কেসোরাম কটন মিল - শুভজিৎ দে

কেসোরাম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড
চিত্রঋণ - অনুসন্ধান কতৃক সংরক্ষিত

যখন সারা বিশ্ব প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার বিস্তার ও তার প্রভাব দেখে হতবাক ঠিক তখনই কেসোরাম কটন মিল 1919 সালে প্রতিষ্ঠা হয় এদেশে, তাও একেবারে এই কলকাতার সন্নিকটে মেটিয়াবুরুজ অঞ্চলে। মেটিয়াবুরুজ অঞ্চলের নাম বস্ত্র রপ্তানি বাণিজ্যে বেশ প্রসিদ্ধ। আর সেই মেটিয়াবুরুজ নির্ভর দেশীয় বস্ত্র শিল্পের প্রাণ সঞ্চার করেছিল সেই সময়ই, আর সেই প্রতিষ্ঠান হচ্ছে কেসোরাম কটন মিল। সুদূর ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব সংগঠিত হওয়ার নানারকম কারণ ছিল, তার মধ্যে একটি বড় কারণ ছিল পুঁজির জোগান। ভারতের ক্ষেত্রে তা একটু অন্যরকম ছিল, এই সব প্রতিষ্ঠান ভারতে এমনি এমনি হয়নি, এর অন্তরালে থেকেছে একটি বিপ্লব, একটি প্রতিবাদ, আর এই বিপ্লব ও প্রতিবাদ হচ্ছে স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলন। যার জন্য এদেশে গড়ে উঠেছিল নানান স্বদেশী প্রতিষ্ঠান, আর এই দেশীয় শিল্পায়ন প্রেক্ষাপটকে শিল্পবিপ্লব বলাই চলে, তবে বলে রাখা উচিত শিল্প বিপ্লবের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Industrial Revolution. এই শব্দটি সর্ব প্রথম ব্যাবহার করেন ইংরেজ ঐতিহাসিক Arnold Tynbee. ১৮৮০ সালে তিনি তাঁর লেখা "Lectures on the Industrial Revolution in England" গ্রন্থে এটা ব্যাবহার করেন।

অন্যান্য দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানে মতো কেসোরাম কটন মিল কলকাতায় একটি সুতির টেক্সটাইল মিল হিসেবে প্রথম থেকেই সুপরিচিত। পরবর্তীকালে কেশরাম কটন মিল রেয়ন (RAYON) উৎপাদনের দিকে অগ্রজ ভুমিকা নেয়, এই রেয়ন যন্ত্রটি তৈরী হয় 1959 সালে, যার উৎপাদন ক্ষমতা ছিল প্রতিবছর 4,633 মেট্রিক টন রেয়ন সুতো উৎপাদনের। এই বছরেই কেসোরাম কটন মিল বিড়লা গ্রুপের সাথে যুক্ত হয়ে যৌথ ভাবে রেয়ন উৎপাদন প্লান্টটি প্রতিষ্ঠা করে, নাম হয় কেশরাম রেয়ন নামে।

যৌথ উদ্যোক্তা দের ভাবনা সেখানেই শেষ না হয়ে তা প্রসারিত হয়, কেশরাম মিল শীঘ্রই টায়ার ও সিমেন্ট শিল্পে প্রবেশ করে বিড়লা দের হাত ধরে, সংস্থার ক্রমবর্ধমান ব্যবসার পোর্টফোলিও প্রতিবিম্বিত করতে নাম পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল, সুতরাং 1986 সালে কেসোরাম কটন মিল এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় কেসোরাম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

তথ্যসূত্র - 

1. বাক্যালাপ

Comments

Popular posts from this blog

সহজ পাঠ ও রবীন্দ্রনাথের অবনির্মান - শুভজিৎ দে

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারত ভুক্তির উদ্যোগ ও বিতর্ক - শুভজিৎ দে

পতিতাবৃত্তির জন্ম ও বিবর্তন - শুভজিৎ দে