিং একদিন ভারতবর্ষের মানচিত্রে ইংরেজদের অধীনস্থ প্রদেশগুলি লাল রঙে রাঙিত দেখে, তিনি সখেদে মন্তব্য করেছিলেন, " সাব লাল হো যায়েগা ! " অর্থাৎ গোটা ভারতবর্ষটা ইংরেজদের পদানত হয়ে যাবে, তাই হয়েছে। " বণিকের মানদণ্ড দেখা দিল, পোহালে শর্বরী, রাজদন্ড রূপে। " (লর্ড ডালহৌসী ও ডালহৌসী স্কোয়ার) বণিকের বেশে ভারতে এসেছিল ইস্ট ইন্ড

তিন কবির ধ্বংসস্তূপ স্মৃতি নিয়ে খিদিরপুর - শুভজিৎ দে

Image
তিন কবির বাসভূমি একসময় ছিল কলকাতার খিদিরপুর অঞ্চলে, যাঁদের অন্যতম অবশ্যই মধুসূদন দত্ত, এবং বাকিরা হলেন রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। খিদিরপুর মোড়ের কাছে একটি কাল্পনিক ২০০ মিটারের ব্যাসার্ধ আঁকলে তার মধ্যে পড়বে তিন বিখ্যাত কবি— রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি। এরমধ্যে হেমচন্দ্র ও রঙ্গলালের বাড়ি কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। বাড়ির কোনও কোনও অংশ মাঝেমধ্যেই ভেঙে পড়ে। বর্তমান বাসিন্দাদের মেরামতির সামর্থ্য নেই। সঙ্গে রয়েছে প্রোমোটারের চাপ। অভিযোগ, পুরসভাও নিষ্ক্রিয়। মাইকেলের বাড়ির হেরিটেজ তকমা নিয়ে চলছে আইনি লড়াই। অভিযোগ, স্থানীয় এক প্রোমোটার চেষ্টা করছেন বাড়ি ভেঙে বহুতল তৈরির। বাড়িটির বিভিন্ন ঘর দোকান হিসাবে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। সবমিলিয়ে, কার্যত অন্ধকারে পড়ে রয়েছে খিদিরপুরের বিখ্যাত কবিতীর্থ। মধুসূদন দত্ত রঙ্গলাল   বন্দ্যোপাধ্যায় এবং হেমচন্দ্র   বন্দ্যোপাধ্যায় মধুসূদন দত্ত অনুমান নির্ভর করে মধুসূদনের বিভিন্ন জীবনী থেকে জানা যায়, মধুসূদনের প্রপিতামহ রামকিশোর দত্ত খুলনার (সেকালের যশোর) বাসিন্দা ছিলেন।

ধর্মতলা আর এসপ্ল্যানেড কিন্তু এক জায়গা নয় - শুভজিৎ দে

Image
এসপ্ল্যানেড হল মধ্য কলকাতার একটি অঞ্চল। এটি আক্ষরিক অর্থে "এসপ্ল্যানেড" নয়; কারণ এই অঞ্চলটি কোনো জলাশয়ের ধারে অবস্থিত নয়। যদিও হুগলি নদী এই অঞ্চলের কিছু দূর দিয়েই প্রবাহিত হয়। এসপ্ল্যানেড শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এটি শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা। কলকাতার ময়দান অঞ্চলটি অতীতে ছিল জঙ্গল এলাকা। এই জঙ্গলের উত্তর অংশটিকে এসপ্ল্যানেড নাম দেওয়া হয়। পুরনো কলকাতার ধর্মতলা (অধুনা লেনিন সরণি) থেকে হুগলি নদীর তীরবর্তী চাঁদপাল ঘাট পর্যন্ত এসপ্ল্যানেড বিস্তৃত ছিল। ওয়ারেন হেস্টিংসের সময় এই অঞ্চলটি ব্রিটিশদের প্রমোদ ভ্রমণের জন্য প্রিয় রাস্তায় পরিণত হয়। ১৭৮০ সালে সোফিয়া গোল্ডবর্ন লিখেছেন, কলকাতার পাঁচটি প্রধান রাস্তা এই অঞ্চলটি ঘিরে ছিল। পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে ১৭৫৮ সালে এসপ্ল্যানেডের কাছেই ফোর্ট উইলিয়ামদুর্গের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এরপর কলকাতায় ইউরোপীয় জনগোষ্ঠীর বসতি ছোটো অঞ্চল ছেড়ে ধীরে ধীরে ময়দানের আশেপাশের অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। তবে মনে রাখা প্রয়োজন যে, এসপ্লানেড ও ধর্মতলা এক জায়গা নয়।   Esplanade in Calcutta in India, 1800 কলকাতা তখন বেশ

থমাস লিওন ও কলকাতার প্রথম তিনতলা বাড়ি - শুভজিৎ দে

Image
দীর্ঘ দিনের ইতিহাস নিয়ে মধ্য কলকাতায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক সেই লালবাড়িটি। কলকাতাকে ‘city of joy’ বা ‘city of culture’ ও বলা হয় কিন্তু তার সাথে একে ‘city of palace’ ও বলা হয়ে থাকে। ব্রিটিশ আমলে চৌরঙ্গিতে অনেক বড় বড় বাড়ির থাকার জন্য এরকম নামকরণ। কিন্তু আপনি কি জানেন কলকাতার প্রথম তিনতলা বাড়ি কোনটি? ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির শাসনকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মহাকরণ হয়ে ওঠা রাইটার্স বিল্ডিং তার পুরনো ইটের আনাচেকানাচে বয়ে নিয়ে চলছে পুরনো তিলোত্তমার নানা রক্তাক্ত ও ঠাণ্ডা মাথায় করা ভারতীয়দের পরাধীন করে রাখার নানান ইতিহাস। যখন যে ক্ষমতায় এসেছে রেখে গিয়েছে তার নিজেস্ব শাসনতন্ত্রের ছাপ। বর্তমানে ব্রিটিশ নির্মিত এই লালরঙা পুরনো বাড়িটি নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা হলেও আজও তার শাস্ত্রীয় ইউরোপীয় স্থাপত্যিক ধারা মনে করায় স্বাধীনতাপূর্ব ও স্বাধীনাত্তোর এই দুই প্রজন্মের ইতিহাসের কথা। মহাকরণ ১৭৫৬ সালে কলকাতা আক্রমণ করল সিরাজউদ্দৌলা। ইংরেজদের সাথে এই আক্রমণে ধূলিসাৎ হয়ে গেল সেইসময় এর বিখ্যাত চার্চ সেন্ট এন্স । কিন্তু যুদ্ধের পর ইংরেজ সরকার আর সেই চার্চটি পুনর্নির্মাণ করল না বরং সে

যার আদলে তৈরী রাণী রাসমণির স্বপ্নের দক্ষিণেশ্বর মন্দির - শুভজিৎ দে

Image
টালিগঞ্জ দক্ষিণ কলকাতার একটি অঞ্চল। এর উত্তরসীমায় পূর্ব রেলওয়ের দক্ষিণ শহরতলি লাইন, পূর্বে লেক গার্ডেন্স ও গলফ গ্রিন দক্ষিণে পশ্চিম পুটিয়ারি ও পূর্ব পুটিয়ারি এবং পশ্চিমে নিউ আলিপুরও বেহালা অবস্থিত। এই টালিগঞ্জ নামেরও আছে এক ইতিহাস। প্রথমে জানা যাক তা, কলকাতার দ্য ফার্দিনান্দ দে লেসপ্স মেজর উইলিয়াম টলির নামে টালিগঞ্জের নামকরণ হয়। এই টলি সাহেবই 1775-76 সালে কলকাতার সঙ্গে অসম ও পূর্ববঙ্গের যোগসূত্র হিসাবে টালির নালা খনন ও ড্রেজ করার কাজ শুরু করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই টালির নালাটিও টলি সাহেবের নামেই নামাঙ্কিত। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি টলি সাহেবকে এই নালা দিয়ে যাতায়াতকারী নৌকাগুলি থেকে টোল আদায় ও নালার ধারে একটি গঞ্জ বা বাজার স্থাপনের অনুমতি দিয়েছিল। (রাধাগোবিন্দজীর মন্দির) 1776 সালে তার এই স্বপ্নের প্রকল্পটি সম্পন্ন হয় এবং পরের বছরেই এটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই এই সতেরো মাইল দীর্ঘ খালটি টালির নালা (ইংরেজিতে টলি’জ ক্যানেল) ও তার প্রতিষ্ঠিত বাজারটি টালিগঞ্জ নামে পরিচিত হয়। নালার পূর্ব পাড়ে বর্তমান টালিগঞ্জ রোডের কাছেই কোথাও এই বাজারটি অবস্থ