Posts

আওরঙ্গজেবকে যেমন চিনলাম ও চামকর যুদ্ধ - শুভজিৎ দে

Image
মুঘল সম্রাটদের মধ্যে কেবল একজনই ভারতীয়দের মধ্যে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন - তিনি আলমগীর আওরঙ্গজেব। আবু মুজাফ্‌ফর মহিউদ্দিন মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব আলমগীর খুব সম্প্রতি আওরঙ্গজেবকে নিয়ে গবেষণা অনেক দূর এগিয়েছে । আমি যাঁর বই পড়ে এই লেখাটি লিখছি তার ( অড্রে ট্রুস্কে ) সাথে অবশ্যই পড়তে হবে M. Athar Ali, Satish Chandra, S.M. Azizuddin Husain, Irfan Habib, Harbans Mukhia, এবং Jhon Richards এর কাজ । বহু গবেষক আওরঙ্গজেবের সময়ের নানান বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন যেমন, স্থাপত্য বিষয়ে Catherine Asher, মন্দির ভাঙ্গা নিয়ে Richard M. Eaton, শিখ সম্পর্ক নিয়ে Louis Fenech, শিরহিন্দিদের নিষিদ্ধ করা নিয়ে Yohanan Friedmann, দাক্ষিণাত্য অভিযানের যুদ্ধ বিষয়ে Jos Gommans, মুঘল-মারাঠা দ্বন্দ্ব নিয়ে Stewart Gordon, হিন্দু সন্যাসীদের নিয়ে B.N. Goswamy, হিন্দু সন্যাসী আর শিখদের নিয়ে J.S. Grewal, ফতাওয়াইআলমগিরি নিয়ে Alan Guenther, রাজপুত দের সাথে সম্পর্ক নিয়ে Robert Hallissey, জৈনদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে Shalin Jain, কেশবদেব মন্দির বিতর্কে Heidi Pauwels, গানবাজনা বিষয়ে katherinr Butler Scholfield ( nee Brow

আকবরকে কি দ্য গ্রেট বলা চলে ? - শুভজিৎ দে

Image
আকবর ভারতবর্ষের ইতিহাসে খুবই কম সংখ্যক কিংবদন্তির নামের পূর্বে “মহান” অথবা ইংরেজি “The Great” প্রত্যয়ে ভূষিত হয়েছেন। আমি সেই তিন মহানের নাম স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি - আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট (তিনি এদেশের মানুষ না হয়েও, তিনি এই ভারতভূমি তে 'মহান' সম্মানে ভূষিত হন) সম্রাট অশোক এবং সম্রাট আকবর। তাদের নামের পূর্বে এই “মহান” ভূষণ অতি সহজে অলংকৃত হয়নি। এর জন্য তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক অবিস্মরণীয় সব কর্মকান্ড করতে হয়েছিল। এই ভারত এর  ভূমিতে  একের পর এক অসংখ্য জ্ঞানী গুণী জন্ম নিয়েছেন। যেমন, কণিস্ক, চন্দ্রগুপ্ত, পৃথ্বীরাজ, রানা প্রতাপ, বাজীরাও, শিবাজী, রণজিৎ সিং, রাজা রাজা চোল-এর মত আরও অনেকজন। কিন্তু ভারতীয় ইতিহাসবিদরা কেউ তাদেরকে “মহান” অথবা “The Great” বলে আখ্যায়িত করেন নি। এটার একটাই কারন হতে পারে। “মহান” উপাধি প্রাপ্ত হওয়া খুবই শক্ত কাজ। মহান উপাধিতে ভূষিত হতে হলে আপনাকে শুধুমাত্র তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে নির্মম খুনী হতে হবে। এবং আপনাকে অবশ্যই ইতিহাসের মূল স্রোতে কোন না কোনভাবে আঘাতকারী হতেই হবে। এই গ্রেটদের নামের তালিকায় প্রথমেই আসবে আলেকজান্ডার এর নাম, যিনি সমস্ত বিশ্বজ

সময়ের সাথে সাথে ফ্যাসিবাদেরও রূপ বদলায় - শুভজিৎ দে

Image
রোমান ক্যাথলিকদের এক রক্তক্ষয়ী অধ্যায় আছে। পঞ্চদশ খৃষ্টাব্দ ১৪০০-১৫০০ মাঝামাঝি। "পেগান" বা পূর্বদেশীয় অ-খৃষ্টীয় চর্চা বা নারীবাদী তান্ত্রিক বিশ্বাসের নামে, বহু নিরীহ মানুষকে জ্যান্ত জ্বালানো হয়। বিজ্ঞান ও শিক্ষার অগ্রগতি চার্চ মেনে নিতে পারেনি। তাই জিওদার্নো ব্রুনো থেকে কোপারনিকাসের ওপর ধর্মীয় খাঁড়া নেমে এসেছে। আমরা হিটলারের ইহুদী হত্যার কথা জানি। তবে এটাও কথিত আছে ইউরোপের মহামারী প্লেগের বাহকের নাম করে শত শত ইহুদীদের হত্যা করা হয়। আমরা যে পশ্চিমী সভ্যতাকে আধুনিক মনে করি সেটা এই সময় আরো কদর্য ছিলো। ধিরে ধিরে শিক্ষার উন্মেষ কুসংস্কার থেকে মানুষকে বের করে নিয়ে এসেছে। নবজাগরণের কালে সাম্রাজ্য বিস্তারের লোভ মানুষকে বিশ্ব পরিভ্রমণে পাঠায়। নতুন দেশ আবিষ্কারের লোভে একের পর এক দেশ দখল করা হয়। আমরা কলম্বাসের আমেরিকা যাত্রা জানি। ইনকা মায়া রেড ইন্ডিয়ানদের হত্যার ইতিহাস জানিনা। প্লেগ ও টাইফয়েড চিকেন পক্সে সংক্রমিত চাদর গিফট করা হত মায়া ইনকা দের। এইভাবে লাতিন আমেরিকায় স্প্যানিশদের আধিপত্য। মার্কিন গৃহযুদ্ধের পর সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী অধ্যায় লিখেছিলো শ্বেতাঙ্গ অধিবাসীরা। ট্রান্স আমেরিকান রেল

মান্ধাতা : পিতার গর্ভে জন্ম নেওয়া ইতিহাসের প্রথম সন্তান - শুভজিৎ দে

Image
মান্ধাতার আমলে এই শব্দযুগল আমাদের অনেকেরই প্রাত্যহিক জীবনে বহুল ব্যবহৃত শব্দে পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন আসতেই পারে, কে এই মান্ধাতা? কী এমন হয়েছিল তার আমলে যে তিনি এত বিখ্যাত হয়ে গেলেন? (যুবনাশ্বের গর্ভ হতে মান্ধাতার জন্ম হচ্ছে) মান্ধাতা এক রাজার নাম। তিনি ছিলেন সূর্য বংশের রাজা যুবনাশ্বের ছেলে। রামও এই সূর্য বংশেরই রাজা ছিলেন। মান্ধাতার জন্মের ইতিহাসটাও বেশ অবাক করা। তার বাবা যুবনাশ্বের কোনো ছেলে হচ্ছিল না। তখন তিনি একটি পুত্র সন্তান লাভের আশায় মুনীদের আশ্রমে গিয়ে যোগ সাধনা করতে শুরু করলেন। দিনের পর দিন নিষ্ঠার সাথে সাধনা করার পর এক সময় মুনীরা তার সাধনায় সন্তুষ্ট হলেন। যুবনাশ্বের পুত্র লাভের জন্য মুনীরা এক যজ্ঞ আরম্ভ করলেন। ভোরের দিকে শুরু হওয়া সেই যজ্ঞ শেষ হলো মধ্যরাতে। কলসি ভর্তি মন্ত্রপূত জল বেদীতে রেখে তারা গেলেন ঘুমাতে। যাওয়ার আগে নিজেরা নিজেরা বলাবলি করলেন, এই কলসির জল যুবনাশ্বের স্ত্রী খেলে তাদের ছেলে সন্তান হবে। সে কথা অবশ্য যুবনাশ্ব জানতেন না। রাতে তার খুব তৃষ্ণা পেল। তখন তিনি নিজেই সেই কলসির পানি পান করে ফেললেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে কলসিতে পানির পরিমাণ কমে যাওয়া দেখ