Posts

Showing posts from 2019

যেতে যেতে পথে : ভূকৈলাশ রাজবাড়ি - শুভজিৎ দে

Image
মহারাজা বাহাদুর জয়নারায়ণ ঘোষাল 200 বিঘা জমির উপরে ভূকৈলাশ রাজবাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন । এই " ভূ-কৈলাশ " নামটি সাধক রামপ্রসাদের দেওয়া, তিনি এই স্থান পরিদর্শন কালে জায়গাটির নাম দেন " ভূ-কৈলাশ " । সুরধুনী কাব্যে ভূ-কৈলাশ রাজবাড়ির বর্ণনা দিয়েছিলেন দীনবন্ধু মিত্র এই ভাবে - " ভুবনে কৈলাশ-শোভা ভূ-কৈলাশ ধাম, সত্যের আলয় শুভ সত্য সব নাম " । এই বিশাল ভূ-ভাগের মধ্যে আছে মূল তিনটি মন্দির এবং 300 বছরের পুরানো জরাজীর্ণ ইটভাটা । খিদিরপুর ডক সংলগ্ন ট্রামডিপো থেকে হাটা পথে 10 থেকে 15 মিনিট, যদিও আমি সাইকেলে গিয়েছিলাম, ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে এই বাংলার প্রাচীনতম ও অবশ্যই ধনী ঐতিহ্যবাহী সম্পত্তিগুলির মধ্যে ভূকৈলাশ রাজবাড়ি অন্যতম একটি । তবে বর্তমানে রাজবাড়ির সেই রাজকীয় বৈভব নেই, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে রাজবাড়ির অংশবিশেষ, আধুনিকতার ছোয়া লেগে সংরক্ষণের বদলে তাকে পুনরায় বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা হয়েছে । বর্তমানে এই স্থানে রাজপরিবারের সদস্যরা ও প্রজারা ছাড়াও পরবর্তীকালে আগত বহু স্মরণার্থী থাকার জন্যে এই স্থানটিকে বেছে নিয়েছেন, তাদেরই উত্তরপুরুষ আজও এই জনপদে বসবাস করছে ।   (পুরাতন রা

বঙ্গ সংস্কৃতি : পটচিত্র - শুভজিৎ দে

Image
গ্রাম বাংলার লোকজ ঐতিহ্যের অন্যতম আকর্ষণ পটচিত্র। পটচিত্রের শুরু কবে তার সঠিক সময়কাল জানা সম্ভব হয়নি। অনুমান করা হয় পটচিত্রের ইতিহাস হাজার বছরের পুরোনো। পট এর আভিধানিক অথর্ -বস্ত্র, যা সংস্কৃত ‘পট্ট’ শব্দ থেকে এসেছে। লম্বা কাপড়ে দীর্ঘ রেখা টেনে ছবি আঁকাই হচ্ছে পটচিত্র। পটচিত্র আঁকার কাজে ব্যবহৃত হত দেশজ রঙ এবং মোটা কাপড়। তবে, কাপড়ে পটচিত্র আঁকার প্রচলন কমে যায় কাগজ আবিষ্কারের পর থেকেই। পট চিত্রশিল্পীদের ডাকা হয় ‘পটুয়া’ নামে। তাঁরা যে শুধু চিত্রশিল্পীই তা নয়, তাঁরা চিত্র প্রদর্শনীর সময় সুরে সুরে গানে গানে কাহিনী বিবরণ করেন । পটচিত্রের সময় যে গান গাওয়া হয় তা ‘পটের গান’ নামে পরিচিত। ‘পটুয়া’রা সাধারণত মাপকাঠি কিংবা মডেল সামনে বসিয়ে নিয়ম-রীতি মেনে ছবি আঁকেন না। দীর্ঘ রেখা টেনে কাহিনী চিত্রায়িত করেন নিজেদের মতো করে। শিল্প-সমোঝদারদের কাছে গুরুত্ব পায়নি এই পটচিত্র। পটচিত্রের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য কিংবা স্বকীয়তা রয়েছে। রেখা টানার সময় সেখানে কোনো অনুভূতি প্রকাশের প্রয়োজন মনে করেন না, বিভিন্ন রকমের অবয়ব এঁকে গল্প সাজান ধারাবাহিকভাবে।পটচিত্রগুলো সুনিপুণ হয় না। কারণ, সাধারণ কয়েক ধাপে আঁকা হয়। প্রথম

স্মৃতিতে আজও বেঁচে; প্রসঙ্গ নবাব ও মেটিয়াবুরুজ - শুভজিৎ দে

Image
      নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ            যব ছোড় চলে লখনৌ নগরী...শুধু নগরী নয়। তাঁকে ছেড়ে চলে আসতে হয়েছিল প্রাণের চেয়ে প্রিয় অওয়ধ। নবাবি চলে যাওয়ার মুহূর্তেও চোখে জল আসেনি। কারণ মনে করতেন, একমাত্র সঙ্গীত এবং কবিতাই প্রকৃত পুরুষের চোখে জল আনতে পারে। তিনি অওয়ধের শেষ নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ। রাজ্যহারা নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ জীবনের শেষ তিরিশ বছর কাটিয়েছিলেন কলকাতাতেই। সময় যত এগোচ্ছে, এই শহরের ওপর তাঁর সাংস্কৃতিক প্রভাব তত ফুটে উঠছে। একদা শ্রীপান্থ এই বিষয়ে প্রথম বই লিখেছিলেন, এখন আরও অনেকেই— ইংরেজি-বাংলা, দুই ভাষাতেই। নবাবের বাড়ি পত্রিকা থেকে পাওয়া নবাবের সমাধি সে  উনিশ শতকের কথা। তখন বাংলা বানানে লখনউ শহরটাও ছিল অন্য রকম: ‘লক্ষ্ণৌর বাদশা কয়েদ থেকে খালাস হয়ে মুচিখোলায় আসায় শহর বড় গুলজার হয়ে উঠলো।’ লিখছেন হুতোম। ‘হুতোম প্যাঁচার নকশা’ দিয়েই মুখপাত শ্রীপান্থের ওয়াজিদ-দর্শনের। অযোধ্যার সদ্য-রাজ্যহারা নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ কোম্পানির পেনশন নিয়ে লখনউয়ের কোনও প্রাসাদে নিশ্চিন্তে থাকতেই পারতেন। তা না করে ছুটলেন কলকাতা। ইচ্ছে, কাউন্সিলের কর্তাদের কাছে সওয়াল করবেন সিংহাসন উদ্ধারের জন্য।

কলকাতায় প্রথম টেলিফোন - শুভজিৎ দে

Image
         ( প্রথম দিকের টেলিফোন )                                      ‘ক্রিং ক্রিং __ক্রিং ক্রিং ...’          আহা কী মধুর সে শব্দ । কোনো গান নয়, বা বাদ্যযন্ত্রের অপূর্ব রাগ নয়। স্রেফ যান্ত্রিক ক্রিংক্রিং-- আর তাতেই মজে গিয়েছিল কলকাতা শহর। টেলিফোনের কী অপূর্ব অনুবাদই না হয়েছিল বাংলায়- দূরভাষ। কতরকম বিবর্তনের ভিতর দিয়ে গিয়ে, কতরকম রূপ পালটে টেলিফোন দৌড়েছিল প্রায় দেড়শো বছর। আজও চলছে বটে, তবে ধিকিধিকি। সেই দুরন্তবেগ ক্রমহ্রাসমান।  ( বৈদ্যুতিক বাতি ও টেলিফোনের বিজ্ঞাপন ) বিজ্ঞানের নানান আবিষ্কারই সমাজজীবনে ঢের পরিবর্তন এনেছে। তবে টেলিফোন সমাজজীবন থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত সম্পর্কের নিবিড় আলাপচারিতাকে পর্যন্ত নিজের প্যাঁচানো তারে বেঁধেছিল। টেলিফোন আসায় প্রেমের বয়ান গেল বদলে। প্রেমপত্রের অধীর অপেক্ষা গিয়ে ঠেকল ক্রিংক্রিং- ধ্বনিমাধুর্যে। গোটা বিশ্বও যেন সেই এক ধ্বনিতে বাঁধা। কলকাতা তো বটেই।   ( Morce Code টেলিগ্রাফ যন্ত্রে ব্যবহৃত সংকেত ) ( টেলিগ্রাফ যন্ত্রে ) ১৮৭৬ সালে গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেন। বেলসাহেবের সেই বেল খুব দ্রুতই বিশ্বময় জনপ্রিয় হয়ে