Posts

মোহনবাগানের শিল্ড জয় ও রবীন্দ্রনাথ - শুভজিৎ দে

Image
চিত্রঋণ - Wikipedia আই এফ এ শিল্ড জয়ী মোহনবাগান দল হীরালাল মুখার্জি, ভুতি সুকুল, সুধীর চ্যাটার্জি, মনমোহন মুখার্জি, রাজেন সেনগুপ্ত, নীলমাধব ভট্টাচার্য, কানু রায়, হাবুল সরকার, অভিলাশ ঘোষ, বিজয়দাস ভাদুড়ী, শিবদাস ভাদুড়ী (অধিনায়ক) আজ মোহনবাগান ক্লাবের শিল্ড জয়ের 109 তম বছর। এশিয়ার প্রথম দেশ যারা ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থেকে এক ব্রিটিশ ফুটবল ক্লাব কে পরাস্ত করে। তবে এখনে বলে রাখা দরকার মোহনবাগানের আগে ইউরোপিয়ান ক্লাবকে হারানোর কৃতিত্ব "শোভাবাজার ক্লাবের" 1892 ট্রেডস কাপ প্রতিযোগীতায় ইস্ট সারে কে হারিয়ে দেয় শোভাবাজার। বাঙালি বুঝতে পারে, ইংরেজকে হারানো সম্ভব। 1911 সালে মোহনবাগানের শিল্ড জয়ের আগে কোনও বাঙালি ক্লাবের এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য। কিন্তু পরবর্তীকালে সবাই মাথা ঠুকেছিলো মোহনবাগানের শ্রেষ্ঠত্বের কাছে। এই শিল্ড জয়ের 100 বছর উপলক্ষে কয়েক বছর আগে, ‘এই সময়’ সংবাদপত্রে “দে গোল গোল” বলে একটি কবিতা ছেপেছিল। অনেকে ভেবেছিল কবিতাটি রবীন্দ্রনাথের লেখা। আসলে ওটি ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘ঝুলন’ কবিতার প্যারডি। যে কবিতার বিখ্যাত লাইন “দে দোল দোল।”  চিত্রঋণ - Wikipedia তবে রবিঠ

লর্ড ক্যানিং ও তাঁর বাড়ির গল্প - শুভজিৎ দে

Image
আমপানের পর ভগ্নপ্রায় বাড়িটির অবস্থা সাথে লর্ড ক্যানিং লর্ড ক্যানিং 1856 থেকে 1862 সাল পর্যন্ত ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল এবং 1858 সালের 1 নভেম্বর থেকে ভারতে প্রথম ভাইসরয় হিসেবে কাজ শুরু করেন। তাঁর প্রশাসনের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো 1857 সালের সিপাহি বিদ্রোহের সূত্রপাত। লর্ড ক্যানিং বিদ্রোহটি দমন করেন এবং এ ঘটনার পর 1858 সালে পার্লামেন্টারি আইন পাস হয়। রানী ভিক্টোরিয়া প্রকাশ্য ঘোষণা দ্বারা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এর শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতের শাসনভার নিজ হাতে গ্রহণ করেন। যারা এ অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করে তাদেরকে যদিও তিনি (ক্যানিং) শাস্তি প্রদান করেন, তবুও তিনি যতদূর সম্ভব ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বাছবিচারহীন প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ পরিহার করেন, এবং এভাবে তিনি ‘ক্ষমাশীল ক্যানিং’ এর উপাধি অর্জন করেন। লর্ড ক্যানিং এই সব কথা বিক্ষিপ্ত ভাবে বাংলার ইতিহাসের পাতায় পাতায় পাওয়া যাবে, তবে আজ বিশেষ কারণে ক্যানিং এর কথা বলা, আর তা হচ্ছে মূলত ক্যানিং টাউনে তার একটি বাড়ির জন্য। দূর থেকে পোর্ট ক্যানিং এর সদর দপ্তর, যা লোকমুখে লর্ড ক্যানিংয়ের বাড়ি 1856 থেকে 1862 এই সময়কা

সমস্যার সূত্রপাতে বিতর্কিত এই কালাপানি - শুভজিৎ দে

Image
বিতর্কিত অঞ্চল চিত্রঋণ - www.bbc.com কালাপানি অঞ্চল ভারত ও নেপালের মধ্যকার বিতর্কিত একটি অঞ্চল যা উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় জেলায় অবস্থিত বর্তমানে ভারত প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অঞ্চলটি হিমালয়ের কালী নদীর অন্যতম প্রধান জলপথ কালাপানি বা শার্দা নদী দ্বারা চিহ্নিত যার উচ্চতা ৩৬০০-৫২০০ মিটার পর্যন্ত। কালাপানি উপত্যকাটির সর্বোচ্চ চূড়া লিপুলেখ পাস যার মধ্য দিয়ে প্রাচীন তীর্থস্থান যাত্রার কৈলাস-মানস সরোবরপথ তৈরি হয়েছে। পথটি উত্তরাখণ্ডের ভুতিয়া গোত্রদের দ্বারা তিব্বতে বাণিজ্য করার অন্যতম সড়ক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। কালী নদী পশ্চিম দিকে ভারত এবং নেপালকে বিভক্ত করেছে। তবে ভারত দাবী করে, নদীর তীরবর্তী শাখাসমূহ সীমানায় অন্তর্ভুক্ত নয়। সীমানাটি জলবিভাজিকার সাথেই অবস্থিত। ভারতের এই অবস্থানটি ব্রিটিশ ভারতের সময় অনুমানিক ১৮৬৫ থেকে চলে আসছে। এই অঞ্চলের কাছেই টিঙ্কার পাস নামে নেপালের আরো একটি পাস রয়েছে। ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধের সময় ভারত লিপুলেখ পাসটি বন্ধ করে দিলে অধিকাংশ বাণিজ্য টিঙ্কার পাস দিয়ে সংগঠিত হত।১৯৯৭ সালে যখন ভারত ও চীন উভয়ে লিপুলেখ পাসটি উন্মুক্ত করে দিতে সম্মত হয়

কেসোরাম কটন মিল - শুভজিৎ দে

Image
কেসোরাম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড চিত্রঋণ - অনুসন্ধান কতৃক সংরক্ষিত যখন সারা বিশ্ব প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার বিস্তার ও তার প্রভাব দেখে হতবাক ঠিক তখনই কেসোরাম কটন মিল 1919 সালে প্রতিষ্ঠা হয় এদেশে, তাও একেবারে এই কলকাতার সন্নিকটে মেটিয়াবুরুজ অঞ্চলে। মেটিয়াবুরুজ অঞ্চলের নাম বস্ত্র রপ্তানি বাণিজ্যে বেশ প্রসিদ্ধ। আর সেই মেটিয়াবুরুজ নির্ভর দেশীয় বস্ত্র শিল্পের প্রাণ সঞ্চার করেছিল সেই সময়ই, আর সেই প্রতিষ্ঠান হচ্ছে কেসোরাম কটন মিল। সুদূর ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব সংগঠিত হওয়ার নানারকম কারণ ছিল, তার মধ্যে একটি বড় কারণ ছিল পুঁজির জোগান। ভারতের ক্ষেত্রে তা একটু অন্যরকম ছিল, এই সব প্রতিষ্ঠান ভারতে এমনি এমনি হয়নি, এর অন্তরালে থেকেছে একটি বিপ্লব, একটি প্রতিবাদ, আর এই বিপ্লব ও প্রতিবাদ হচ্ছে স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলন। যার জন্য এদেশে গড়ে উঠেছিল নানান স্বদেশী প্রতিষ্ঠান, আর এই দেশীয় শিল্পায়ন প্রেক্ষাপটকে শিল্পবিপ্লব বলাই চলে, তবে বলে রাখা উচিত শিল্প বিপ্লবের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Industrial Revolution. এই শব্দটি সর্ব প্রথম ব্যাবহার করেন ইংরেজ ঐতিহাসিক Arnold Tynbee. ১৮৮০ সালে তিনি তাঁর লেখা "L

বিদ্যাসাগরের ইচ্ছাপত্র ও তার ভবিষ্যত - শুভজিৎ দে

Image
1875 সালে 31শে মে, আমহাস্ট স্ট্রিটের 63 নম্বর বাড়ির দোতলায় বসে বিদ্যাসাগর মহাশয় 25টি অনুচ্ছেদে বিন্যস্ত একটি ইচ্ছাপত্র লেখেন নিজের হাতে। এই ইচ্ছাপত্রে স্থান পেয়েছে তাঁর নিজেস্ব সম্পত্তির তালিকা, 45জন মাসিক বৃত্তিপ্রাপকের নাম, যার মধ্যে অনেকেই তাঁর আত্মীয় নন। এছাড়াও দাতব্য বিদ্যালয় সহ তাঁর ইচ্ছাপত্রের সর্বশেষ অনুচ্ছেদটি, যা সকলকেই আকর্ষিত করে, আর সেই অনুচ্ছেদের বিষয়বস্তু তাঁর পুত্র নারায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। চিত্রঋণ - Wikipedia তাঁর ইচ্ছাপত্রের সর্বশেষ অনুচ্ছেদটি হয়তো আমাদের সকলেরই জানা, তাই সেই বিষয়টিকে অপেক্ষাকৃত গৌণ মনে করে, সেই ইচ্ছা পত্রের প্রথম দিককার অনুচ্ছেদ গুলির উপর আলোকপাত করার এই ব্লগটি লেখার উদ্দেশ্য। তাই দেখে নেওয়া যাক, তার ইচ্ছাপত্রের বক্তব্য। ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় চিত্রঋণ - Wikipedia তাঁর ইচ্ছাপত্রের বক্তব্য নিম্নে তুলে ধরা হলো   1। আমি স্বেচ্ছাপ্রবৃত্ত হইয়া স্বচ্ছন্দচিত্তে আমার সম্পত্তির অন্তিম বিনিয়োগ করিতেছি। 2। চৌগাছা নিবাসী শ্রীযুক্ত কালীচরণ ঘোষ, পাথরা নিবাসী শ্রীযুক্ত ক্ষীরোদনাথ সিংহ, আমার ভাগিনেয় জনপুর নিবাসী শ্রীযুক্ত বেণীমাধব মুখোপ

হতভাগ্য দুই ব্যক্তির গল্প - শুভজিৎ দে

Image
চিত্রঋণ - রুমা প্রধান মুখই যখন মানুষের পরিচয়, আর সেই পরিচয় যখন মানুষ দিতে লজ্জা পায়, ভয় পায়, তখন নিশ্চিত এই কবিতা বলতে ইচ্ছা করে - হে মোর হতভাগ্য জীবন, তুমি তো শিখিয়েছ মোরে, কি ভাবে হাসিতে হয়,  বুকে চাপিয়া রাখিয়া ক্রন্দন, তুমি তো শিখিয়েছ মোরে, সুখের অন্তরালে দুঃখ্য রেখে জমা, কি ভাবে করিতে হয়, মানবের তরে মানবেরে ক্ষমা। হ্যাঁ, একটু আবেগ প্রবণ হয়েই এই কথা বলছি, লক ডাউনের জন্য সেভাবে কোথাও যাওয়া হচ্ছে না, এদিকে অনেক লেখাও জমে আছে, অন্যান্য কাজের চাপে সেগুলিও লেখা হয়ে ওঠে নি, আজ তাই সময় করে এমন দুজনকে নিয়ে লিখছি, যাদের জীবন কেটেছে দুঃখ্যের অন্তরালে, আর তারা হলেন 1. এডওয়ার্ড মরড্রেক,  2. স্টিফান বিব্রোস্কি। চিত্র স্বত্বাধিকারী - অনুসন্ধান এডওয়ার্ড মরড্রেক  অনেকেই হয়তো জানেন, আবার অনেকেই জানেন না, উনিশ শতকে এক ইংরেজ অভিজাত পরিবারে জন্ম নেওয়া সেই বিস্ময়কর বালককে যাকে পৃথিবী এডওয়ার্ড মরড্রেক বলে চেনে, তিনি আমার আপনার মতো সাধারণ হয়েও সাধারণ নন, তাঁর শারীরিক গঠন নিয়ে বিজ্ঞান ও তার সাধকগণ আজও গবেষণা চলেছেন, তিনি পৃথিবীর একমাত্র ব্যক্তি যিনি পৌরানিক কাহিন

কলকাতায় প্রথম বাইসাইকেল আসে 131 বছর আগে - শুভজিৎ দে

Image
আজ 3 জুন বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস, 2018 সালের এপ্রিল মাসে রাষ্ট্রসংঘর সাধারণ সভা 3 জুন তারিখটিকে বিশ্ব সাইকেল দিবস হিসাবে উদযাপন করতে প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন, সেই থেকে প্রতি বছর ঐ দিন বিশ্ব সাইকেল দিবস পালিত হয়ে চলেছ। এখন সব নানা ধরনের মোটরবাইকের যুগ। যন্ত্রে আবদ্ধ জীবন। এই মোটরবাইকের পূর্বপুরুষ বাইসাইকেল, আজ আলোচনা এই বাইসাইকেল নিয়ে। চালক সহ  BONE SHAKER চিত্রঋণ - Wikipedia বাইসাইকেলের পূর্বপুরুষ হচ্ছে ভেলোসিপিড (VELOCEPEDE) নামক কাঠের দুচাকার এক যন্ত্র। যাতে প্যাডেল থাকত না, মাটিতে পা দিয়ে ধাক্কা মেরে তা চালাতে হতো। এই যন্ত্রের জন্ম হয় ফ্রান্সে 1800 খ্রিঃ নাগাদ। কলকাতায় এই যন্ত্রটি কবে আসে তা সঠিকভাবে জানা যায় না। রাধারমণ মিত্রের কলকাতা দর্পণ গ্রন্থ থেকে জানা যায় " এক জনৈক ইংরেজ ভদ্রলোক জানান তিনি স্ট্যান্ড রোডের কাছে দুটি ভেলোসিপিডের মধ্যে প্রতিযোগিতা দেখেছে, এই কথা তিনি জানান 1827 সাল নাগাদ। " ভেলোসিপিড নামক কাঠের দুচাকার এক যন্ত্র। চিত্রঋণ - Wikipedia এই ভেলোসিপিড যন্ত্র জার্মানি ঘুরে ইংল্যান্ডে পৌঁছায় 1865 সালে। কিন্তু এ যন্ত্রে তখন লোহার চাকা লাগানো