সম্রাট শাহজাহান কেমন শাসক ছিলেন ? - শুভজিৎ দে
সম্রাট শাহজাহান কি একজন জঘন্য ও বিকৃত যৌন চাহিদা সম্পন্ন শাসক ছিলেন ? মুঘল সাম্রাজ্যের শাসক হিসেবে উপস্থিত হয়ে, 1628 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1658 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারত উপমহাদেশ শাসন করেছেন। শাহ জাহান নামটি এসেছে ফার্সি ভাষা থেকে যার অর্থ "পৃথিবীর রাজা"। তিনি ছিলেন বাবর, হুমায়ুন, আকবর, এবং জাহাঙ্গীরের পরে পঞ্চম মুঘল সম্রাট। ভাসি শরমা নামক একজন লেখক তার বই "দ্যা নেকেট মোঘল" বইয়ে উল্লেখ করেন, সম্রাট বাবর থেকে আকবর পর্যন্ত, মোগল সাম্রাজ্য ইতিহাসে কিছুটা ধার্মিক এবং সুশাসনের জন্য সুপরিচিত কিন্তু মোঘল সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী সম্রাট শাহজাহান কিছুটা ভিন্ন।
সম্রাট শাহজাহান একজন জঘন্য ও বিকৃত যৌন চাহিদা সম্পন্ন শাসক ছিলেন । কিন্তু বাস্তবে তাকে মোগল সাম্রাজ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর শাসনামলকে স্বর্ণযুগ বলা হয় এবং তার সময়ে ভারতীয় সভ্যতা সবচেয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। দাদু আকবরের মতো তিনিও তার সাম্রাজ্য প্রসারিত করতে আগ্রহী ছিলেন। তাজমহলকে ‘ভালোবাসার’ প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। মুঘল সম্রাট শাহাজাহন তাঁর প্রিয় স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার নির্দশন হিসেবে তাজমহল তৈরি করেছিলেন। এই তাজমহল, সম্রাট শাহজাহানকে নিয়ে রয়েছে নানান তথ্য। তাজমহল তৈরির কাজ শুরু করা হয় 1632 সালে এবং তা শেষ হয় 1653 সালে। প্রায় 22 বছর সময় লেগেছিল তাজমহল তৈরি করতে। আর এই তাজমহল তৈরিতে খরচ হয়েছিল প্রায় এক মিলিয়ন ডলার! শুধু তাজমহল নয় সম্রাট শাহাজানের রয়েছে নানান অজানা তথ্য যা নিয়ে এখানে আলোচনা করা হচ্ছে। শাহজাহানের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি তার প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজ মহলের সমাধির উপর নির্মিত জগদ্বিখ্যাত ‘তাজমহল’।
1631 সালের জুন মাসে দাক্ষিণাত্যের বুরহানপুরে সম্রাটের 14তম সন্তানকে প্রসবকালে মমতাজ মৃত্যুবরণ করেন। 1611 খ্রিস্টাব্দে 14 বছরের ইরানী কিশোরী মমতাজের দৈহিক সৌন্দর্য্য শাহজাহানকে বিমোহিত করে ফেলেছিল। তাই তিনি এ কিশোরীর সাথে বাগদান সম্পন্ন করেন, কিন্তু তাকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নেননি। বরং মমতাজকে অন্ধকারে রেখে শাহজাহান আরেক নারীকে বিয়ে করেন, যা সে সময় স্বাভাবিক বিষয়। সম্রাট শাহজাহান ও মমতাজের প্রেম কাহিনী যতটা আলোচিত ততটাই আলোচিত যে, মমতাজ আসলে সম্রাট শাহজাহানের কততম স্ত্রী।মমতাজ ছিলেন সম্রাট শাহজাহানের 2য় স্ত্রী। কোথাও বলা হয়েছে মমতাজ শাহজাহানের 3য় স্ত্রী, কোথাও বলা আছে 4র্থ স্ত্রী। আসলে কততম স্ত্রী তা কোথাও সঠিকভাবে বলা নেই। শাহজাহানের বয়স তখন 20 বছর। একদিন আগ্রার বাজার দিয়ে যাওয়ার পথে হঠাৎ শাহজাহানের চোখ চলে যায় পরমা সুন্দরী এক মেয়ের দিকে। আরজুমান্দ বেগম নামের মেয়েটির বয়স 14। প্রথম দেখাতেই আরজুমান্দ বেগমকে ভালো লেগে যায় শাহজাহানের। পরবর্তীতে 1612 খ্রিস্টাব্দের 10 মে মমতাজের বিয়ে হয় যুবরাজ সম্রাট শাহজাহান সঙ্গে। আরজুমান্দ পরিবর্তন করে শাহজাহান তার নাম রাখেন মমতাজ মহল। কিন্তু বিয়েতে এ একবছর দেরি করার কারন হলো রাজনৈতিক কারণে পারস্যের রাজকন্যাকে বিয়ে করেন সম্রাট শাহজাহান। মাত্র 38 বছর বয়সে মমতাজ মহল মারা যান।
মনে হয় শাহজাহান নিজে মমতাজের মৃত্যুকে ডেকে এনেছিলেন, বোধহীনের মতো এক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। গর্ভবতী মমতাজকে সঙ্গে নিয়ে তিনি যুদ্ধযাত্রা করেন। দুর্গম রাস্তা দিয়ে হাতির পিঠে বসে দীর্ঘক্ষণ চলার দরুন সময়ের আগেই মমতাজের প্রসববেদনা শুরু হয়। দীর্ঘ ৩০ ঘন্টার সেই প্রসবব্যথা শেষে সন্তান জন্ম দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মমতাজ, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে। শাহজাহান তার ভুল বুঝতে পেরেছিলেন, মমতাজের মৃত্যুর পর আক্ষেপ, অনুতাপে সাতদিন সাতরাত শাহজাহান কিছু খান নি। ঘর থেকেও বার হন নি। স্ত্রী হারানোর শোকে মুহ্যমান শাহজাহান তাঁর প্রাণপ্রিয় স্ত্রীর স্মৃতির জন্য একবছর পরেই নির্মাণ শুরু করেন ভালবাসার এক অপরূপ নিদর্শন তাজমহল। কি গভীর প্রেম !!! সবই ঠিক ছিলো কিন্তু একটি প্রশ্ন রয়ে গেছে, এ প্রেম কতটা নির্ভেজাল ? শোনা যায় শাহজাহানের সাথে বিয়ে হওয়ার আগে মমতাজের বিয়ে হয়েছিল এবং সম্রাট শাহজাহান মমতাজের সেই স্বামীকে হত্যা করে তারপর মমতাজকে বিয়ে করেছিল। শুধু তাই নয় মমতাজের আগে সম্রাট শাহজাহানের আরও 1 জন স্ত্রী ছিলেন এবং মমতাজকে বিয়ে করার পরও সম্রাট শাহজাহান আরও তিনটি বিয়ে করেন। এমনকি মমতাজ মারা যাওয়ার পর শাহজাহান মমতাজের আপন ছোট বোনকে বিয়ে করেন। সম্রাট শাহজাহান নিজের মেয়ে জাহানারার প্রেমকে (প্রেমিককে) জঘন্য উপায়ে কবর দিয়েছিলেন। জাহানারা যার প্রেমে পড়েছিলেন শাহজাহান তাকে একেবারেই পছন্দ করেন নি। কিন্তু বিদূষী জাহানারা প্রেমে অটল ছিলেন। তাঁর প্রেমিক লুকিয়ে তাঁর সাথে দেখা করতে আসতো। শাহজাহান একদিন মেয়ের প্রেমিককে আটক করতে সক্ষম হন। তারপর মেয়ের চোখের সামনেই মেয়ের সেই প্রেমিককে তক্তা দিয়ে দেয়ালের সাথে আটকে পেরেক গেঁথে গেঁথে খুন করেন ‘প্রেমের’ তাজমহলের নির্মাতা শাহজাহান। যমুনার তীরে তখন তাজমহলের নির্মাণ কাজ চলছিল।
অনেক ঐতিহাসিক তাকে নিজের কন্যা জাহানারার সাথে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ করেন, যদিও অনেক ঐতিহাসিকগনের ভাষ্যমতে যেহেতু সম্রাটের অন্য স্ত্রী বেঁচে থাকা অবস্থায় স্ত্রীদেরকে ফার্স্টলেডির জায়গায় না দিয়ে তার বড় মেয়েকে ফার্স্ট লেডির জায়গায় সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং তার ছেলে মেয়ের দেখাশোনার ভার কন্যার উপর পড়ে তাই বড় কন্যার নামে এসব কথা রটানো হয়। ঐতিহাসিক ফ্রান্সিস ভার্নিয়ার লিখেছেন যে শাহজাহান এবং মমতাজ মহলের বড় কন্যা জাহানারা বেগম দেখতে অবিকল মায়ের মত ছিল। অনেক ইতিহাস গবেষকের মতে সম্রাট শাহজাহানের তাজমহল তৈরির পেছনে মমতাজের প্রতি প্রেমের কোন স্পর্শই ছিলোনা। শাহজাহান ছিলেন স্থাপত্য নির্মানে ব্যাপক আকুল, বলা যায় এটা তার নেশায় পরিণত হয়েছিলো। তার ধ্যানে মনে কামনা ছিলো তিনি এমন অপরূপ এক স্থাপত্য তৈরি করবেন যা তার নামকে অমর করে রাখবে শতাব্দীর পর শতাব্দী। মমতাজের মৃত্যু ছিলো তার এই স্বপ্ন পূরনের অজুহাত মাত্র, কোন প্রেম নয়।
তাজমহল নির্মানে শাহজাহান বিপুল অর্থ ব্যয় করেন যার ফলে রাজকোষ খালি হয়ে যায়, প্রজাদের কাছ থেকে কড়ায়গণ্ডায় কর আদায়ের ফলে সাম্রাজ্যে দুর্ভিক্ষ নেমে আসে। 1657 সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন শাহজাহান। আর সেসময় সিংহাসনে কে বসবে তা নিয়ে শুরু হয় ভাইয়ে-ভাইয়ে যুদ্ধ। যা ইতিহাসে সামুগড়ের যুদ্ধ নামে খ্যাত। সেই যুদ্ধে একদিকে ছিলেন শাহ জাহানের বড় ছেলে দারা শেক আর অপরদিকে ছিলেন শাহ জাহানের অপর দুই পুত্র, দুই ভাই আওরঙ্গজেব এবং মুর্দ বাক্স। সেই যুদ্ধ চলছিল প্রায় এক বছর। ছেলে আওরঙ্গজেবের হাতে বন্দী হন সম্রাট শাহজাহান। শাহজাহান মৃত্যুর পর তার কোনো রাষ্ট্রীয় কবর ছিল না। সম্রাট শাহজাহানের জন্য সমাধিক্ষেত্র বানাতে যে খরচ হতো তা খরচ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তার ছেলে আওরঙ্গজেব। তাই তো শাহ জাহানকে কবর দেওয়া হয়েছিল তার প্রিয় বেগম মমতাজ মহলের ঠিক পাশেই, তাজ মহলের এক গোপন কুঠুরিতে। তাজমহল তৈরিতে মানুষের পাশাপাশি হাতিও কাজ করেছিল। প্রায় এক হাজার হাতি তাজমহলের দেয়ালে কারুকাজ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
শাহজাহান
চিত্রঋণ - Wikipedia
সম্রাট শাহজাহান একজন জঘন্য ও বিকৃত যৌন চাহিদা সম্পন্ন শাসক ছিলেন । কিন্তু বাস্তবে তাকে মোগল সাম্রাজ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর শাসনামলকে স্বর্ণযুগ বলা হয় এবং তার সময়ে ভারতীয় সভ্যতা সবচেয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। দাদু আকবরের মতো তিনিও তার সাম্রাজ্য প্রসারিত করতে আগ্রহী ছিলেন। তাজমহলকে ‘ভালোবাসার’ প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। মুঘল সম্রাট শাহাজাহন তাঁর প্রিয় স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার নির্দশন হিসেবে তাজমহল তৈরি করেছিলেন। এই তাজমহল, সম্রাট শাহজাহানকে নিয়ে রয়েছে নানান তথ্য। তাজমহল তৈরির কাজ শুরু করা হয় 1632 সালে এবং তা শেষ হয় 1653 সালে। প্রায় 22 বছর সময় লেগেছিল তাজমহল তৈরি করতে। আর এই তাজমহল তৈরিতে খরচ হয়েছিল প্রায় এক মিলিয়ন ডলার! শুধু তাজমহল নয় সম্রাট শাহাজানের রয়েছে নানান অজানা তথ্য যা নিয়ে এখানে আলোচনা করা হচ্ছে। শাহজাহানের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি তার প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজ মহলের সমাধির উপর নির্মিত জগদ্বিখ্যাত ‘তাজমহল’।
1631 সালের জুন মাসে দাক্ষিণাত্যের বুরহানপুরে সম্রাটের 14তম সন্তানকে প্রসবকালে মমতাজ মৃত্যুবরণ করেন। 1611 খ্রিস্টাব্দে 14 বছরের ইরানী কিশোরী মমতাজের দৈহিক সৌন্দর্য্য শাহজাহানকে বিমোহিত করে ফেলেছিল। তাই তিনি এ কিশোরীর সাথে বাগদান সম্পন্ন করেন, কিন্তু তাকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নেননি। বরং মমতাজকে অন্ধকারে রেখে শাহজাহান আরেক নারীকে বিয়ে করেন, যা সে সময় স্বাভাবিক বিষয়। সম্রাট শাহজাহান ও মমতাজের প্রেম কাহিনী যতটা আলোচিত ততটাই আলোচিত যে, মমতাজ আসলে সম্রাট শাহজাহানের কততম স্ত্রী।মমতাজ ছিলেন সম্রাট শাহজাহানের 2য় স্ত্রী। কোথাও বলা হয়েছে মমতাজ শাহজাহানের 3য় স্ত্রী, কোথাও বলা আছে 4র্থ স্ত্রী। আসলে কততম স্ত্রী তা কোথাও সঠিকভাবে বলা নেই। শাহজাহানের বয়স তখন 20 বছর। একদিন আগ্রার বাজার দিয়ে যাওয়ার পথে হঠাৎ শাহজাহানের চোখ চলে যায় পরমা সুন্দরী এক মেয়ের দিকে। আরজুমান্দ বেগম নামের মেয়েটির বয়স 14। প্রথম দেখাতেই আরজুমান্দ বেগমকে ভালো লেগে যায় শাহজাহানের। পরবর্তীতে 1612 খ্রিস্টাব্দের 10 মে মমতাজের বিয়ে হয় যুবরাজ সম্রাট শাহজাহান সঙ্গে। আরজুমান্দ পরিবর্তন করে শাহজাহান তার নাম রাখেন মমতাজ মহল। কিন্তু বিয়েতে এ একবছর দেরি করার কারন হলো রাজনৈতিক কারণে পারস্যের রাজকন্যাকে বিয়ে করেন সম্রাট শাহজাহান। মাত্র 38 বছর বয়সে মমতাজ মহল মারা যান।
মনে হয় শাহজাহান নিজে মমতাজের মৃত্যুকে ডেকে এনেছিলেন, বোধহীনের মতো এক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। গর্ভবতী মমতাজকে সঙ্গে নিয়ে তিনি যুদ্ধযাত্রা করেন। দুর্গম রাস্তা দিয়ে হাতির পিঠে বসে দীর্ঘক্ষণ চলার দরুন সময়ের আগেই মমতাজের প্রসববেদনা শুরু হয়। দীর্ঘ ৩০ ঘন্টার সেই প্রসবব্যথা শেষে সন্তান জন্ম দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মমতাজ, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে। শাহজাহান তার ভুল বুঝতে পেরেছিলেন, মমতাজের মৃত্যুর পর আক্ষেপ, অনুতাপে সাতদিন সাতরাত শাহজাহান কিছু খান নি। ঘর থেকেও বার হন নি। স্ত্রী হারানোর শোকে মুহ্যমান শাহজাহান তাঁর প্রাণপ্রিয় স্ত্রীর স্মৃতির জন্য একবছর পরেই নির্মাণ শুরু করেন ভালবাসার এক অপরূপ নিদর্শন তাজমহল। কি গভীর প্রেম !!! সবই ঠিক ছিলো কিন্তু একটি প্রশ্ন রয়ে গেছে, এ প্রেম কতটা নির্ভেজাল ? শোনা যায় শাহজাহানের সাথে বিয়ে হওয়ার আগে মমতাজের বিয়ে হয়েছিল এবং সম্রাট শাহজাহান মমতাজের সেই স্বামীকে হত্যা করে তারপর মমতাজকে বিয়ে করেছিল। শুধু তাই নয় মমতাজের আগে সম্রাট শাহজাহানের আরও 1 জন স্ত্রী ছিলেন এবং মমতাজকে বিয়ে করার পরও সম্রাট শাহজাহান আরও তিনটি বিয়ে করেন। এমনকি মমতাজ মারা যাওয়ার পর শাহজাহান মমতাজের আপন ছোট বোনকে বিয়ে করেন। সম্রাট শাহজাহান নিজের মেয়ে জাহানারার প্রেমকে (প্রেমিককে) জঘন্য উপায়ে কবর দিয়েছিলেন। জাহানারা যার প্রেমে পড়েছিলেন শাহজাহান তাকে একেবারেই পছন্দ করেন নি। কিন্তু বিদূষী জাহানারা প্রেমে অটল ছিলেন। তাঁর প্রেমিক লুকিয়ে তাঁর সাথে দেখা করতে আসতো। শাহজাহান একদিন মেয়ের প্রেমিককে আটক করতে সক্ষম হন। তারপর মেয়ের চোখের সামনেই মেয়ের সেই প্রেমিককে তক্তা দিয়ে দেয়ালের সাথে আটকে পেরেক গেঁথে গেঁথে খুন করেন ‘প্রেমের’ তাজমহলের নির্মাতা শাহজাহান। যমুনার তীরে তখন তাজমহলের নির্মাণ কাজ চলছিল।
অনেক ঐতিহাসিক তাকে নিজের কন্যা জাহানারার সাথে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ করেন, যদিও অনেক ঐতিহাসিকগনের ভাষ্যমতে যেহেতু সম্রাটের অন্য স্ত্রী বেঁচে থাকা অবস্থায় স্ত্রীদেরকে ফার্স্টলেডির জায়গায় না দিয়ে তার বড় মেয়েকে ফার্স্ট লেডির জায়গায় সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং তার ছেলে মেয়ের দেখাশোনার ভার কন্যার উপর পড়ে তাই বড় কন্যার নামে এসব কথা রটানো হয়। ঐতিহাসিক ফ্রান্সিস ভার্নিয়ার লিখেছেন যে শাহজাহান এবং মমতাজ মহলের বড় কন্যা জাহানারা বেগম দেখতে অবিকল মায়ের মত ছিল। অনেক ইতিহাস গবেষকের মতে সম্রাট শাহজাহানের তাজমহল তৈরির পেছনে মমতাজের প্রতি প্রেমের কোন স্পর্শই ছিলোনা। শাহজাহান ছিলেন স্থাপত্য নির্মানে ব্যাপক আকুল, বলা যায় এটা তার নেশায় পরিণত হয়েছিলো। তার ধ্যানে মনে কামনা ছিলো তিনি এমন অপরূপ এক স্থাপত্য তৈরি করবেন যা তার নামকে অমর করে রাখবে শতাব্দীর পর শতাব্দী। মমতাজের মৃত্যু ছিলো তার এই স্বপ্ন পূরনের অজুহাত মাত্র, কোন প্রেম নয়।
তাজমহল নির্মানে শাহজাহান বিপুল অর্থ ব্যয় করেন যার ফলে রাজকোষ খালি হয়ে যায়, প্রজাদের কাছ থেকে কড়ায়গণ্ডায় কর আদায়ের ফলে সাম্রাজ্যে দুর্ভিক্ষ নেমে আসে। 1657 সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন শাহজাহান। আর সেসময় সিংহাসনে কে বসবে তা নিয়ে শুরু হয় ভাইয়ে-ভাইয়ে যুদ্ধ। যা ইতিহাসে সামুগড়ের যুদ্ধ নামে খ্যাত। সেই যুদ্ধে একদিকে ছিলেন শাহ জাহানের বড় ছেলে দারা শেক আর অপরদিকে ছিলেন শাহ জাহানের অপর দুই পুত্র, দুই ভাই আওরঙ্গজেব এবং মুর্দ বাক্স। সেই যুদ্ধ চলছিল প্রায় এক বছর। ছেলে আওরঙ্গজেবের হাতে বন্দী হন সম্রাট শাহজাহান। শাহজাহান মৃত্যুর পর তার কোনো রাষ্ট্রীয় কবর ছিল না। সম্রাট শাহজাহানের জন্য সমাধিক্ষেত্র বানাতে যে খরচ হতো তা খরচ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তার ছেলে আওরঙ্গজেব। তাই তো শাহ জাহানকে কবর দেওয়া হয়েছিল তার প্রিয় বেগম মমতাজ মহলের ঠিক পাশেই, তাজ মহলের এক গোপন কুঠুরিতে। তাজমহল তৈরিতে মানুষের পাশাপাশি হাতিও কাজ করেছিল। প্রায় এক হাজার হাতি তাজমহলের দেয়ালে কারুকাজ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
তথ্যসূত্র
1.
https://en.wikipedia.org/wiki/Shah_Jahan
2.
https://www.culturalindia.net/indian-history/shah-jahan.html
3.
https://www.wonders-of-the-world.net/Taj-Mahal/Shah-Jahan.php
4.
https://factslegend.org/60-interesting-taj-mahal-conspiracy-facts/
5.
https://en.wikipedia.org/wiki/Mumtaz_Mahal
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি লেখা উল্লিখিত তথ্যসূত্র গুলি থেকে তথ্য নিয়ে।
Khub valo hoyeche...
ReplyDeleteধন্যবাদ, আপনার শুভ নাম টি যদি বলেন ।
Deleteউপন্যাস লেখেন আপনি?
ReplyDeleteনা, এই রকম ইতিহাস মিশ্রিত কিছু প্রবন্ধ লিখি।
Delete