Posts

Showing posts with the label ভারত নৈতিকতা এবং অবস্থান

জহিরউদ্দিন বাবর ও প্রথম পানিপথের যুদ্ধের 494 বছর - শুভজিৎ দে

Image
" ও এক দুর্ভাগ্যবান, যে পেয়েও থাকতে চায়নি এ দেশের মাটিতে সমাধিস্ত, আর আমি এক দুর্ভাগ্যবান, যে চেয়েও পাচ্ছি না দু'গজ জমি থাকার মত " শুরু করলাম এক দুর্ভাগ্যবানের একটি কথা দিয়ে, এ কথা তিনি জীবনের শেষ সময়, নির্বাসনে থাকাকালীন জেলের দেওয়ালে লিখে গেছেন, তিনি আর কেউ নন, আজ থেকে বহু বছর আগে ভারত ইতিহাসে যিনি নতুন যুগের সূচনা করেন, সেই মির্জা জহিরউদ্দিন মহম্মদ বাবর এর উত্তর পুরুষ, শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর, যার শাসন শেষ হবার মাধ্যমে 331 বছরের ঐতিহ্য অস্তমিত হয়। হটাৎ কেন আজ মুঘল দের কথা বলছি, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, আদতে আজ থেকে 494 বছর আগে এই ভারতের মাটিতে মুঘল সাম্রাজ্যের ইমারত নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল পানিপথের প্রথম যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে, আজ ফিরে দেখা সেই যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস। চিত্রঋণ - Wikipedia ঐতিহাসিক এই পানিপথে তিনবার যুদ্ধ হয়। প্রথম যুদ্ধ হয়েছিল 1526 সালে, দ্বিতীয়টি 1556 ও তৃতীয়টি 1761 সালে। পানিপথের প্রথম যুদ্ধে  জাহিরউদ্দিন বাবর দিল্লির আফগান সুলতান ইব্রাহিম লোদীকে পরাস্ত করে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। অবসান ঘটান ভারতে লোদী বংশের শাসনকালের, দিনটি

সংবিধানের স্থপতি ড. আম্বেদকার - শুভজিৎ দে

Image
ভীমরাও রামজি আম্বেদকার ছিলেন একজন ভারতীয় আইনবীদ, রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছাড়াও তাঁর আরও অনেক পরিচয় আছে। তিনি বাবাসাহেব নামেও পরিচিত ছিলেন সকলের কাছে। ভারতের সংবিধানের খসড়া কার্যনির্বাহক সমিতির সভাপতিত্ব করেছিলেন, এছড়াও তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদী এবং ভারতের দলিত আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। বাবাসাহেব আম্বেদকার ভারতের সংবিধানের মুখ্য স্থাপক ছিলেন, তিনি জন্মগ্রহণ করেন 14ই এপ্রিল 1891 সালে, আজ তার 129 তম জন্মবার্ষিকী। 1947 সালের 15 জুলাই বৃটিশ পার্লামেন্ট কর্তৃক ‘স্বাধীন ভারত’ হিসেবে আইন পাশ করা হলে গণপরিষদ সার্বভৌম ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। দেশ বিভাজনের ফলে গণপরিষদও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। ড. আম্বেদকর পূর্ব পাকিস্তানের ভোটার কর্তৃক জয়লাভ করে গণ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বলে দেশ বিভাজনের ফলে তার সদস্যপদও খারিজ হয়ে যায়। এ সময় ড. এম.আর জয়াকর গণপরিষদ থেকে পদত্যাগ করায় ড. আম্বেদকার কংগ্রেসের সমর্থনে পুনরায় মহারাষ্ট্র থেকে গণ পরিষদে সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকারের আইন মন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত করা হয়। এদিকে ভারতের জাতীয় পতাকা তৈরির দায়িত্ব ড. আম্বেদকরের উপর ন্যস্ত

ইতিহাস ফিরিয়ে নিয়ে যায় আবার একশো এক বছর আগে - শুভজিৎ দে

Image
পয়েলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ, বাঙালির নববর্ষ। তাই বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম সর্বজনীন উৎসব হল পয়েলা বৈশাখে 'বাংলা নববর্ষ বরণ উৎসব। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ বেদনার হিসাব চুকিয়ে নতুন বছরের নতুন স্বপ্ন আর সম্ভাবনার মঙ্গল কামনায় এক চিরায়ত উৎসবই বলা যেতে পারে, বাংলা নববর্ষকে তথা পয়েলা বৈশাখের উৎসব আয়োজনকে। তবে বাংলা নববর্ষ বিষয়ে আমি কিছু ইতিহাস ঐতিহ্যের ও বিষাদের দিকটি তুলে ধরার চেষ্টা করবো। চিত্রঋণ গল্প কুটির 1919 সালের সেই মর্মান্তিক ঘটনা, শুধু বাঙালিকে নয়, বরং সারা ভারত জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। সেবার ও নববর্ষকে অতীতের সব বেদনা ভুলে আনন্দে গ্রহণ করতে পারেনি কেউ, বর্তমান পরিস্থিতিও একই রকম, শোকে মুহ্যমান সকলে। কি হয়েছিল একশো বছর আগে 13ই এপ্রিল, যার জন্য সে বছর নববর্ষ উদযাপন ম্লান হয়ে গিয়েছিল, জেনে নেওয়া যাক তবে সেই ঘটনা । গতকাল (13ই এপ্রিল) শতবর্ষ অতিক্রম করেছে জালিয়ান ওয়ালাবাগের নিষ্ঠুরতা। যে-কোনো সামাজিক বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড যদি সুখস্মৃতি বয়ে আনে, তবে তা মধুর হয় স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু তা যদি না হয়ে সেই স্মৃতি হয় বীভৎসতা, নৃশংসতার বার্তাবহ? তবে তা

ব্যাংক ব্যবস্থা : তখন ও এখন - শুভজিৎ দে

Image
ব্যাংক জাতীয়করণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বনাম উপপ্রধানমন্ত্রীর বিবাদের জেরে ভেঙেছিল শাসক কংগ্রেস দলও৷ আজকের প্রজন্ম সেভাবে পরিচিত নয় ‘ব্যাংক ফেল’ হওয়ার সঙ্গে ৷ কিন্তু স্বাধীনতার আগে বলে নয় তার পরেও বেশ কয়েক বছর এদেশে মাঝে মধ্যেই ব্যাংকে তালা পড়তে দেখা যেত ৷ চিত্রঋণ Wikipedia একদিকে সেজন্য কাজ হারাতেন সেই ব্যাংকের কর্মীরা আবার অন্যদিকে সেখানে সঞ্চিত টাকা রেখে সর্বস্ব খুইয়ে পথে বসতেন গ্রাহকরা৷ তখনকার বহু গল্প উপন্যাস কিংবা সিনেমায় এই ব্যাংক উঠে যাওয়া কথা উঠে আসত ৷ কারণ অবশ্য সেসময় ব্যাংক জাতীয়করণ হয়নি ফলে সেগুলি ছিল বেসরকারি মালিকানায়৷ এই সামাজিক ব্যাধির পাশাপাশি বাম এবং ব়্যাডিকাল কংগ্রেস নেতারা মনে করতেন এই রকম ব্যাংক ব্যবস্থার ফলে বেসরকারি হাতে পুঁজি সঞ্চিত হচ্ছে যা একেবারেই কাম্য নয়৷ ফলে ব্যাংক জাতীয়করণ করার জন্য দাবি উঠত ৷ অবশেষে ১৯৬৯ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংক জাতীয়করণ করেন৷ পরবর্তীকালে আবার ১৯৮০ সালে আরও ছয়টি ব্যাংক জাতীয়করণ করা হয়েছিল৷ তবে ব্যাংক জাতীয়করণ ঘিরে ইন্দিরা গান্ধী এবং মোরারজি দেশাইয়ের সম্পর্কের তিক্ততা চরমে পৌঁছে

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারত ভুক্তির উদ্যোগ ও বিতর্ক - শুভজিৎ দে

Image
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর, তথা দেশবিভাগের পর ভারত দুই ধরণের অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল; ব্রিটিশ ভারতের প্রদেশসমূহ ও দেশীয় রাজ্যসমূহ। এই প্রদেশসমূহকে ব্রিটিশ কোম্পানি শাসন করত। অন্যদিকে, উক্ত দেশীয় রাজ্যসমূহের উপরেও ব্রিটিশ সরকারের কর্তৃত্ব বিস্তৃত ছিল, তবে সেখানে শাসন করত উক্ত অঞ্চলের নিজস্ব শাসকেরাই। এছাড়াও ভারত ভূখণ্ডে ফ্রান্স ও পর্তুগালদ্বারা শাসিত কিছু ঔপনিবেশিক কলোনিও ছিল। ভারতে এই অঞ্চলগুলোর রাজনৈতিক একত্রীকরণ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম ঘোষিত লক্ষ্য ছিল। পরবর্তী দশকে ভারত সরকার এই লক্ষ্যকেই অনুসরণ করে চলে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল এবং ভপ্পলা পঙ্গুন্নি মেনন ভারতের সাথে একীভূত হবার জন্য বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যের শাসকদের জোর দেন। ভারতে অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হলে ধাপে ধাপে এই রাজ্যগুলোর উপর কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা ও প্রশাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৬ সালের পরে এই দেশীয় রাজ্যগুলি আর ব্রিটিশ শাসিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে তেমন কোনো তফাত ছিল না। ক্রমশ, ভারত সরকার কিছু কূটনৈতিক ও সামরিক উপায়ে দ্য ফ্যাক্টো এবং দ্য জ্যুরে-এর মাধ্যমে অবশিষ্ট ঔপনিবেশিক কলোনিগুলোর উ