ব্যাংক ব্যবস্থা : তখন ও এখন - শুভজিৎ দে

ব্যাংক জাতীয়করণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বনাম উপপ্রধানমন্ত্রীর বিবাদের জেরে ভেঙেছিল শাসক কংগ্রেস দলও৷ আজকের প্রজন্ম সেভাবে পরিচিত নয় ‘ব্যাংক ফেল’ হওয়ার সঙ্গে ৷ কিন্তু স্বাধীনতার আগে বলে নয় তার পরেও বেশ কয়েক বছর এদেশে মাঝে মধ্যেই ব্যাংকে তালা পড়তে দেখা যেত ৷

চিত্রঋণ Wikipedia

একদিকে সেজন্য কাজ হারাতেন সেই ব্যাংকের কর্মীরা আবার অন্যদিকে সেখানে সঞ্চিত টাকা রেখে সর্বস্ব খুইয়ে পথে বসতেন গ্রাহকরা৷ তখনকার বহু গল্প উপন্যাস কিংবা সিনেমায় এই ব্যাংক উঠে যাওয়া কথা উঠে আসত ৷ কারণ অবশ্য সেসময় ব্যাংক জাতীয়করণ হয়নি ফলে সেগুলি ছিল বেসরকারি মালিকানায়৷ এই সামাজিক ব্যাধির পাশাপাশি বাম এবং ব়্যাডিকাল কংগ্রেস নেতারা মনে করতেন এই রকম ব্যাংক ব্যবস্থার ফলে বেসরকারি হাতে পুঁজি সঞ্চিত হচ্ছে যা একেবারেই কাম্য নয়৷ ফলে ব্যাংক জাতীয়করণ করার জন্য দাবি উঠত ৷ অবশেষে ১৯৬৯ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংক জাতীয়করণ করেন৷ পরবর্তীকালে আবার ১৯৮০ সালে আরও ছয়টি ব্যাংক জাতীয়করণ করা হয়েছিল৷ তবে ব্যাংক জাতীয়করণ ঘিরে ইন্দিরা গান্ধী এবং মোরারজি দেশাইয়ের সম্পর্কের তিক্ততা চরমে পৌঁছেছিল৷ জন্ম হয়েছিল দুই গোষ্ঠী- ‘সিন্ডিকেট’ এবং ‘ইন্ডিকেট’৷

চিত্রঋণ Wikipedia

এটা ঘটনা যখন থেকে ব্যাংক জাতীয়করণের কথা উঠত তখন তাড়াহুড়ো করে রাষ্ট্রায়ত্ত করণের দিকে যেতে চায়নি ভারত সরকার কারণ মনে করা হয়েছিল অধিগ্রহণ করতে গেলে ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি এগুলি চালানোর জন্য উপযুক্ত লোকের অভাবে এই ক্ষেত্রে জটিলতা বৃদ্ধি পেতে পারে৷ সামাজিক নিয়ন্ত্রণের কথা মাথায় রেখে ১৯৬৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ব্যাংক সংক্রান্ত আইন সংশোধিত হয়ে তা জারি করা হয়৷ জুলাইয়ের শুরুতেই ১৫টি এমন বাণিজ্যিক ব্যাংক যাদের সকলের আমানতের পরিমাণ ২৫ কোটি টাকা অথবা তার বেশি তাদের পরিচালক মণ্ডলী পুনর্গঠন করা হয় এবং একজন পূর্ণ সময়ের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়৷ এই ব্যাংকগুলির হাতে ছিল বেসরকারি ব্যাংকগুলির হাতে থাকা মোট আমানতে ৭৭ শতাংশ৷ ওই সময় ব্যাংক সংক্রান্ত আইন সংশোধিত হওয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে নিতে হয়েছিল অন্যান্য বেসরকারি এবং বিদেশি ব্যাংকগুলিকেও৷

চিত্রঋণ Wikipedia

ব্যাংক ব্যবস্থায় সামাজিক নিয়ন্ত্রণ থেকে জাতীয়করণ এটাও ছিল একটা বিবর্তনের পথ৷ সেইসময় প্রথমেই ব্যাংক শিল্পের প্রতিনিধিদের যুক্তি ছিল সামাজিক নিয়ন্ত্রণের তেমন কোনও প্রয়োজন নেই কারণ রিজার্ভ ব্যাংক নজরদারি করছে তো ৷ তাছাড়া বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির পক্ষ থেকে দেশের অর্থনীতিতে সঞ্চয় বাড়াতে ভূমিকা প্রশংসনীয় বলে দাবি করলেও সেটা একেবারেই মানতে চাননি জহরলালের কন্যা৷ এদিকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ঋণ দিতে পারছে না ব্যাংক বলেই ধারণা ছিল প্রিয়দর্শিনীর৷

সামাজিক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে ছিল জাতীয় ঋণ পর্ষদ যার চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রী এবং অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন কৃষি, শিল্প বাণিজ্য, ব্যাংক এবং পেশার জগতের প্রতিনিধিরা৷ আসলে বামেরা ক্রমাগত জাতীয়করণের দিকে চাপ দিলেও প্রথমে তৎকালীন সরকার এদেশের মানুষ মোটামুটি ব্যাংকগুলি সামাজিক নিয়ন্ত্রণে এলেই খুশি হবে বলে মনে করেছিল৷ সেই কারণে ১৯৬৯ সালের এপ্রিল মাসে ফরিদাবাদে কংগ্রেস কমিটির বৈঠকে ইন্দিরা গান্ধী নিজেও জানিয়েছিলেন, তিনি জাতীয়করণের বিপক্ষে নন তবে তা করলে ব্যাংক চালানোর মতো উপযুক্ত লোকের অভাব রয়েছে৷ যদিও তার কয়েক মাস বাদে ইন্দিরা গান্ধী নিজেই জাতীয়করণের পক্ষেই সওয়াল করেন৷

ইন্দিরা গান্ধী তখন আশংকা প্রকাশ করেছিলেন শুধু সামাজিক নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পরিচালকমন্ডলী নতুন করে গড়া হলেও পুরনো চেয়ারম্যানকে সেখানে অন্যতম সদস্য হিসেবে রাখলে সেই ব্যক্তি পরবর্তীকালেও ব্যাংক পরিচালনায় প্রভাব ঘাটাতে পারেন৷ ফলে আইন করে তাদের আটকাতে চান৷ তাছাড়া নবগঠিত ব্যাংকে যদি পুরোন অবস্থার ব্যাংকের উচ্চপদের কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন তিনি পুরনো মালিক শিল্পগোষ্ঠীর প্রতি আনুগত্য দেখাতে পারেন৷ এরফলে নেহরু কন্যা অনুভব করেন ব্যাংক জাতীয়করণের দিকেই যেতে হবে ৷

কিন্তু সেই সময় তাঁর এহেন প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন খোদ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা উপপ্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই৷মোরারজির যুক্তি ছিল, বড় ব্যাংক অধিগ্রহণ করার কোন মানে হয় না কারণ হিসেবে তিনি স্টেট ব্যাংকের প্রসঙ্গ তুলে নোটদিয়েছিলেন৷জানিয়েছিলেন আগে যে আশা নিয়ে স্টেট ব্যাংক জাতীয়করণ করা হয়েছিল সেটা পূরণ হয়নি, সেভাবে সম্পদ সৃষ্টি হয়নি৷ তিনি চেয়েছিলেন, জনগণের টাকার জিম্মাদার হিসেবে ব্যাংক থাকুক এবং তহবিলকে কাজে লাগাক৷ পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে ঋণ দেওয়া হোক৷ মোরারজি দেশাইয়ের মনে হয়েছিল সামাজিক নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষা নিরীক্ষা একটা চলমান প্রক্রিয়া, যার লক্ষ্য হল ব্যাংক জাতীয়করণ না করেই সামাজিক ভাবে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা৷

চিত্রঋণ Wikipedia

কিন্তু মোরারজির কথা গ্রাহ্য করতে চাইলেন না তখন ইন্দিরা ফলে ১৭ জুলাই দিল্লিতে কংগ্রেস সংসদীয় দলের বৈঠকে সেকথা তিনি বুঝিয়েও দেন ৷এরপরে ১৯ জুলাই ইন্দিরা ঘোষণা করেন ১৪টি ব্যাংক জাতীয়করণ করা হল ৷ এই ঘোষণা করেই তিনি থামেন নি পাশাপাশি মোরারজি দেশাইয়ের কাছ থেকে অর্থমন্ত্রক কেড়ে নিজের হাতে নিয়ে নেন ৷ অবশ্য জানিয়ে দেন তিনি চাইলে অন্য কোনও মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়ে তাঁর মন্ত্রিসভায় উপ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকতে পারেন৷ কারণ তিনি বুঝেছিলেন মোরারজি দেশাই থাকলে তিনি ব্যাংক জাতীয়করণ করতে পারবেন না৷

এদিকে তাঁর মতো একজন বরিষ্ঠ মন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এহেন ব্যবহারে তিনি রীতিমতো বিস্মিত এবং ক্ষুব্ধ হন মোরারজি৷ তিনি ইন্দিরাকে চিঠিতে জানিয়েছিলেন, যে ব্যবহার তিনি পেলেন তা কেউ একজন তাঁর ক্লার্কের সঙ্গে করে না যদিও তিনি তো উপপ্রধানমন্ত্রী৷ এরপরে মোরারজি শুধু মন্ত্রিসভা থেকেই পদত্যাগ করেননি ভাঙন নেমে এসেছিল কংগ্রেস দলেও ৷ মোরারজি যোগ দেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস (অর্গানাইজেশন) এবং শ্রীমতী গান্ধী গঠন করেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস (রুলিং) ৷ এই ভাঙনের আগেই দেশাইয়ের গোষ্ঠীকে ‘সিন্ডিকেট’ এবং ইন্দিরা গোষ্ঠীকে ‘ইন্ডিকেট’ নামে ডাকা হতে শুরু করে৷

জাতীয়করণ হওয়া ব্যাঙ্ক গুলির নাম : -
1. সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া
২. ব্যাংক অফ মহারাষ্ট্র
3.  দেনা ব্যাংক
4. পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক
5. সিন্ডিকেট ব্যাংক
6. ক্যানাড়া ব্যাংক
7. ইন্ডিয়ান ব্যাংক
8. ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাংক
9. ব্যাংক অফ বরোদা
10. ইউনিয়ন ব্যাংক
11. এলাহাবাদ ব্যাংক
12. ইউনাইটেড ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া
13. ইউকো ব্যাংক
14. ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া

১৯৬৯ থেকে ২০১৯— মানে কেটে গেছে ৫০ বছর। অর্থাৎ অতীতের ১৩টি ব্যাঙ্কের সঙ্গে গত ৫০ বছরে আরও ১৪টি ব্যাঙ্ক যুক্ত হয়েছে। আর এই ব্যাঙ্কগুলিই আজ সরকারি ব্যাঙ্ক। এদের সরকারিকরণের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে অর্থাৎ স্বর্ণ জয়ন্তী যাকে বলে।
১৯৬৯ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তিনি টের পাচ্ছিলেন একদিন যারা মোরারজি দেশাইকে ঠেকিয়ে দেন, ‘গুঙ্গি গুড়িয়া’‌ অর্থাৎ ইন্দিরা গান্ধীকে গদিতে বসিয়ে নিজেরাই দেশটি চালাবেন তারা যে অঙ্কে নেহাতই কাঁচা, তা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। সেই সিন্ডিকেটের চাঁই চাঁই নেতা অর্থাৎ পূর্ব ভারতে অতুল্য ঘোষ, পশ্চিম ভারতে এস কে পাটিল, দাক্ষিণাত্যে, মাদ্রাজে কে কামরাজ এবং বেঙ্গালুরুতে নিজলিঙ্গাপ্পা, ইউপি–‌তে সি বি গুপ্তদের এবার প্রকৃত সত্যটা বোঝানো দরকার। তাঁদের বোঝাতেই হবে ইন্দিরা আর যাই হন ‘‌গুঙ্গি গুড়িয়া’‌ অর্থাৎ বোবা পুতুল নন।
বেঙ্গালুরুতে ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং–‌এ বোমা ফাটালেন ইন্দিরা। দুটি প্রধান দাবি তাঁর। তিনি চান, সংবিধান সংশোধন করেও ‘‌রাজন্য ভাতা’‌ বিলোপ করতে। আর কত বছর স্বাধীন ভারত অতীতের রাজা, মহারাজা, নবাবদের ভাতা দেবে?‌ দুই সিপিআই— সিপিআই ও সিপি (‌এম)‌–‌ও তাই চায়। তাঁর দ্বিতীয় দাবি বেসরকারি ব্যাঙ্কের জাতীয়করণ। ইন্দিরার মতে বেসরকারি ব্যাঙ্কের প্রোমোটার/‌মালিকরা বড় বড় কর্পোরেট হাউসের মালিক/‌প্রোমোটার বা তাদের অনুগত ভৃত্য। সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত টাকা ব্যাঙ্কে যা জমা রয়েছে, সেই জমা টাকাই খাটছে কর্পোরেট হাউসের কলে–‌কারখানায়। কী সুদে ওই ধার দেওয়া হয় তা যেমন জানা যায় না, তেমনি জানা যায় না ঋণের বহর। অথচ গরিব মানুষ, খেটেখাওয়া মানুষ, ছোটখাট ব্যবসার মালিক মাথা খুঁড়লেও কোনও ঋণ পায় না। তাদের পরিষ্কার বলা হয় ধার পেতে হলে ঋণের পরিমাণের সমতুল্য জমি, বাড়ি ইত্যাদি ব্যাঙ্কের কাছে মর্টগেজ রাখতে হবে।

যথারীতি ইন্দিরা গান্ধীর প্রস্তাবে সিন্ডিকেট সদস্যরা নারাজ। পার্টি ভাগ হয়ে গেল— আদি ও নব কংগ্রেসে। নব কংগ্রেসের কর্ণধার অবশ্যই ইন্দিরা। সঙ্গে বাবু জগজীবন রাম ও ওয়াই বি চ্যবন। আদির সঙ্গে রয়ে গেলেন সিন্ডিকেট সদস্যরা। লোকসভায় কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও, ভাগাভাগির ফলে ইন্দিরার বিপদ কাটাতে এগিয়ে এল দুই কমিউনিস্ট দল। তখন লোকসভায় দুই কমিউনিস্ট দলের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬০। ব্যাঙ্ক হাতে এলেও, প্রথম ১০/‌১১ বছর যেমন চলছিল, তেমনই চলল। যেমন কলকাতায় সদর এই তিনটি ব্যাঙ্ক ইউবিআই, ইউকো এবং এলাহাবাদ যথারীতি চা–‌বাগান, বিড়লা এবং চটকলগুলির পুঁজি জোগান দিতে লাগল। টাটাদের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক মূলত টাটা কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত রইল ইত্যাদি।

কিন্তু জনতা পার্টির তিন বছর শাসনের পর ইন্দিরা গান্ধী দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় যখন ফিরলেন সেই ১৯৮০ সালে, গোটা দেশ এক নতুন কথা শুনল। তখন অর্থমন্ত্রী কর্ণাটকের জনার্দন পূজারী। তিনি চালু করলেন ব্যাঙ্কের টাকায় ‘‌লোন মেলা’‌। বহু মেলার দেশ বলে পরিচিত ভারত এই প্রথম টাকার মেলা দেখল। কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলির চাষিদের এই মেলা দেখার সৌভাগ্য হল। সরকারি তরফে ‘‌লোন’‌ বা ‘‌ধার’‌ হলেও চাষিদের কংগ্রেসিরাই বলে দিয়েছিল শোধ দেওয়ার দরকার নেই। শুরু হল একদা বেসরকারি, ১৯৬৯–‌এর পর সরকারি ব্যাঙ্কের টাকা নিয়ে নেতাদের মোচ্ছব।

পরে ব্যাঙ্কের বকেয়া না পেয়ে ব্যাঙ্কের কর্তারা বেঁকে দাঁড়াল, বললেন, যে ধার শোধের ব্যবস্থা নেই সেই ধার দেব না। তখন শুরু হল ‘‌লোন ওয়েভার’‌। বলা হয়, তখন রাজ্যে রাজ্যে খরা, বন্যা ইত্যাদি নানা কারণে ক্ষতিগ্রস্ত চাষের ধার আর শোধ দিতে হবে না। এরই পরিণতি সরকারি ব্যাঙ্কগুলির সাড়ে ১০ লাখের ওপর ঋণ যা আর কোনওদিনই শোধ হবে না। গালভরা ইংরেজি নাম ‘‌নন পারফর্মিং অ্যাসেটস’‌। অর্থাৎ যে সম্পদের কাছ থেকে সুদ বা আসল, কোনওটাই আর পাওয়া যাবে না। আর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নীরব মোদি, মেহুল চোকসি বা ছন্দা কোছারদের ‘‌নীরব’‌ আত্মসাতের বিচিত্র লীলা। ৫০ বছরে চাষি, সাধারণ মানুষ, ছোট ব্যবসায়ীরা সরকারি ব্যাঙ্কের কী সাহায্য পেয়েছেন তা তাঁরাই জানেন, শুধু ব্যাঙ্কগুলি জানে তাদের আজ নাভিশ্বাস উঠেছে। আজ ব্যাঙ্কগুলির এমনই অবস্থা যে একজন স্টাফ অবসর নিলে, তার জায়গায় লোক নেওয়ার ক্ষমতা নেই। বহু ব্যাঙ্কই উঠে যাওয়ার মুখে। এ ব্যাপারে এসবিআই বা ইউবিআই— বৃহত্তম বা ক্ষুদ্রতম সরকারি ব্যাঙ্কে কোনও তফাত নেই। ‌‌‌

বহু বছর আগের এক ব্যাঙ্কের বিজ্ঞাপন তার 
বার্ষিক সুদ ও শাখা সম্পর্কিত।

আজ আবার পরিস্থিতি ১৯৬৯ এর আগে চলে যাবার উপক্রম হয়েছে, দেশের টাকা পলাশীর লুণ্ঠনের মাধ্যমে যেমন বিদেশে গিয়েছিল, ঠিক তেমনই এই সময় বড় বড় ব্যবসায়ীরা ঋণ নিয়ে, তা না মিটিয়ে বিদেশে পলায়ন করছে, তাতে এদেশের সম্পদের অবনমন হচ্ছে বলে আমার মনে হয় ।

Comments

  1. বেশ ভাল লিখেছিস ভাই।পড়ে ভাল লাগল।

    ReplyDelete
  2. Valo laglo....anek kichu janlam... dhanyabad..

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ আপনাকে, সময় নিয়ে পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

      Delete

Post a Comment

If you have any doubt, please let me know.

Popular posts from this blog

সহজ পাঠ ও রবীন্দ্রনাথের অবনির্মান - শুভজিৎ দে

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারত ভুক্তির উদ্যোগ ও বিতর্ক - শুভজিৎ দে

পতিতাবৃত্তির জন্ম ও বিবর্তন - শুভজিৎ দে