তিন কবির ধ্বংসস্তূপ স্মৃতি নিয়ে খিদিরপুর - শুভজিৎ দে

তিন কবির বাসভূমি একসময় ছিল কলকাতার খিদিরপুর অঞ্চলে, যাঁদের অন্যতম অবশ্যই মধুসূদন দত্ত, এবং বাকিরা হলেন রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। খিদিরপুর মোড়ের কাছে একটি কাল্পনিক ২০০ মিটারের ব্যাসার্ধ আঁকলে তার মধ্যে পড়বে তিন বিখ্যাত কবি— রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি। এরমধ্যে হেমচন্দ্র ও রঙ্গলালের বাড়ি কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। বাড়ির কোনও কোনও অংশ মাঝেমধ্যেই ভেঙে পড়ে। বর্তমান বাসিন্দাদের মেরামতির সামর্থ্য নেই। সঙ্গে রয়েছে প্রোমোটারের চাপ। অভিযোগ, পুরসভাও নিষ্ক্রিয়। মাইকেলের বাড়ির হেরিটেজ তকমা নিয়ে চলছে আইনি লড়াই। অভিযোগ, স্থানীয় এক প্রোমোটার চেষ্টা করছেন বাড়ি ভেঙে বহুতল তৈরির। বাড়িটির বিভিন্ন ঘর দোকান হিসাবে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। সবমিলিয়ে, কার্যত অন্ধকারে পড়ে রয়েছে খিদিরপুরের বিখ্যাত কবিতীর্থ।

মধুসূদন দত্ত রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং হেমচন্দ্র  বন্দ্যোপাধ্যায়

মধুসূদন দত্ত

অনুমান নির্ভর করে মধুসূদনের বিভিন্ন জীবনী থেকে জানা যায়, মধুসূদনের প্রপিতামহ রামকিশোর দত্ত খুলনার (সেকালের যশোর) বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্রেরা মাতামহের গ্রাম সাগরদাঁড়িতে বাস আরম্ভ করেন। পরবর্তীকালে কবির পিতা রাজনারায়ণ দত্ত যশোর ছেড়ে আসেন কলকাতায়। প্রথম সন্তান মধুসূদনের জন্ম ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি (আনুমানিক)। তিনি শৈশব সাগরদাঁড়িতেই কাটিয়েছিলেন, কারণ রাজনারায়ণ কলকাতায় ওকালতি করলেও সেকালের রীতি-রেওয়াজ অনুযায়ী পরিবারকে গ্রামের বাড়িতেই রেখেছিলেন।

মধুসূদন দত্ত

উকিল হিসেবে পসার লাভ করার পর ১৮০০ সালে খিদিরপুরে বড় রাস্তার ওপর একটি বাড়ি কেনেন রাজনারায়ণ, যেটি আজকের ২০বি, কার্ল মার্ক্স সরণীর বাড়িটি বলে মনে করা হয়। আবার এই বাড়িটিতেই বাল্যকালে বাস করতেন ভিক্টোরিয়ান যুগের প্রথম বাঙালি তথা ভারতীয় কবি কাশীপ্রসাদ ঘোষ (১৮০৯-৭৩), যিনি ইংরেজিতে কবিতা লিখতেন, Hindu Intelligence পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। আনুমানিক ১৮৩৩-৩৪ সালে মাতা জাহ্ণবী দেবী মধুসূদনকে নিয়ে একান্নবর্তী পরিবারের গন্ডী থেকে বেরিয়ে খিদিরপুরের এই বাড়িতে এসে বসবাস শুরু করেন। কারো কারো মতে মধুসূদনের পড়াশোনা শুরু হয়েছিল খিদিরপুরের কোনো এক ইংরেজি স্কুলে। খিদিরপুরের এই বাড়ি থেকেই মধুসূদনের হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি ও সাহিত্যজগতে প্রবেশ। ১৮৪৩ সালে খ্রীষ্টধর্ম গ্রহণের পর পরিবারের সঙ্গে বিচ্ছেদ এবং হিন্দু কলেজ থেকে বহিষ্কারের ফলে খিদিরপুরের বাড়ির সাথে মধুসূদনের বসবাসের সম্পর্ক শেষ হয়। পরবর্তীকালে মায়ের মৃত্যুর পর একবার মধুসূদন এ বাড়িতে এসেছিলেন।

মধুর গৃহত্যাগের পর একমাত্র পুত্রের ধর্মান্তরিত হওয়ার রাগে জাহ্ণবী দেবী বেঁচে থাকতেই রাজনারায়ণ একাধিক বিয়ে করেছিলেন, সেই আত্মীয়রা খিদিরপুরের বাড়িতে বসবাস করছিলেন। সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে রাজনারায়ণের মৃত্যুর খবর তাঁরা মাদ্রাজে মধুসূদনকে জানানও নি। বন্ধু গৌরদাস বসাকের চিঠিতে বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে মধু কলকাতা আসেন। এক চিঠিতে তিনি অনুমান করেছিলেন, খিদিরপুরের ঐ বাড়ির দাম চার হাজার টাকা হবে। এই বাড়ির মালিকানা লাভ করা তাঁর পক্ষে সহজ হয়নি। আত্মীয়রা মিথ্যে উইল করে মামলা মোকদ্দমায় দীর্ঘদিন তাঁকে বিব্রত রেখেছিলেন। ১৮৬১ সালে মামলায় কবি জয়লাভ করেন।

তবে অধিকার লাভের পরও এ বাড়িতে তিনি বাস করেন নি। বিলেত যাবার খরচ জোগাড়ের উদ্দেশ্যে সাত হাজার টাকায় পৈত্রিক বাড়ি বিক্রি করে দেন, আলিপুর আদালতের দলিল থেকে জানা যায়, ক্রেতা মধুসূদনের বাল্যবন্ধু ও প্রতিবেশী রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই হরিমোহন। নতুন মালিকের কাছে এই বাড়ির জন্য আন্তরিক দুঃখপ্রকাশ করলেও মধুসূদন বিলেত থেকে ফিরে এসে এ বাড়িতে থাকার কথা ভাবেন নি, নাহলে অত শস্তায় তিনি বাড়ি বিক্রি করতেন না। বাড়ির পিছনের এবং পাশের জমি বিক্রি করেন জেমস ফ্রেডরিক নামে ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্কের এক কর্মচারীকে, ১,৬০০ টাকায়।

পরবর্তীকালে মধুসূদন মাদ্রাজেও বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারেন নি। স্থানীয় খ্রিষ্টান ও ইংরেজদের সহায়তায় তিনি একটি স্কুলে ইংরেজি শিক্ষকের চাকরি পান। তবে বেতন যা পেতেন, তাতে তার ব্যয়সংকুলান হত না। এই সময় তাই তিনি ইংরেজি পত্রপত্রিকায় লিখতে শুরু করেন। মাদ্রাজ ক্রনিকল পত্রিকায় ছদ্মনামে তার কবিতা প্রকাশিত হতে থাকে। হিন্দু ক্রনিকল নামে একটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেছিলেন তিনি। কিন্তু অল্পকালের মধ্যেই অর্থাভাবে পত্রিকাটি বন্ধ করে দিতে হয়। পঁচিশ বছর বয়সে নিদারুণ দারিদ্র্যের মধ্যেই তিনি দ্য ক্যাপটিভ লেডি তার প্রথম কাব্যটির রচনা করেন। কবি ও দক্ষ ইংরেজি লেখক হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।

মধুসূদন দত্ত নাট্যকার হিসেবেই প্রথম বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে পদার্পণ করেন। রামনারায়ণ তর্করত্ন বিরচিত 'রত্নাবলী' নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করতে গিয়ে তিনি বাংলা নাট্যসাহিত্যে উপযুক্ত নাটকের অভাব বোধ করেন। এই অভাব পূরণের লক্ষ্য নিয়েই তিনি নাটক লেখায় আগ্রহী হয়েছিলেন। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রচনা করেন ‘শর্মিষ্ঠা' নাটক। এটিই প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রচনা করেন দুটি প্রহসন, যথা: 'একেই কি বলে সভ্যতা' এবং 'বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ' এবং পূর্ণাঙ্গ 'পদ্মাবতী' নাটক। পদ্মাবতী নাটকেই তিনি প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অমিত্রাক্ষরে লেখেন 'তিলোত্তমাসম্ভব' কাব্য। এরপর একে একে রচিত হয় 'মেঘনাদ বধ কাব্য' (১৮৬১) নামে মহাকাব্য, 'ব্রজাঙ্গনা' কাব্য (১৮৬১), 'কৃষ্ণকুমারী' নাটক (১৮৬১), 'বীরাঙ্গনা' কাব্য (১৮৬২), চতুর্দশপদী কবিতা (১৮৬৬)।

মধুসূদনের শেষ জীবন চরম দুঃখ ও দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়। আইন ব্যবসায়ে তিনি তেমন সাফল্য লাভ করতে পারেন নি। তাছাড়া অমিতব্যয়ী স্বভাবের জন্য তিনি ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়েন। ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জুন আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে কপর্দকহীন(অর্থাভাবে) অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মহাকবি জীবনের অন্তিম পর্যায়ে জন্মভূমিরপ্রতি তার সুগভীর ভালোবাসার চিহ্ন রেখে গেছেন অবিস্মরণীয় পংক্তিমালায়। তার সমাধিস্থলে নিচের কবিতাটি লেখা রয়েছে :

" দাঁড়াও পথিকবর, জন্ম যদি তব 
বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধি স্থলে 
(জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি 
বিরাম)মহীর পদে মহা নিদ্রাবৃত 
দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!
যশোরে সাগরদাঁড়ি কপোতাক্ষ-তীরে 
জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি 
রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী "

সরু গলি, আর্চবাড়ির ছাদবারান্দার উপরের অংশে কাঠের তৈরি আবডাল অবশিষ্ট মধুকবির বাড়িটির স্থাপত্যে । ঊনবিংশ শতকে ও বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে বাংলার নবজাগরণের সময়ে কলকাতা হয়ে ওঠে সংস্কৃতির এক পীঠস্থান। নাটক, সাহিত্য, সঙ্গীত, চিত্রকলা – প্রতিটি ক্ষেত্রেই বহু কৃতি মানুষ তাঁদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন এবং এক স্বতন্ত্র ঐতিহ্যের ধরণ তৈরি হয়। তেমনই স্থাপত্যেও তৈরি হয় মিশ্র সংস্কৃতি। খিদিরপুর অঞ্চল মেটিয়াবুরুজ সংলগ্ন, নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের স্মৃতি বিজড়িত মুঘল স্থাপত্যের ধারার তৈরি মঞ্জিলের সঙ্গে মিশে যায় ইংরেজদের ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলী। সব মিলিয়ে তৈরি হয় জমিদার বাড়ির এক গঠন বৈশিষ্ট। তাতে মিশেল ঘটে দুটি ধারার, এক, হিন্দু ট্র্যাবিয়েটেড স্টাইল অর্থাৎ কলাম-বিমের গাঁথনি, দুই, মুঘল স্টাইল-আর্কুলেটেড স্টাইল, অর্থাৎ আর্চ-গম্বুজের প্রাধান্য।

ইংরেজরা এবং বনেদী বাঙালীরা আবহাওয়ার সাথে সাযুজ্য রেখে লম্বা দালান, উঁচু ছাদযুক্ত চওড়া দেওয়ালের ঘরবাড়ি তৈরি করতেন। দরজা জানলায় খানিক হাওয়া চলাচল নিয়ন্ত্রণ, খানিক আব্রু রক্ষার জন্য খড়খড়ি। কাঠের সহজলভ্যতা ও উন্নত জলপথ পরিবহনের কারণে লম্বা গুঁড়ি থেকে চেরাই করা কাঠের ব্যবহার হতে লাগল বিম এবং কড়িবরগায়। ছাদ বা মেঝেতে এই কড়িবরগার ওপর পোড়া মাটির টালি পাশাপাশি বা আড়াআড়ি সাজানো হত। মর্টার বা বাঁধুনির মশলা হিসেবে আর প্লাস্টারে ব্যবহৃত হত চুন-সুড়কি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দামী উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হত শঙ্খের গুঁড়ো। সরু প্যাসেজখোলা উঠোনকাঠের মোটা বিম বৃষ্টিবহুল অঞ্চল বলে ছাদে এক ধরনের বিশেষ আস্তরণ দেওয়া হতো, যাকে বলে জলছাদ। চুন, সুরকি, গুড়, খড় এই সব মিশিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে তৈরি হতো পুরু একটা জল নিরোধক স্তর। সাধারণত দু-মহলা বাড়ি হতো, অন্দরমহল ও বাহিরমহল। মাঝে বড় উঠোন। সারিবদ্ধ ঘরের সামনে বারান্দা। রোদ আটকানোর জন্য বারান্দার উপরের অংশে কাঠের তৈরি আবডাল। থামগুলো তৈরি হতো গথিক স্থাপত্য অনুসারে। কখনো ডোরিক, আইওনিক বা করিন্থিয়ান কিছু নিয়ম মেনে, কখনো বা মিশ্র।

মধুসূদনের এই বাড়িটি তার তৎকালীন বৈশিষ্ট্যের অল্পই ধরে রাখতে পেরেছে। ক্রমাগত হাতবদল, বাসিন্দা বদল, নতুন ঘরের সংযোজনে স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলার মতো কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। বিবর্ণ দোতলা বাড়িটি আশপাশের বাড়ির মধ্যে মুখ লুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে খিদিরপুর মোড়ের ফ্যান্সি মার্কেটের দিকে। সরু প্যাসেজের ভেতর দিয়ে ঢুকলে ছোট্ট একটা খোলা উঠোন, ইলেকট্রিক তারের জঙ্গল আর পুরোনো কড়িবরগা। উঠোনের চারপাশে বেশ কিছু অফিস, ফ্যান্সি মার্কেটের দোকানের গুদামঘর আর দোতলায় কিছু ভাড়াটে এবং অফিস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাড়িটি।


সামনের অংশের নতুন সিঁড়িপ্রধান বসতবাড়ির অবিকৃত অংশসরু পথ, মাথায় আর্চ। বাইরের দিকটা মুখ লুকিয়েছে কাপড় রং-ধোলাই করার দোকানের তারে ঝুলিয়ে রাখা অজস্র রঙিন কাপড়ে। তার আড়াল থেকে নজরে আসে কাঠের মোটা বিম, যা আজও মজবুত। সামনের অংশের নতুন সিঁড়ি উঠেছে উঠোনের এক পাশ থেকে। উঠোন দেখে অনুমান করা যায়, তা আগে অনেক বড় ছিল। উঠোনের ডান দিকে প্রধান বসতবাড়ি। তার ভেতরে যাওয়ার সরু পথ, যার মাথায় একটা আর্চ। খড়খড়ি লাগানো দু-চারটি জানলা আজও তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। বাঁ দিকের দোতলায় এক সময়ের বারান্দা, যা আজ ঘেরা হয়ে গেছে, তবে রয়ে গেছে মোটা কয়েকটা থাম, গোলাকার, কারুকার্যহীন। ডোরিক থামের আদল বলা যেতে পারে।

বিংশ শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় তৎকালীন মালিকদের থেকে এই বাড়িটি কেনেন সালাউদ্দিন। হেরিটেজ আইন চালু হওয়ার পর পুরসভার হেরিটেজ কমিটি বাড়িটিকে গ্রেড টু হেরিটেজ মর্যাদা দেয়। যে তকমা অনুযায়ী ভাঙা তো দূরের কথা, নির্মাণে কোনো মৌলিক রদবদলও নিষিদ্ধ। সালাউদ্দিন আদালতের দ্বারস্থ হলে বাড়িটি হেরিটেজ তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা ও পুনর্মূল্যায়ণের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বহু বিশিষ্ট মানুষ নানা সময়ে বলেছেন, এই বাড়িটিতেই মধুকবি জীবনের বেশ কিছু সময় কাটিয়েছেন, নানা পুরোনো পত্রপত্রিকাতেও এ সংক্রান্ত বেশ কিছু লেখা প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে কমিশনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো তথ্যপ্রমাণ জমা পড়ে না। পুরকর্তারা জানান, পুর দপ্তরেও এ ধরণের কোনো নথি নেই।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, বাড়িটি হেরিটেজ ভবন ঘোষিত হয়েছে। বর্তমান মালিক এই ঘোষণার বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার চেষ্টায় আছেন। এই টানাপোড়েন নিয়ে বাড়িটি তাকিয়ে আছে কর্তৃপক্ষের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে। আর আমরা আত্মবিস্মৃত জাতির তকমা নিয়ে নিশ্চুপে দাঁড়িয়ে। ভবিষ্যৎ এখনো অজানা।


রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়

রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় (জন্ম ১৮২৭ - মৃত্যু ১৩ মে, ১৮৮৭) এক জন কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং প্রবন্ধকার। তাঁর পিতার নাম রামনারায়ণ। ‘পদ্মিনী উপাখ্যানে’র কবি রঙ্গলালের আদি বাড়ি ছিল হুগলির বাকুলিয়ায়। পিতার মৃত্যুর পর খিদিরপুরের বাসিন্দা, সেযুগের বিখ্যাত ধনী রামকমল মুখোপাধ্যায় তাঁকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। বড় হয়ে রঙ্গলাল ওড়িশায় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি করতেন। রামকমল তাঁকে নিজের বাড়ির কাছেই (বর্তমান ঠিকানা ২, রামকমল স্ট্রিট, কলকাতা-৭৩) ১২ কাঠা জমি উপহার দেন। সেখানে ১৮৮৫ সালে রঙ্গলাল এই বাড়িটি তৈরি করেন।

রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় 

রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় বাকুলিয়ার স্থানীয় পাঠশালা ও মিশনারি স্কুলে শিক্ষাশেষে হুগলি মহসিন কলেজে কিছু দিন পড়াশোনা করেন। ইংরেজি, সংস্কৃত এবং প্রাচীন ওড়িয়া কাব্য ও সাহিত্যে তাঁর জ্ঞান ছিল। কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সাহায্যে সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় তিনি সাহিত্য রচনা আরম্ভ করেন। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত এডুকেশন গেজেট পত্রিকার সহ সম্পাদক ছিলেন। সেই সময়ের এডুকেশন গেজেটে তাঁর গদ্য ও পদ্য, দু’ রকমের রচনাই প্রকাশিত হত।

১৮৫২ সালে প্রকাশিত 'মাসিক রস সাগর' ও ১৮৫৬ সালে প্রকাশিত সাপ্তাহিক 'বার্তাবহ' পত্রিকা দুটোতে তিনি সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ৬ মাস অধ্যাপনা করবার পর আয়কর অ্যাসেসর এবং ডেপুটি কালেক্টর হন। তার পর ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে সুনামের সাথে চাকরি করে ১১ এপ্রিল ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে অবসর নেন।

তিনি মূলত স্বদেশপ্রেমিক কবিরূপে বিখ্যাত। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মিনী উপাখ্যান, কর্মদেবী এবং শূরসুন্দরী। টডের অ্যানাল্‌স্‌ অফ রাজস্থান থেকে কাহিনীর অংশ নিয়ে তিনি পদ্মিনী উপাখ্যান রচনা করেন। তিনি ১৮৭২ সালে কালিদাসের সংস্কৃত কুমারসম্ভব ও ঋতুসংহারের পদ্যানুবাদ করেছিলেন। একই বছরে প্রকাশিত নীতিকুসুমাঞ্জলি তাঁর অপর পুস্তিকা, যা সংস্কৃত নীতি ও তত্ত্বমূলক কবিতার অনুবাদ। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে রচিত কাঞ্চী কাবেরী কাব্যগ্রন্থ প্রাচীন ওড়িয়া কাব্যের অনুসরণে লিখিত। রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় 'উৎকল দর্পণ' নামে ওড়িয়া ভাষায়ও একটি সংবাদপত্র প্রকাশ করেন। উৎকল দর্পণ নামে সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 'উৎকল দর্পণ'-এ তিনি ওড়িশার পুরাতত্ব ও ওড়িয়া ভাষা সম্পর্কে অনেক প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তাঁর কলিকাতা কল্পলতা গ্রন্থটিই সম্ভবত বাংলা ভাষায় প্রথম কলকাতার পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস। ইংরেজি প্রভাবিত বাংলা সাহিত্যের তিনি অন্যতম পথপ্রদর্শক।

১৮৮২ সালে রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন কবি মুকুন্দরামের ‘কবিকঙ্কন চণ্ডী’। বাংলা সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে বিচরণকারী এই কবির উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হল --- পদ্মিনী উপাখ্যান (১৮৫৮) কর্মদেবী (১৮৬২) শূরসুন্দরী (১৮৬৮) কাঞ্চীকাবেরী (১৮৭৯) ভেক – মূষিকের যুদ্ধ (১৮৫৮) হোমারের কাব্যের অনুবাদ।

রঙ্গলালের বংশধর ইন্দ্রলাল বন্দ্যোপাধ্যায় এখন ওই বাড়ির একাংশে থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘রঙ্গলাল তাঁর দুই ছেলে জওহরলাল এবং পান্নালালের মধ্যে বাড়ি ভাগ করে দেন। পরে শরিকের সংখ্যা বেড়েছে। বাড়ি আরও কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়েছে। কয়েক বছর আগে এক শরিকের থেকে জলের দামে বাড়ির এক অংশ স্থানীয় এক প্রোমোটার কিনে নেন। এখন তিনি আমাকে আমার অংশটিও বিক্রি করতে চাপ দিচ্ছেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বাড়ির অবস্থা তো দেখছেন! একটি অংশ কার্যত বাসযোগ্য নয়। ভেঙে পড়ছে। এত বিরাট বাড়ি মেরামতির সামর্থ্য আমাদের নেই। আইনি নানাবিধ জটিলতায় পুরসভাও কিছু করতে পারছে না। আমি চাইনা রঙ্গলালের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি বেহাত হোক। জানি না শেষ পর্যন্ত কী হবে!’’

হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

হেমচন্দ্র একাধারে কবি ও আইনজীবী। ১৮৩৮ সালের ১৭ এপ্রিল হুগলির গুলিটা গ্রামে মাতামহের বাড়িতে তাঁর জন্ম। পিতার  আর্থিক দৈন্যের কারণে মাতামহের সহায়তায় তিনি কলকাতার খিদিরপুর বাঙ্গালা স্কুলে পড়ালেখা শুরু করেন। কিন্তু মাতামহের মৃত্যুর পর কিছুদিন তাঁর পড়াশোনা বন্ধ থাকে। পরে সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারীর প্রচেষ্টায় তিনি ইংরেজি শেখেন এবং ১৮৫৩ সালে হিন্দু স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। এখান থেকে জুনিয়র ও সিনিয়র উভয় পরীক্ষায় তিনি বৃত্তি লাভ করেন। বৃত্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে অর্থাভাবে তাঁর লেখাপড়া পুনরায় বন্ধ হয়ে যায় এবং কিছুদিন তিনি চাকরি করতে বাধ্য হন। ১৮৫৯ সালে  প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে তিনি বিএ পাস করেন। তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ব্যাচের গ্রাজুয়েটদের অন্যতম। ১৮৬১ সালে তিনি এলএল এবং ১৮৬৬ সালে বিএল ডিগ্রি লাভ করেন। গ্রাজুয়েট হওয়ার আগে মিলিটারি অডিটর-জেনারেল অফিসে কেরানি পদে চাকরির মধ্য দিয়ে হেমচন্দ্রের কর্মজীবন শুরু হয়। পরে তিনি কিছুদিন ক্যালকাটা ট্রেনিং অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন এবং ১৮৬২ সালে মুন্সেফ হন। এ পদে কয়েকমাস চাকরি করার পর পুনরায় তিনি ওকালতিতে ফিরে আসেন এবং ১৮৯০ সালে সরকারি উকিল নিযুক্ত হন। কর্মজীবনে হেমচন্দ্র আইনজীবী হিসেবেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেন।

হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

হেমচন্দ্রের বাড়ির অবস্থা এখন আরও শোচনীয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, কয়েক দশক আগে তাঁর শেষ বংশধর মারা গিয়েছেন। বিরাট বাড়ির অধিকাংশই ধ্বংসস্তুপ। প্রায়শই কোনও না কোনও অংশ ভেঙে পড়ে। সূত্রের খবর, বছর কুড়ি আগে বাড়ির হাতবদল হয়েছে। বর্তমান মালিক বাড়ির মেরামতি করেন না।

অভিযোগ, এই বাড়ির উপর নজর রয়েছে স্থানীয় এক প্রোমোটারের। হেমচন্দ্রের বাড়িতে আগে বেশ কিছু পরিবার ভাড়া থাকত। বাড়ির অবস্থা দেখে তাঁদের অধিকাংশই অন্যত্র চলে গিয়েছেন। এখন যে দুই ঘর ভাড়াটিয়া রয়েছেন, তাঁদের একজন  জনৈক ব্যক্তি (নাম জানাতে অনিচ্ছুক) বলেন, ‘‘আমাদের পরিবার প্রায় ৮০ বছর ধরে এখানে রয়েছে। বাড়ির অবস্থা কহতব্য নয়। খোলা ছাদের নীচে রান্নাঘর। সরকার, পুরসভা বহুবার দেখে গিয়েছে। কেউ উদ্যোগী হয়নি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘হেমচন্দ্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, প্রোমোটারের হাতে বাড়ি গেলে ভালই হবে। সামনের থামগুলি অটুট রেখে বাকি অংশটায় কাজ হোক।’’

হেমচন্দ্রের প্রধান পরিচয় একজন দেশপ্রেমিক কবি হিসেবে। হিন্দু জাতীয়তাবাদের আদর্শে তিনি তাঁর রচনায় দেশপ্রেমকে তুলে ধরেন। ১৮৭২ সালের জুলাই মাসে এডুকেশন গেজেট-এ তাঁর ‘ভারতসঙ্গীত’ কবিতাটি প্রকাশিত হলে ব্রিটিশ সরকার তাঁর প্রতি রুষ্ট হন, এমনকি পত্রিকার সম্পাদক ভূদেব মুখোপাধ্যায়কেও এজন্য জবাবদিহি করতে হয়। এ কবিতায় তিনি স্পষ্ট ভাষায় পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ভারতবাসীদের আহবান জানান। কবিতাটি দীর্ঘকাল বঙ্গের জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদায় আসীন ছিল। তাঁর ‘ভারতবিলাপ’, ‘কালচক্র’, ‘রিপন উৎসব’, ‘ভারতের নিদ্রাভঙ্গ’ প্রভৃতি রচনায়ও স্বদেশপ্রেমের কথা ব্যক্ত হয়েছে।

হেমচন্দ্রের রচনায় নারীমুক্তির বিষয়টিও ব্যক্ত হয়েছে। লেখালেখির মাধ্যমে তিনি তৎকালে বিধবাদের প্রতি সমাজের নির্দয় নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হেনেছিলেন। এ বিষয়ে রচিত তাঁর ‘কুলীন মহিলা বিলাপ’ কবিতাটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বহুবিবাহরোধ আন্দোলনের সহায়ক হয়েছিল। তাঁর রচনায় বাংলাদেশ হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মিলিত বাসভূমিরূপে চিত্রিত হয়েছে। তিনি সাহিত্যের মধ্য দিয়ে অখন্ড ভারতের স্বাধীন ও সংহতিপূর্ণ রূপ কামনা করেছিলেন।

হেমচন্দ্রের প্রথম কাব্যগ্রন্থ চিন্তাতরঙ্গিণী ১৮৬১ সালে প্রকাশিত হয়। কিন্তু তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা হচ্ছে বৃত্রসংহার (২ খন্ড, ১৮৭৫-৭) মহাকাব্য। মহাভারতের কাহিনী অবলম্বনে রচিত এ কাব্যে মূলত সমসাময়িক সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের জয় ঘোষিত হয়েছে। একসময় বাংলাদেশে কাব্যটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল এবং কবি হিসেবে হেমচন্দ্রের যা খ্যাতি তা মূলত এ কাব্যের জন্যই। হেমচন্দ্রের অপর বিশিষ্ট কাব্য বীরবাহু কাব্য (১৮৬৪) দেশপ্রেম ও গোত্রপ্রীতির পরিচয় সম্বলিত একখানা আখ্যানধর্মী রচনা। তাঁর অপরাপর উল্লেখযোগ্য রচনা হলো: আশাকানন (১৮৭৬), ছায়াময়ী (১৮৮০), দশমহাবিদ্যা (১৮৮২), চিত্তবিকাশ (১৮৯৮) ইত্যাদি।

হেমচন্দ্রের কবিপ্রতিভার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন কবিতাবলী (২ খন্ড, ১৮৭০-৮০)। এটি তাঁর খন্ডকবিতার সংকলন। ‘জীবনসঙ্গীত’, ‘গঙ্গার উৎপত্তি’, ‘পদ্মের মৃণাল’, ‘ভারতকাহিনী’, ‘অশোকতরু’ প্রভৃতি খন্ডকবিতা তাঁর অপূর্ব সৃষ্টি। এগুলির ভাব-ভাষা-ছন্দ শাশ্বত আবেদনময়। এসব খন্ডকবিতায় ইংরেজি কাব্যের ছায়া থাকলেও মাধুর্য এবং রসসৃষ্টির দিক থেকে তা বাংলা ভাষার নিজস্ব সম্পদে পরিণত হয়েছে। হেমচন্দ্র বেশ কিছু ইংরেজি গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ করেন। সেসবের মধ্যে শেক্সপীয়রের টেম্পেস্ট (নলিনী বসন্ত, ১৮৭০) ও রোমিও-জুলিয়েট (১৮৯৫) উল্লেখযোগ্য। এছাড়া তিনি বেশ কিছু ইংরেজি কবিতারও বঙ্গানুবাদ করেন।

হেমচন্দ্রের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল, তিনি যেমন গুরুগম্ভীর আখ্যায়িকা কাব্য রচনা করেছিলেন তেমনি আবার সহজ সুরের খন্ডকবিতা, ওজস্বিনী স্বদেশসঙ্গীত এবং লঘু সাময়িকী কবিতাও রচনা করেছিলেন। শিল্প ও সাহিত্যসহ জ্ঞানের অন্যান্য অনেক বিষয়ে অভিজ্ঞ একজন গুণী ব্যক্তি হিসেবে সমকালে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর শেষজীবন ছিল খুবই বেদনাময়। তিনি একসময় অন্ধ হয়ে যান এবং অর্থনৈতিক নানা প্রকার অসুবিধার মধ্য দিয়ে তাঁর জীবন অতিবাহিত হয়। ১৯০৩ সালের ২৪ মে  খিদিরপুরে নিঃসহায় ও নিঃস্ব অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

কলকাতা পুরসভার বক্তব্য ‘‘এই বাড়িগুলি নিয়ে নানাবিধ আইনি জটিলতা রয়েছে। কিন্তু আমরা কোনওমতেই প্রোমোটিং করতে দেব না। এই কবিরা আমাদের কলকাতা শহরের গর্ব। তাঁদের বাড়ি রক্ষা করতেই হবে। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছি।

তথ্যসূত্র

Wikipedia

Comments

Popular posts from this blog

সহজ পাঠ ও রবীন্দ্রনাথের অবনির্মান - শুভজিৎ দে

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারত ভুক্তির উদ্যোগ ও বিতর্ক - শুভজিৎ দে

পতিতাবৃত্তির জন্ম ও বিবর্তন - শুভজিৎ দে