Posts

Showing posts from September, 2019

ব্যাংক ব্যবস্থা : তখন ও এখন - শুভজিৎ দে

Image
ব্যাংক জাতীয়করণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বনাম উপপ্রধানমন্ত্রীর বিবাদের জেরে ভেঙেছিল শাসক কংগ্রেস দলও৷ আজকের প্রজন্ম সেভাবে পরিচিত নয় ‘ব্যাংক ফেল’ হওয়ার সঙ্গে ৷ কিন্তু স্বাধীনতার আগে বলে নয় তার পরেও বেশ কয়েক বছর এদেশে মাঝে মধ্যেই ব্যাংকে তালা পড়তে দেখা যেত ৷ চিত্রঋণ Wikipedia একদিকে সেজন্য কাজ হারাতেন সেই ব্যাংকের কর্মীরা আবার অন্যদিকে সেখানে সঞ্চিত টাকা রেখে সর্বস্ব খুইয়ে পথে বসতেন গ্রাহকরা৷ তখনকার বহু গল্প উপন্যাস কিংবা সিনেমায় এই ব্যাংক উঠে যাওয়া কথা উঠে আসত ৷ কারণ অবশ্য সেসময় ব্যাংক জাতীয়করণ হয়নি ফলে সেগুলি ছিল বেসরকারি মালিকানায়৷ এই সামাজিক ব্যাধির পাশাপাশি বাম এবং ব়্যাডিকাল কংগ্রেস নেতারা মনে করতেন এই রকম ব্যাংক ব্যবস্থার ফলে বেসরকারি হাতে পুঁজি সঞ্চিত হচ্ছে যা একেবারেই কাম্য নয়৷ ফলে ব্যাংক জাতীয়করণ করার জন্য দাবি উঠত ৷ অবশেষে ১৯৬৯ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংক জাতীয়করণ করেন৷ পরবর্তীকালে আবার ১৯৮০ সালে আরও ছয়টি ব্যাংক জাতীয়করণ করা হয়েছিল৷ তবে ব্যাংক জাতীয়করণ ঘিরে ইন্দিরা গান্ধী এবং মোরারজি দেশাইয়ের সম্পর্কের তিক্ততা চরমে পৌঁছে

অন্ধকার নয়, মধ্যযুগ নবসৃষ্টির যুগ - শুভজিৎ দে

Image
সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বাংলা ভাষার জন্ম বলে অধিকাংশ পণ্ডিত মত প্রকাশ করেছেন। এই সময় থেকে শুরু করে ১২০০ সাল পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ। প্রাচীন যুগের নিদর্শন একমাত্র সাহিত্য-বৌদ্ধ সহজিয়াতান্ত্রিক মহাজনদের রচিত চর্যাপদ প্রথমস্তরের বাংলা ভাষায় রচিত। প্রাচীন যুগের পর ১২০৪ সাল থেকে মধ্যযুগের সূত্রপাত এবং ১৮০০ সাল তার বিস্তার। ১৮০০ সালের পর থেকে আজ অবধি আধুনিককাল। সাহিত্যের ইতিহাসের এই যুগ বিভাগ মূলত রাজনৈতিক পরিবর্তন ধরেই করা হয়ে থাকে। অবশ্য কোনো শাসক পরিবর্তন হলেই যুগান্তর ঘটে না। নতুন জাতির সঙ্গে রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিচয় নতুন মনন ও সংস্কৃতির জন্ম দেয়। নতুন মন-মত-ধর্ম-আচার-মনন-দর্শন ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয়ের ফলে ব্যষ্টির চিন্তা-চেতনায় যে অভিঘাত আসে, তারই প্রভাবে বাহ্যজীবনে সমাজে-আচারে-আচরণে এককথায় মানস ও ব্যবহারিক জীবনে যে পরিবর্তন ঘটে, তাতেই ঘটায় যুগান্তর। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের যুগ বিভাগ সম্পর্কে এই হলো ধারণা। মসুলিম এবং অমুসলিম অনেক সুধীজন মধ্যযুগকে অন্ধকার যুগ বলতে চান। অর্থাৎ এই যুগটা জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা-সভ্যতায় অজ্ঞতার যুগ মনে করেন। বর্তমানের এই উন্নত সভ্

ঘুরি ও সমসাময়িক ইতিহাস - শুভজিৎ দে

Image
          ঘুরি রাজবংশ ছিলেন পূর্ব ইরানীয় সুন্নি মুসলিম রাজবংশ। এই রাজবংশ তাজিক বংশোদ্ভূত বলে ধারণা করা হয়। সাম্রাজ্যের সর্বোচ্চ সীমায় থাকাকালে আধুনিক আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং ইরান এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। ৮৯৭ থেকে ১২১৫ সাল পর্যন্ত এই রাজবংশ শাসন ক্ষমতায় ছিল এবং গজনভিদের উত্তরাধিকারী হয়। ঘুরি রাজবংশের কেন্দ্র ছিল বর্তমান আফগানিস্তানের ঘুর প্রদেশ বা মান্দেশ। এটি পশ্চিমে বৃহত্তর খোরাসান এবং পূর্বে বঙ্গ পর্যন্ত পৌছেছিল।প্রথম রাজধানী ছিল ঘুরের ফিরোজকোহ। পরবর্তীতে তা হেরাতে স্থানান্তর করা হয়। এর পাশাপাশি গজনি ও লাহোরকে অতিরিক্ত রাজধানী হিসেবে ব্যবহার করা হত, বিশেষত শীতের সময়। ঘুরিরা পারস্য সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।ঘুরিদের পর পারস্যে খোয়ারিজমীয় সাম্রাজ্য এবং ভারত উপমহাদেশে দিল্লি সালতানাতে মামলুক সালতানাত ক্ষমতায় আসেন।মুইজউদ্দিন বা মুহাম্মদ শিহাবউদ্দিন অথবা মুহাম্মদ ঘুরি ছিলেন ঘুরি সাম্রাজ্যের সুলতান। তার ভাই গিয়াসউদ্দিন মুহাম্মদের সাথে তিনি ১১৭৩ সাল থেকে ১২০২ সাল পর্যন্ত শাসন করেন। তারপর ১২০২ সাল থেকে ১২০৬ সাল পর্যন্ত তিনি সর

সম্রাট শাহজাহান কেমন শাসক ছিলেন ? - শুভজিৎ দে

Image
সম্রাট শাহজাহান কি একজন জঘন্য ও বিকৃত যৌন চাহিদা সম্পন্ন শাসক ছিলেন ? মুঘল সাম্রাজ্যের শাসক হিসেবে উপস্থিত হয়ে,  1628 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1658 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারত উপমহাদেশ শাসন করেছেন। শাহ জাহান নামটি এসেছে ফার্সি ভাষা থেকে যার অর্থ "পৃথিবীর রাজা"। তিনি ছিলেন বাবর, হুমায়ুন, আকবর, এবং জাহাঙ্গীরের পরে পঞ্চম মুঘল সম্রাট। ভাসি শরমা নামক একজন লেখক তার বই "দ্যা নেকেট মোঘল" বইয়ে উল্লেখ করেন,  সম্রাট বাবর থেকে আকবর পর্যন্ত, মোগল সাম্রাজ্য ইতিহাসে কিছুটা ধার্মিক এবং সুশাসনের জন্য সুপরিচিত কিন্তু মোঘল সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী সম্রাট শাহজাহান কিছুটা ভিন্ন। শাহজাহান চিত্রঋণ - Wikipedia সম্রাট শাহজাহান একজন জঘন্য ও বিকৃত যৌন চাহিদা সম্পন্ন শাসক ছিলেন ।  কিন্তু বাস্তবে তাকে মোগল সাম্রাজ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর শাসনামলকে স্বর্ণযুগ বলা হয় এবং তার সময়ে ভারতীয় সভ্যতা সবচেয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। দাদু আকবরের মতো তিনিও তার সাম্রাজ্য প্রসারিত করতে আগ্রহী ছিলেন। তাজমহলকে ‘ভালোবাসার’ প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। মুঘল সম্রাট শাহাজাহন তাঁর প্রিয় স্ত্রীর প্রতি ভালোবা

তরাইনের যুদ্ধ : ভারতের ইতিহাস পরিবর্তনের ধারা - শুভজিৎ দে

Image
চিত্রসূত্র : ইন্টারনেট গজনভী সাম্রাজ্য নবম শতাব্দীর শেষের দিকে তুর্কীরা সুলতান আলপ্তগীনের নেতৃত্বে আফগানিস্তানে একটি নতুন রাজ্য গঠন করে। পরবর্তীতে ইতিহাসে এই সাম্রাজ্যটি ‘গজনভী’ সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত লাভ করে। ৯৭৭ সালে সুলতান আলপ্তগীন নিঃসন্তান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তার বিশ্বস্ত এবং যোগ্য কৃতদাস সবুক্তগীন ‘গজনভী’ সিংহাসনে আরোহণ করেন। প্রায় ২০ বছর শাসন করার পর ৯৯৭ সালে সবুক্তগীন মৃত্যুবরণ করেন। সবুক্তগীনের মৃত্যুর পর তাঁর সুযোগ্য পুত্র মাহমুদ গজনীর সিংহাসনে আরোহন করেন। সিংহাসনে বসেই তিনি হিন্দুস্তানের দিকে মনোযোগ দেন। ১০০০ সালের দিকে প্রাথমিক একটি অভিযান পরিচালনা করে তিনি হিন্দুস্তান সীমান্তের বেশ কয়েকটি প্রতিরক্ষা দুর্গ দখল করে নেন। এরপর ১০০১ থেকে ১০২৬ সালের মাঝে গজনীর সুলতান মাহমুদ মোট ১৭ বার হিন্দুস্তানে আক্রমণ পরিচালনা করেন। তাঁর এতবার আক্রমণের পেছনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণ ছিলো। কোনো আক্রমণের কারণ ছিলো রাজনৈতিক আবার কোনোটি ধর্মীয় কারণে হয়েছিলো। হিন্দুস্তানের রাজারা অনেক সময় সুলতানের সাথে পূর্বের করা চুক্তির বরখেলাপ করতেন, কখনো সুলতানের হিন্দুস্তানীয় মিত্রদের আক্রমণ করতেন।

উপনিবেশবাদ বিরোধী অগ্নিযুগের প্রারম্ভিক পর্বের অন্ধকারে নিমজ্জিত মহিলা বিপ্লবী - শুভজিৎ দে

Image
ননীবালা দেবী এবং দুকড়িবালা দেবী অগ্নীযুগের প্রথম মহিলা বিপ্লবী শহিদ হিসেবে প্রথম যে নামটি সবাই বলে, সে হলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার । কিন্তু বলে রাখা প্রয়োজন যে অগ্নিযুগের প্রারম্ভিক পর্বের বিপ্লবী প্রীতিলতা নন, তিনি যাঁদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধীনতা অন্দোলোনে আসেন তাঁরা আজ সমাজের চোখে হারিয়ে গেছেন, রযেগেছেন অপাঙ্ক্তেয় হিসেবে । আসলে সব সময়ই কিছু মানুষ অন্ধকারে থেকে যান, ঠিক যেমনটি প্রদ্বীপ সমস্ত ঘরকে আলোকিত করলেও, সেই প্রদ্বীপ তার নিচে হওয়া অন্ধকারকে আলোর মুখ দেখাতে পারে না । বিপ্লব বা সশস্ত বিপ্লব অনেক দিন আগে শুরু হলেও সেই পর্বে কেউ মারা গেলেও আমরা সেইসব নিয়ে ভাবি না, কারণ আমাদের প্রয়োজন হয় একটি মাইলফলকের বা আমরাই তাকে মাইলফলক তৈরী করি । এবং সেটাই আমরা বয়ে নিয়েযাই ঐতিহ্য ও ইতিহাস রূপে । সেই মাইলফলকের আগে থাকা সংখ্যা বা দুরত্বের যেমন কোনো গুরুত্ব থাকে না, ঠিক তেমনই প্রীতিলতার আলোর তেজে অন্ধকারে হারিয়েগেছেন এনারা । এমনই দুজন হলেন ননীবালা দেবী ও দুকড়িবালা দেবী । যাঁরা এই অগ্নিযুগের প্রারম্ভিক পর্বের মহিলা বিপ্লবী । এখানে তাঁদের সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়া চেষ্টা করছি । ননীবাল

What is HISTORY ? : Different views of Historians. - Subhajit Dey

The English word ‘History’ is derived from their Greek noun ‘Historia’. ‘History’ or ‘Historia’ simply means ‘enquiry’ or ‘research’. The term ‘History’ has been taken from the German word ‘Geschichle’ means an intelligible and significant narration of the past events. Infact development of history started with the ancient Greek historians such as Herodotus and Thucydides. Herodotus popularly known as the ‘Father of History’ wrote about the Graeco-Persian wars this contains a mine of information including those relating to the ancient Egyptians and Persians. Thucidides developed this subjects on scientific lines. He wrote the “Pelopenesian Wars’ on the basis of evidence and showed the relation between causes and effects or results. Thomas Charlyle “World History is a biography of great men”. Prof. Renier: “History is the memories of societies.” Will Durant: “History is a narrative of what civilized men have thought or done in past time.” E.H. Carr: “History is an unending

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারত ভুক্তির উদ্যোগ ও বিতর্ক - শুভজিৎ দে

Image
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর, তথা দেশবিভাগের পর ভারত দুই ধরণের অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল; ব্রিটিশ ভারতের প্রদেশসমূহ ও দেশীয় রাজ্যসমূহ। এই প্রদেশসমূহকে ব্রিটিশ কোম্পানি শাসন করত। অন্যদিকে, উক্ত দেশীয় রাজ্যসমূহের উপরেও ব্রিটিশ সরকারের কর্তৃত্ব বিস্তৃত ছিল, তবে সেখানে শাসন করত উক্ত অঞ্চলের নিজস্ব শাসকেরাই। এছাড়াও ভারত ভূখণ্ডে ফ্রান্স ও পর্তুগালদ্বারা শাসিত কিছু ঔপনিবেশিক কলোনিও ছিল। ভারতে এই অঞ্চলগুলোর রাজনৈতিক একত্রীকরণ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম ঘোষিত লক্ষ্য ছিল। পরবর্তী দশকে ভারত সরকার এই লক্ষ্যকেই অনুসরণ করে চলে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল এবং ভপ্পলা পঙ্গুন্নি মেনন ভারতের সাথে একীভূত হবার জন্য বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যের শাসকদের জোর দেন। ভারতে অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হলে ধাপে ধাপে এই রাজ্যগুলোর উপর কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা ও প্রশাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৬ সালের পরে এই দেশীয় রাজ্যগুলি আর ব্রিটিশ শাসিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে তেমন কোনো তফাত ছিল না। ক্রমশ, ভারত সরকার কিছু কূটনৈতিক ও সামরিক উপায়ে দ্য ফ্যাক্টো এবং দ্য জ্যুরে-এর মাধ্যমে অবশিষ্ট ঔপনিবেশিক কলোনিগুলোর উ