আওরঙ্গজেবকে যেমন চিনলাম ও চামকর যুদ্ধ - শুভজিৎ দে

মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন - তিনি আলমগীর আওরঙ্গজেব।

আবু মুজাফ্‌ফর মহিউদ্দিন মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব আলমগীর

খুব সম্প্রতি আওরঙ্গজেবকে নিয়ে গবেষণা অনেক দূর এগিয়েছে । আমি যাঁর বই পড়ে এই লেখাটি লিখছি তার ( অড্রে ট্রুস্কে ) সাথে অবশ্যই পড়তে হবে M. Athar Ali, Satish Chandra, S.M. Azizuddin Husain, Irfan Habib, Harbans Mukhia, এবং Jhon Richards এর কাজ । বহু গবেষক আওরঙ্গজেবের সময়ের নানান বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন যেমন, স্থাপত্য বিষয়ে Catherine Asher, মন্দির ভাঙ্গা নিয়ে Richard M. Eaton, শিখ সম্পর্ক নিয়ে Louis Fenech, শিরহিন্দিদের নিষিদ্ধ করা নিয়ে Yohanan Friedmann, দাক্ষিণাত্য অভিযানের যুদ্ধ বিষয়ে Jos Gommans, মুঘল-মারাঠা দ্বন্দ্ব নিয়ে Stewart Gordon, হিন্দু সন্যাসীদের নিয়ে B.N. Goswamy, হিন্দু সন্যাসী আর শিখদের নিয়ে J.S. Grewal, ফতাওয়াইআলমগিরি নিয়ে Alan Guenther, রাজপুত দের সাথে সম্পর্ক নিয়ে Robert Hallissey, জৈনদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে Shalin Jain, কেশবদেব মন্দির বিতর্কে Heidi Pauwels, গানবাজনা বিষয়ে katherinr Butler Scholfield ( nee Brown) ইত্যাদি বিষয়ে লেখকদের এই সব লেখা পাঠক মহলে সমাদৃত হয়েছে ।

সাধারণ মানুষের মধ্যে আওরঙ্গজেবের ইমেজ হলো একজন ধর্মীয় গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবে, যিনি হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর যিনি নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে এমনকি নিজের বড় ভাই দারা শিকোহ'কে পর্যন্ত রেহাই দেননি। আর তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি বৃদ্ধ পিতাকে আগ্রার একটি দুর্গে তাঁর জীবনের শেষ সাড়ে সাত বছর বন্দী করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি পাকিস্তানী নাট্যকার শাহীদ নাদীম লিখেছেন যে ভারত ভাগের বীজ সত্যিকার অর্থে সেদিনই বপন করা হয়েছিল, যেদিন আওরঙ্গজেব তাঁর ভাই দারাকে পরাজিত করেছিলেন।

জওহরলাল নেহরুও ১৯৪৬ সালের প্রকাশিত তাঁর বই 'ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া'তে আওরঙ্গজেবকে একজন গোঁড়া ব্যক্তি হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। তবে মার্কিন ইতিহাসবিদ অড্রে ট্রাশকা তাঁর বই 'আওরঙ্গজেব - দ্যা ম্যান অ্যান্ড দ্যা মিথ' বইয়ে লিখেছেন যে আওরঙ্গজেব হিন্দুদের ঘৃণা করতেন আর তাই মন্দির ধ্বংস করেছেন বলে যে দাবী করা হয়, তা ভুল। ইউনিভার্সিটি অব নিউয়ার্কে দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস পড়ান ট্রাশকা। তিনি লিখেছেন, ব্রিটিশদের শাসনের সময় তাদের 'ডিভাইড অ্যান্ড রুল' অর্থাৎ জনগোষ্ঠীকে 'বিভাজন আর শাসন করো' নীতির আওতায় ভারতে হিন্দু বর্ণবাদী ধারণা উস্কে দেয়ার কাজটি করেছিলেন যেসব ইতিহাসবিদরা, তারাই মূলত: আওরঙ্গজেবের এমন একটি ইমেজ তৈরির জন্য দায়ী। তিনি তাঁর বইয়ে আরও বলেছেন যে আওরঙ্গজেবের শাসন যদি ২০ বছর কম হতো, তাহলে হয়তো আধুনিক ইতিহাসবিদরা তাকে অন্যভাবে দেখতেন।

ভারতে ৪৯ বছরের শাসন

দেড় কোটি মানুষকে ৪৯ বছর ধরে শাসন করেছিলেন আওরঙ্গজেব। তাঁর রাজত্বকালে মুঘল সাম্রাজ্য প্রথমবারের মতো এতটা বিস্তৃত হয়েছিল যে প্রায় পুরো উপমহাদেশ তাঁর শাসনের করায়ত্ত হয়েছিল। ট্রাশকা লিখেছেন যে আওরঙ্গজেবকে দাফন করা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের খুলদাবাদে একটি কাঁচা কবরে। ঠিক এর বিপরীতে, হুমায়ূনের জন্য দিল্লিতে একটি লাল পাথরের মকবরা তৈরি করা হয়েছিল, আর সম্রাট শাহ জাহানকে দাফন করা হয়েছিল জাঁকজমকপূর্ণ তাজমহলে। ট্রাশকার মতে, "এটা একটা ভুল ধারণা যে আওরঙ্গজেব হাজার হাজার হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেছিলেন। ডজনখানের মতো মন্দির তাঁর সরাসরি আদেশে ভাঙ্গা হয়েছিল। তাঁর সময়ে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি যাকে হিন্দুদের গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে। সত্যিকার অর্থে আওরঙ্গজেব হিন্দুদেরকে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছিলেন।"

আওরঙ্গজেব ও সাহিত্য

আওরঙ্গজেবের জন্ম হয়েছিল ১৬১৮ সালের ৩রা নভেম্বর। তখন সম্রাট ছিলেন তাঁর পিতামহ জাহাঙ্গীর । তিনি ছিলেন শাহ জাহানের তৃতীয় পুত্র। শাহ জাহান ছিলেন চার ছেলের পিতা, আর এদের সবার মা ছিলেন মমতাজ মহল। ইসলাম ধর্মীয় সাহিত্য চর্চার বাইরে তিনি তুর্কি সাহিত্য এবং বিভিন্ন পাণ্ডুলিপি পড়েছেন। অন্যসব মুঘল সম্রাটদের মতোই, আওরঙ্গজেব ছোটবেলা থেকেই হিন্দিতে অনর্গল কথা বলতে পারতেন। একেবারে তরুণ বয়স থেকে শাহ জাহানের চার ছেলেই মুঘল সাম্রাজ্যের সিংহাসনে বসার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। মুঘলরা মধ্য এশিয়ার ওই প্রথায় বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক ক্ষমতা পাওয়ার ক্ষেত্রে সব ভাইদেরই সমান অধিকার রয়েছে।

শাহ জাহান চেয়েছিলেন বড় ছেলে দারা শিকোহ তাঁর উত্তরাধিকারী হোক। কিন্তু আওরঙ্গজেব বিশ্বাস করতেন মুঘল সালতানাতে তাঁর চেয়ে যোগ্য আর কেউ নেই। অড্রে ট্রাশকা দারা শিকোহর বিয়ের পরের একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন। শাহ জাহান বিয়ের উৎসব উদযাপন করার অংশ হিসেবে সুধাকর ও সুরাত-সুন্দর নামের দুই হাতির মধ্যে লড়াইয়ের আয়োজন করেন। মুঘলরা এ ধরণের বিনোদন খুব পছন্দ করতো। পাশেই আওরঙ্গজেব একটি ঘোড়ায় বসেছিলেন। হঠাৎ সুধাকর ঘোড়াটির দিকে ছুটে যায়। তখন আওরঙ্গজেব হাতিটির কপালে একটি বর্শার আঘাত হানেন, যা সুধাকরকে আরও ক্রুদ্ধ করে তোলে।

দারা শিকোহর সঙ্গে শত্রুতা

হাতিটি এত জোরে ঘোড়াটিকে ধাক্কা দেয় যে আওরঙ্গজেব মাটিতে পড়ে যান। ঘটনাটি যারা দেখছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন তাঁর ভাই শুজা ও রাজা জয় সিংহ। তাঁরা আওরঙ্গজেবকে বাঁচাতে চেষ্টা করেন। তবে এরই মধ্যে অন্য হাতিটি সুধাকরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় এবং তাকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনে। শাহ জাহানের দরবারের রাজকবি আবু তালিব তাঁর কবিতায় ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন। আরেকজন ইতিহাসবিদ, আকিল খাসিন রাজি, তাঁর বই 'ওয়াকিতাত-ই-আলমগীরী'তে লিখেছেন যে পুরো ঘটনার সময় দারা শিকোহ পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু আওরঙ্গজেবকে বাঁচাতে কোন চেষ্টাই করেননি।
শাহ জাহানের দরবারের ইতিহাসবিদরাও এই ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন এবং ১৬১০ সালের একটি ঘটনার সঙ্গে এর তুলনা করেছেন - যখন শাহ জাহান তাঁর পিতা জাহাঙ্গীরের সামনে একটি সাংঘাতিক বাঘকে বশ মানিয়েছিলেন। আরেকজন ইতিহাসবিদ ক্যাথরিন ব্রাউন 'আওরঙ্গজেব কি সঙ্গীতের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন?' - শীর্ষক একটি নিবন্ধ লিখেছেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে আওরঙ্গজেব একবার তাঁর চাচীর সঙ্গে দেখা করতে বুরহানপুর গিয়েছিলেন। আর সেখানেই তিনি তাঁর ভালোবাসার মানুষ হিরাবাঈ জাইনাবাদীকে খুঁজে পেয়েছিলেন।

হিরাবাঈ ছিলেন একজন গায়িকা ও নৃত্যশিল্পী।

আওরঙ্গজেব তাকে প্রথম দেখেছিলেন একটি গাছ থেকে আম পারার সময়ে। তাকে দেখে আওরঙ্গজেব এতটাই দিওয়ানা হন যে তিনি মদ না খাওয়ার প্রতিজ্ঞা ভাঙ্গতেও সে মূহুর্তে রাজী ছিলেন। তবে আওরঙ্গজেব যখন মদের গ্লাসে চুমুক দিতে যাচ্ছেন, ঠিক ওই সময়ে হিরাবাঈ তাকে থামান। তাদের এই প্রেম কাহিনী মাত্র এক বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় - হীরাবাঈয়ের মৃত্যুর সঙ্গেই। তাকে আওরঙ্গাবাদে দাফন করা হয়।

দারা শিকোহ যদি সম্রাট হতেন

ভারতীয় ইতিহাসের একটি বড় প্রশ্ন হলো কট্টর আওরঙ্গজেবের বদলে যদি উদারপন্থী দারা শিকোহ ৬ষ্ঠ মুঘল সম্রাট হতেন, তাহলে কী হতো? অড্রে ট্রাশকার উত্তর: "বাস্তবতা হলো মুঘল সাম্রাজ্য চালানো কিংবা জয় করার ক্ষমতা দারা শিকোহ'র ছিলো না। ভারতের সিংহাসন নিয়ে চার ভাইয়ের মধ্যে যখন প্রতিযোগিতা চলছিলো, তখন অসুস্থ্য সম্রাটের সমর্থন ছিলো দারার প্রতি। কিন্তু আওরঙ্গজেবের মতো রাজনৈতিক প্রজ্ঞা তাঁর ছিলো না।" ১৬৫৮ সালে আওরঙ্গজেব ও তাঁর ছোট ভাই মুরাদ আগ্রা দুর্গে অবরোধ সৃষ্টি করেন। তাদের পিতা শাহ জাহান সেই সময়ে দুর্গের ভেতরেই ছিলেন। তাঁরা দুর্গে পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেন। কয়েক দিনের মধ্যে শাহ জাহান দুর্গের দ্বার খুলে বেরিয়ে আসেন - দুই ছেলের হাতে তুলে দেন তাঁর সম্পদ, অস্ত্র-শস্ত্র এবং নিজেকেও । নিজের মেয়েকে সালিশ মেনে শাহ জাহান তাঁর সাম্রাজ্যকে পাঁচ ভাগ করার প্রস্তাব দেন - তিনি চেয়েছিলেন চার ছেলে পাবেন সাম্রাজ্যের একেকটি ভাগ, আর পঞ্চম ভাগটি পাবেন আওরঙ্গজেবের বড় ছেলে মোহাম্মদ সুলতান। কিন্তু আওরঙ্গজেব ওই প্রস্তাবে রাজী হননি। দারা শিকোহ ধরা পরেন ১৬৫৯ সালে, নিজেরই এক বিশ্বস্ত সহযোগী মালিক জীবনের হাতে। দিল্লি নিয়ে আসার পরে দারা শিকোহ আর তাঁর ১৪ বছরের ছেলে সিফির শিকোহকে আওরঙ্গজেব সেপ্টেম্বরের প্রচণ্ড গরমে চর্মরোগগ্রস্ত একটি হাতির পিঠে বসিয়ে গোটা দিল্লি ঘুরিয়েছিলেন। একজন সৈন্য খোলা তরবারি নিয়ে তাঁর পাশে ছিলেন - কারণ তিনি যদি পালাতে চেষ্টা করেন, তাহলে তাঁর শিরশ্ছেদ করা হবে। ইতালির ইতিহাসবিদ নিক্কোলাও মানুচ্চি ওই সময়ে ভারতে এসেছিলেন। তিনি তাঁর 'স্তোরিয়া দো মগর' বা মুঘল ভারত বইয়ে লিখেছেন, "যেদিন দারা মারা গেলেন, সেদিন আওরঙ্গজেব তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে যদি নিয়তি উল্টোটা হতো, তাহলে ঠিক কী ঘটতো? দারার উত্তর ছিল যে তিনি আওরঙ্গজেবের শরীরকে চার ভাগ করে একেকটি ভাগ দিল্লির প্রধান চার সিংহ-দরজায় ঝুলিয়ে রাখতেন।" আওরঙ্গজেব তাঁর ভাইকে দাফন করেন হুমায়ূনের মাজারের পাশে। পরে তিনি তার মেয়ে জাব্বাতুন্নিসাকে বিয়ে দেন দারা শিকোহ'র ছেলে সিফির শিকোহর সঙ্গে।

পিতা শাহ জাহানকে আওরঙ্গজেব আগ্রা দুর্গে বন্দী রেখেছিলেন সাড়ে সাত বছর, যেখানে তাকে প্রায়ই সঙ্গ দিতেন তাঁর বড় কন্যা জাহানারা। তবে এই ঘটনায় তাকে সবচেয়ে বেশী বিপদে পড়তে হয়েছিল যখন মক্কার শাসক তাকে ভারতের শাসক হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। বছরের পর বছর তাঁর পাঠানো উপঢৌকন তিনি গ্রহণ করতে রাজী হননি। আওরঙ্গজেব ১৬৭৯ সালে দিল্লি ছেড়ে দক্ষিণ ভারতে চলে যান। মৃত্যুর আগে তিনি আর উত্তর ভারতে ফিরে আসেননি। আম ছিল তাঁর ভীষন প্রিয় । হাজার হাজার লোক-লস্কর, সেপাই, কর্মচারী সঙ্গে নিয়ে তিনি দাক্ষিণাত্যে গিয়েছিলেন। শাহজাদা আকবর বাদে বাকি সব ছেলেদের আর গোটা হারেমটাই তিনি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর অবর্তমানে দিল্লিকে একটি ভূতুরে নগরীর মতো মনে হতে লাগলো। লাল কিল্লায় এতো ধুলো জমে গেল যে বিদেশী অতিথিদের আর এটা দেখানো হতো না। আওরঙ্গজেব তাঁর পুস্তক 'রুকাত-ই-আলমগীরী'তে লিখেছিলেন যে দক্ষিণ ভারতে যেটির অভাব তিনি সবচেয়ে বেশী অনুভব করতেন, তা হলো আম। জামশেদ বিলিমোরিয়া এই বইটি অনুবাদ করেছেন।

বাবর থেকে শুরু করে সব মুঘল সম্রাটই আম খুব পছন্দ করতেন। ট্রাশকা লিখেছেন আওরঙ্গজেব নিয়মিতই তার সভাসদদের নির্দেশ দিতেন যে তাঁর জন্য যে উত্তর ভারতের আম পাঠানো হয়। কয়েকটা আমের হিন্দি নামকরণও করেছিলেন তিনি, যেমন সুধারস আর রসনাবিলাস। ১৭০০ সালে ছেলে শাহজাদা আজম-এর কাছে লেখা একটি চিঠিতে আওরঙ্গজেব তাকে ছেলেবেলার কথা মনে করিয়ে দেন। আজম নাকি ছোটবেলায় নাকাড়া বাজানোর নকল করে আওরঙ্গজেবের জন্য একটা হিন্দি সম্বোধন তৈরি করেছিলেন - 'বাবাজী ধুন, ধুন।'

জীবনের শেষ দিনগুলো আওরঙ্গজেব কাটিয়েছেন ছোট ছেলে কামবাখশ-এর মা উদয়পুরীর সঙ্গে। উদয়পুরী ছিলেন একজন সঙ্গীত শিল্পী। মৃত্যুশয্যা থেকে কামবাখশের কাছে লেখা এক চিঠিতে আওরঙ্গজেব লিখেছিলেন যে রোগে-শোকে উদয়পুরী তাঁর সঙ্গে আছেন, মৃত্যুর সময়ও তাঁর সঙ্গে থাকবেন।আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস পরেই ১৭০৭ সালের গ্রীষ্মে মৃত্যুবরণ করেন উদয়পুরী।

চামকর যুদ্ধ

ভারতে রাজত্ব করার একেবারে শুরু থেকে শেষ অবধি মুঘল বংশের প্রতিদ্বন্দ্বী ও শত্রুর অভাব ছিলো না। তবে সব প্রতিদ্বন্দ্বী সমান ক্ষমতাবান ও বীরত্বপূর্ণ ছিলো না। সে হিসেবে শক্তিমত্তা ও যুদ্ধকৌশলের বিচারে শিখ শক্তি মুঘল রাজবংশের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বীই ছিলো বলা চলে। মুঘলদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি যোগ্যতম যুদ্ধের নেতৃত্ব শিখ গোষ্ঠী দিয়েছিলো। তার মধ্যে 'ব্যাটল অব চামকর' বা চামকরের যুদ্ধ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে শিখ জনগোষ্ঠী নিজেদের পূর্বপুরুষের বীরত্বের এই ইতিহাস গর্বের সাথে স্মরণ করে থাকে।

শিখদের সাথে মুঘলদের শক্তি পরীক্ষা উপমহাদেশের ইতিহাসে কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়। ১৬২১ সালে সম্রাট জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে রোহিলার যুদ্ধে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে মুঘলদের বিরুদ্ধে শিখদের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের আনুষ্ঠানিক শুরু। মুঘলদের সাথে দীর্ঘকালব্যাপী চলে আসা বিরোধ শিখদের গুরু পরম্পরায় যেমন অভিনবত্ব এনেছিলো, তেমনি তাদের যুদ্ধেও উৎসাহ বাড়িয়ে তুলছিলো।

১৭০৪ সালে। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের রাজত্বের শেষ দিক। মহাশক্তিধর মুঘল সম্রাট চাচ্ছিলেন, শিখ শক্তি তার নিকট আনুগত্য প্রকাশ করুক। কিন্তু বাস্তবে তার নিদর্শন দেখা যাচ্ছিলো না। অপ্রতিদ্বন্দ্বী মুঘল শক্তির একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে থাকাকেই যেন তারা জীবনের লক্ষ্য বানিয়ে রেখেছিলো।

পাঞ্জাবের রূপনগর জেলার শিবালিক পাহাড়ের কাছেই আনন্দপুর সাহিব অবস্থিত। শিখদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। সুলতেজ নদীর তীরের এই স্থান থেকেই ১৬৯৯ সালে শিখ গুরু গোবিন্দ 'খালসা পন্থা' প্রবর্তন করেছিলেন। এই আনন্দপুর থেকে গুরু গোবিন্দ ১৭০৪ সালের ৫ ডিসেম্বর 'সারসা' নদী পার হয়ে 'চামকর' নামক এক স্থানে পৌঁছলেন। রাত্রিকালের জন্য তিনি নিজের দলের জন্য শহরের প্রধানের কাছে সাময়িক আশ্রয় প্রার্থনা করলেন। ভাই বুধিচাঁদের বাড়িতে রাত্রির জন্য সাদর আশ্রয় মিললো। তখন তার সাথে মাত্র ৪০ জন শিখ যোদ্ধা ছিলো। এই অল্প সংখ্যার বিপরীতে শত্রুর বিরাট বাহিনী পরবর্তীতে রীতিমতো প্রবাদ হয়ে গিয়েছিলো।

উল্লেখ্য, এর আগে থেকেই মুঘল সেনাপতি ও শিখদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিলো। শিখ যোদ্ধারা প্রায় ৬ মাস অবরোধের মুখে ছিলো। মুঘলদের যুদ্ধকৌশল ছিলো এরকম- আনন্দপুর এলাকায় শিখদের চারিদিক থেকে ঘিরে ফেললে তাদের রসদ সরবরাহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ভেঙে পড়বে। ফলে অসহায় অবস্থা নিকটে এলে দুর্ধর্ষ এই যোদ্ধারা আত্মসমর্পণে বাধ্য হবে। আপাতদৃষ্টিতে এই সমীকরণে কোনো ভুল দেখা না গেলেও পরিস্থিতি যেকোনো সময় নির্ভুল গাণিতিক হিসাবও পাল্টে দিতে পারে। মুঘল ও রাজপুত সৈন্যরা গুরু গোবিন্দ সিংকে ঘুমহীন শিকারীর মতো খুঁজে ফিরছিলো। মুঘল সম্রাটের আদেশ ছিলো- শিখদের এই গুরুর শিরশ্ছেদ করে তার সামনে নিয়ে আসতে হবে। এক রাতের জন্য আশ্রয় নেওয়া শিখদের অবস্থানের কথা জানতে পেরে মুঘল সৈন্যরা জায়গাটি ঘেরাও করার সিদ্ধান্ত নিলেন।

মুঘল সেনাপতি ওয়াজির খান শিখ যোদ্ধাদের অল্প সংখ্যা বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন। প্রথমত, শত্রুর মনোভাব বোঝার জন্য শিখ গুরু গোবিন্দের কাছে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে দূত পাঠালেন। গুরু গোবিন্দ আহ্বান অস্বীকার করলেন। অনুসারীদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দিলেন। 'যো বোলে সো নিহাল; সৎশ্রী আকাল' স্লোগান শিখ যোদ্ধাদের বাহুতে নতুন করে শক্তি যোগালো।

পরদিন সকালে মুঘল বাহিনীর আক্রমণ শুরু হলো। তীরন্দাজরা তীর ছুঁড়তে লাগলো, গানাররা গুলি শুরু করলো। শিখ যোদ্ধারাও তীর ছুঁড়ছিলো। মুঘল সেনাপতিরা শিখ বাহিনীর শক্তি ও কৌশলকে দুর্বল ভেবে হয়তো কিছুটা ভুল করেছিলেন। কারণ গুলি ও তীর ছুঁড়েও শিখদের ডেরায় পৌঁছানো যাচ্ছিলো না। উপরন্তু গুলি ফুরিয়ে আসছিলো। দুর্ধর্ষ মুঘল সেনানায়ক নাহার খান মই বেয়ে শিখদের ডেরায় পৌঁছতে চেষ্টা করলেন। শিখ যোদ্ধার ছোঁড়া অব্যর্থ তীর তার ইচ্ছা ব্যর্থ করে দিলো।

শিখ যোদ্ধা হিম্মত সিং তার চার সহযোদ্ধা নিয়ে মুঘলদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন। সামনের মুঘল সৈন্যরা সংখ্যায় বেশি হয়েও তার ছোট দলের তলোয়ার ও বর্ষার সাথে পেরে উঠছিলো না। হিম্মত সিং একাই যেন আহত কোণঠাসা চিতার মতো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন। প্রায় ১০০ মুঘল যোদ্ধা মাত্র ৫ জনের হাতে নিহত হয়েছিলো। মুঘলদের ক্রমাগত আক্রমণে একসময় হিম্মত সিং ও পাঁচ সহযোদ্ধা রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়লেন।

এরপর গুরু গোবিন্দ পাঁচজন যোদ্ধার আরেকটি দল পাঠালেন। এই দল হিম্মত সিংয়ের চেয়েও ভয়ানকভাবে মুঘলদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। মুঘল সেনাপতি ওয়াজির খান সম্ভবত শত্রুর চাল কিছুটা বুঝতে পারছিলেন। তিনিও কৌশলে পরিবর্তন এনে বড় ও আকস্মিক আঘাতের কৌশল নিলেন। শিখ যোদ্ধারা বুঝতে পারছিলো- এভাবে শত্রুকে বেশিক্ষণ আটকে রাখা সম্ভব নয়। সেজন্য শিখ যোদ্ধারা গুরু গোবিন্দকে তার পুত্রসহ স্থান ত্যাগ করতে অনুরোধ করলেন।

কিন্তু গুরু গোবিন্দ তার সংকল্পে অটল। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে পিছিয়ে যাওয়া তার ধাঁতে নেই। তাছাড়া অনুসারীরা সকলেই তার সন্তান। সুতরাং শুধু রক্তের সম্পর্কের সন্তান্দের নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগের প্রশ্নই আসে না। অজিত সিংয়ের নেতৃত্বে শিখ যোদ্ধাদের আরো পাঁচজনের একটি দল মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামলো। অস্ত্রশস্ত্র ও সংখ্যায় মুঘলরা এগিয়ে থাকলেও শিখ যোদ্ধাদের সঙ্গে সহজে পেরে উঠছিলো না। একা অজিত সিংয়ের হাতেই প্রায় ১০০ মুঘল যোদ্ধা নিহত হলো। এবার মুঘলরা হামলার কৌশল বদলে অজিতকে চতুর্দিক থেকে একসাথে হামলা করলো। রক্তাক্ত অজিত সিং মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। মুঘলরা যুদ্ধের ময়দানে কিছুটা সফলতা পাচ্ছিলো, তবে শত্রুকে সংখ্যার ভিত্তিতে দুর্বল ভেবে কৌশলগত ভুল করেছিলো। তাদের উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হলেও পরিস্থিতি সম্ভাব্য বিজয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিলো। যুদ্ধের ময়দানে বীরত্বের সাথে মৃত্যুবরণের পর শিখ যোদ্ধাদের সংখ্যা একেবারে তলানিতে এসে ঠেকলো। গুরু গোবিন্দ ছাড়া মাত্র ৭ জন অবশিষ্ট ছিলো। এই ৭ জন তাদের গুরুকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠাতে একেবারে বদ্ধপরিকর হলেন। এবার গোবিন্দ সিংয়ের কোনো নিষেধ তারা শুনলেন না। তাকে একরকম জোর করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে দেবার ব্যবস্থা করা হলো। শিখদের যুদ্ধ স্লোগান 'গুরুজী দি খালসা, গুরুজী দি ফতেহ' বারবার ধ্বনিত হতে লাগলো।

রাত হয়ে এসেছিলো। গোবিন্দ সিং দুজন সহকারীর সহায়তায় মালওয়া অঞ্চলের দিকে রওনা হলেন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য প্রচণ্ড বৃষ্টি ও বজ্রপাত হচ্ছিলো। দয়া সিং গুরু গোবিন্দকে অন্ধকারে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। যাবার পথে নিহত শিখ যোদ্ধাদের লাশ এলোমেলোভাবে পড়ে ছিলো। অজিত সিংয়ের মৃতদেহের উপরে চাদরে দয়া সিং চাদর বিছিয়ে দিতে চাইলেন। গুরু গোবিন্দ নিষেধ করে বললেন, শহীদের রক্তের ধারাই বীর অজিত সিংয়ের শরীরে চাদর হয়ে আছে। পরদিন সকালে মুঘল যোদ্ধাদের জন্য বেশ বিস্ময় অপেক্ষা করছিলো। মুঘল যোদ্ধাদের অগণিত লাশের বিপরীতে শিখ যোদ্ধাদের মাত্র ৩৫টি মৃতদেহ পড়ে ছিলো। সামান্য ৩৫ জন শিখ যোদ্ধার বিপরীতে যেখানে দুর্ধর্ষ মুঘল বাহিনীর অনায়াসে বিজয়ী হবার কথা- সেখানে প্রতিপক্ষের আক্রমণের মুখে কয়েকবার শুধু পিছুই হটতে হয়নি, সাধারণ সৈনিক ছাড়াও পদস্থ গুরুত্বপূর্ণ সেনানায়কদের হারাতে হয়েছে।

মুঘল বাহিনী আবার সর্বশক্তি দিয়ে শিখদের উপর হামলা করলো। অবশিষ্ট ৫ জন শিখ ক্ষুদ্র কিন্তু তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুললো। তীব্রতা থাকলেও তা ধীরে ধীরে কমে আসছিলো। শিখ যোদ্ধা ভাই সঙ্গত সিং, ভাই সন্ত সিং ও অন্যান্যরা ঘোড়ার পিঠে মুঘলদের আক্রমণ করেন। মুঘল বাহিনী চকিত হলেও বিচ্যুত হলো না। তারাও প্রতিরোধ ও পাল্টা হামলা চালালো। শিখ যোদ্ধারা যেন মৃত্যু নিকটে জেনে একেবারে মুমূর্ষু বাঘের মতো বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলো। মুঘল সেনাপতি ওয়াজির খান তাদের বীরত্বের প্রশংসা না করে পারলেন না। একে একে বাকি শিখ যোদ্ধারাও মুঘলদের বেশ বড় সংখ্যায় হতাহত করে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। মুঘলরা নিহত শিখ যোদ্ধাদের মাঝে গুরু গোবিন্দ সিংয়ের লাশ তন্নতন্ন করে খুঁজতে লাগলো। কিন্তু গুরু গোবিন্দ সিংয়ের নিরাপদ স্থানে চলে যাবার সংবাদ পরে মুঘল সেনাবাহিনী পেয়েছিলো।

শিখদের জাতীয় সাহিত্যে চামকরের যুদ্ধ বেশ গুরুত্বের সাথে উঠে এসেছে। জনপ্রিয় শিখ সাহিত্য হিসেবে পরিচিত 'জাফরনামা'য় এই যুদ্ধের চমৎকার কাব্যিক বর্ণনা আছে। গুরু গোবিন্দ কর্তৃক মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবকে লেখা একটি চিঠি। শিখ লোকগীতিতে আজও চামকরের যুদ্ধের বর্ণনা পাওয়া যায়। "সওয়া লাখ সে এক লড়ায়ু, তব গুরু গোবিন্দ ক্যাহলায়ু/ যাহা ভি যায়ু জিত কে আউ- দাস তেরা অ্যায়সা ক্যাহলায়ু" অর্থাৎ সোয়া লাখ শত্রুর সাথে একা লড়াই করে তবেই গুরু গোবিন্দ আখ্যা পাওয়া সম্ভব- এটা শিখদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় প্রবাদ হিসেবে প্রচলিত।


শেষে আওরঙ্গজেব বিষয়ে কিছু কাজ এবং কাজের দুর্বলতা উল্লেখ করা যাক । আজকে হয়তো মুঘল সম্রাটদের মধ্যে আওরঙ্গজেবের ওপর তুলনামূলক ভাবে বেশি কাজ হয়েছে , কিছু কিছু কাজ গুরুত্বপূর্ণ সূত্র অবলম্বনে লিখিত হয়েছে যেমন আখবারাত, যেটি গবেষকদের আওতার বাইরেই থেকে গিয়েছে, এছড়াও নিয়মিত বেশ কিছু নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে আওরঙ্গজেবের সম্পর্কে ।

সাধারণ পাঠক এবং গবেষক উভয়কেই ভাবতে হবে প্রচলিত ঐতিহাসিক তথ্য ও তার বৈধ ঐতিহাসিক দাবি কাকে বলে এবং এদের মধ্যে পার্থক্য কোথায় ? যারা আওরঙ্গজেবের বর্বরতার নিদর্শন দিয়ে থাকেন, তারা অধিকাংশ সময়ে আধুনিক হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্বের মধ্যে ঢুকে পড়ে মিথ্যা প্রচারে খুবই উৎসাহী হন, এবং নির্ভর করেন ভুল অনুবাদ এবং মিথ্যা তথ্যে । তবে আমি এ কথা বলতে চাই যে, অন্ধকার দিকটিও জানা প্রয়োজন, তবেই আলোর সার্থকতা হবে,  তাই আমি এ কথা বারবার বলি - Dark Side is the Best Side to Open the Another Side.
সে ভাবেই অধ্যাপক যদুনাথ সরকারের " এ শর্ট হিস্টরি অব আওরঙ্গজেব " জানাও যেমন প্রয়োজন, আবার অড্রে ট্রুস্কের " আওরঙ্গজেব দ্য ম্যান অ্যান্ড দ্য মিথ " ও ঠিক ততটাই প্রাসঙ্গিক বলে মনে করি ।


সহায়ক গ্রন্থ :

01. The Battle of Chamkaur: An epic that changed the course of Indian history

02. STORY OF BRAVERY & SACRIFICE - THE BATTLE OF CHAMKAUR

03. The Battle Of Chamkaur

04. The Most Embarrassing Defeat in History?

05.  Aurangzeb :  man and The myth

06. A short history of Aurangzeb.

7. মুঘল দরবারের দল ও রাজনীতি

8. আওরঙ্গজেবের সময় মুঘল অভিজাত শ্রেনী

( বি. দ্র. - কোনো স্থানে অড্রে ট্রুস্কে উল্লেখ আছে আবার অড্রে ট্রাশকা )

Comments

  1. ভীষন ভীষন ভালো লিখেছেন!👌
    ঔরঙ্গজেব সম্পর্কে আরো জানতে চাই! অপেক্ষা করবো পরর্বতী পর্বের জন্য!

    ReplyDelete
  2. ধন্যবাদ স্যার। আওরঙ্গজেবের সম্বন্ধে অনেক কিছুঁই জানতে পারলাম।

    ReplyDelete
  3. আপনার সাহায্যে আরো অনেক নতুন নতুন তথ্য জানতে পারবো বলে আশা রাখি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, চেষ্টা করছি ক্রমাগত

      Delete

Post a Comment

If you have any doubt, please let me know.

Popular posts from this blog

সহজ পাঠ ও রবীন্দ্রনাথের অবনির্মান - শুভজিৎ দে

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারত ভুক্তির উদ্যোগ ও বিতর্ক - শুভজিৎ দে

পতিতাবৃত্তির জন্ম ও বিবর্তন - শুভজিৎ দে